বাঁশ দিয়ে সেতু রক্ষার চেষ্টা

 নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের সীতারামপুর এলাকায় খালের উপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় লোকজন সেতুর নিচে বাঁশ দিয়ে ভেঙে পড়া ঠেকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছেন। সেতুটির উপর ভাগের পাটাতনের ঢালাই ভেঙে দু’টি বড় গর্ত হয়েছে। অন্তত ১২টি গ্রামের লোকজন ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু দিয়ে নিয়মিত চলাচল করে। সেতুটি ভেঙে পড়ে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ঘটতে পারে প্রাণহানিকর দুর্ঘটনা। জনস্বার্থে সেতুটি দ্রুত পুনঃনির্মাণ করা প্রয়োজন। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ২০ বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের সীতারামপুর গ্রামে খালের উপর সেতুটি নির্মাণ করে।

নির্মাণ কাজে ত্রুটি থাকায় অল্পদিনেই সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। যেকোনো মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেজন্য সেতুর নিচে বাঁশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। বিকল্প সড়ক না থাকায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুলিয়া ও হিজলডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হিজলডাঙ্গা ও সীতারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ওই সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করছেন। এ ছাড়া হিজলডাঙ্গা, সীতারামপুর, দুর্বাজুড়ি, ইচড়বাহা, বাঁশভিটা, শালিয়ারভিটা, মুলিয়া, পানতিতা, কোড়গ্রাম, বালিয়াডাঙ্গা, বড়েন্দার ও গোয়ালডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের চলাচলের জন্য ওই সেতু ব্যবহার করতে হয়। সেতুর উপর দিয়ে পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরও শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, কৃষক ও রোগীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যানবাহন নিয়ে প্রাণের ভয় উপেক্ষা করে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতিবছর হিজলডাঙ্গা গ্রামে বাংলা পৌষ মাসের শেষ দিনে ঐতিহ্যবাহী পৌষ সংক্রান্তি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয়ভাবে ‘পাগল চাঁদের মেলা’ বলে পরিচিত। লোকজ ঐতিহ্যের এ মেলায় দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মানুষ যানবাহনসহ ওই সেতুর উপর দিয়ে ওই মেলায় অংশ নেয়। সেতু ব্যবহার বন্ধ না করলে, যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। মুলিয়া ইউনিয়নের বনগ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক কৃপাচার্য বিশ্বাস বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। তা না হলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। মুলিয়া ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান বিপুল বিশ্বাস জানান,‘সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। তিনি এ ব্যাপারে নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্তজার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। নড়াইল এলজিইডি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র সমাদ্দার জানান, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি ভেঙে নতুনভাবে সেতু নির্মাণের চেষ্টা চলছে। অনুমোদন হলে নতুন সেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু করা হবে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর