নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে রানের জন্য সংগ্রাম করতে হলো বাংলাদেশকে। সেন্ট কিটসে ব্যাটিং স্বর্গের ওপর দাঁড়িয়ে দেড় শ’র আগেই অলআউট হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছিল টাইগাররা। পরে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তানজিম হাসান সাকিবের দৃঢ়তায় কোনোরকম দুশো পার করে মেহেদি হাসান মিরাজের দল। অনুমিতভাবেই ২২৭ রানের পুঁজি আগলে রাখতে পারেননি বোলাররা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ন্যূনতম প্রতিদ্বন্দ্বিতা পর্যন্ত করতে পারেননি তারা। পরশু রাতে ক্যারিবীয়দের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে হার ছিল ৫ উইকেটে। প্রথমটি ম্যাচে ১৪ বল ও দ্বিতীয়টিতে ৭৯ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় উইন্ডিজ। ব্যাক টু ব্যাক ম্যাচে হারের ফলে সিরিজ হাতছাড়া হয়ে হয়ে গেল টাইগারদের। কার্যত মিরাজ অ্যান্ড কোং হোয়াইটওয়াশের মুখে। বাংলাদেশ সময় সাড়ে সাতটায় একই ভেন্যুতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। আজ মান বাঁচানোর বড় সুযোগ সফরকারীদের।
প্রথম ওয়ানডেতে ২৯৪ রান করার পরও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে পাত্তা পায়নি বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে দেড় শ’রও বেশি ‘ডটবল’ খেলেছে টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে তো আরও কঠিন অবস্থা ছিল দলের। নির্ধারিত ৫০ ওভার পর্যন্ত খেলতে পারেনি দল। ইনিংসের ২৫ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে যায় টাইগাররা; দল ছাড়ায় সোয়া দুশো রানের গণ্ডি। যা সহজেই পেরিয়ে যায় ক্যারিবীয়রা। ১০ বছর পর এই সংস্করণে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল তারা।
প্রথম ওয়ানডেতে হারের পর বোলারদের দিকে আঙুল তুলেছিলেন অধিনায়ক মিরাজ। পরের হারটির জন্য তিনি কাঠগড়ায় তুললেন ব্যাটারদের। তার মতে তিন শ’রও বেশি রান করার দরকার ছিল বাংলাদেশের। মিরাজের ভাষায়, ‘মাঝের ওভারগুলোয় আমরা অবশ্যই ভালো ব্যাট করতে পারিনি। তেমন কোনো জুটি পাইনি আমরা, পিঠেপিঠি উইকেট পড়েছে বারবার। মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব (তানজিম) সত্যিই ভালো করেছে। তবে ভুল আমাদেরই ছিল (ব্যাটিংয়ে)। এ রকম উইকেটে আমাদের তিন শ’র বেশি রান করলে ভালো হতো।’
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ১১৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে। এরপর মাহমুদউল্লাহ করেন ৯২ বলে ৬২ রান। ৬২ বলে ৪৫ রানে ফেরেন নয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে আসা তানজিম। এ ছাড়া ওপেনার তানজিদ হাসান ৩৩ বলে ৪৬ রান করেন। যে উইকেটে রানের জন্য বাংলাদেশ সংগ্রাম করেছে সেখানেই স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্রেন্ডন কিং, এভিন লুইস ও কেসি কার্তি রান তাড়ার কাজটা সহজ করে দিয়েছেন। কিং ৭৬ বলে ৮২, লুইস ৬২ বলে ৪৯ ও কার্তি ৪৭ বলে ৪৫ রানে ফেরেন। পরে জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন অধিনায়ক শাই হোপ (১৭*) ও শেরফানে রাদারফোর্ড (২৪*)।
টাইগাররা মূলত বিপাকে পড়ে জেডেন সিলিসের তোপে। ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ধসিয়ে দেন এই পেসার। সফরকারী অধিনায়ক মিরাজ আলাদাভাবেই প্রশংসা করেছেন সিলিসের। মিরাজ বলেছেন, ‘ওরা সত্যিই খুব ভালো বল করেছে। বিশেষ করে সিলসকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। সে খুব ভালো করেছে এবং আমরা রান করতে পারিনি। সম্ভবত ২০ রানে ৪ উইকেট পড়েছে, এটাই ছিল সমস্যা। তারপরও আমাদের ভাবনা ছিল যে ঘুরে দাঁড়াতে পারব। তবে শেষ পর্যন্ত এই ধরনের উইকেটে এই ২২৮ রান যথেষ্ট নয়।’
মিরাজ যোগ করেন, ‘আমার মনে হয়, প্রথম ১০ ওভারে আমরা ভালো বল করেছি। বিশেষ করে, রানা ভালো করেছে। কিছু জায়গায় উন্নতি করতে হবে আমাদের। তবে ২২৭ রান নিয়ে এই ধরনের উইকেটে বোলারদের কাজ কঠিন।’