এক সহযোগীসহ ছাত্রলীগের এক নেতাকে ছিনতাইকালে হাতেনাতে ধরে পিটুনি দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দিয়ে ওই দুজনকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।
বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ক্যাম্পাসের সিনেট ভবন চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
ছিনতাইকালে হাতেনাতে ধরা পড়া ব্যক্তিরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক জনি আহমেদ ও তাঁর সহযোগী নগরের বুলনপুর এলাকার রাজন।
জনি আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন চত্বরে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষার্থী আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় জনি ও রাজন একটি মোটরসাইকেলে চড়ে সেখানে আসেন। তাঁরা সেখানে আড্ডারত শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুজনকে দাঁড় করিয়ে রেখে বাকিদের চলে যেতে বলেন। এরপর নিজেদের ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ওই দুই শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ও তাঁদের পরিচয়পত্র দেখতে চান জনি ও রাজন। একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে থাকা দুটি মুঠোফোন ও দুই হাজার ৭০০ টাকা কেড়ে নেন তাঁরা।
এরপর তাঁরা সেখান থেকে চলে যেতে উদ্যত হলে ছিনতাইয়ের শিকার এক শিক্ষার্থী পাশের ‘সাবাস বাংলাদেশ মাঠে’ খেলতে থাকা অন্য শিক্ষার্থীদের খবর দেন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা এসে জনি ও রাজনকে ধরে মারধর করেন।
সেখান উপস্থিত থাকা একাধিক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ এসে জনি ও রাজনকে গাড়িতে তোলে। কিন্তু উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাঁদের পুলিশের গাড়ি থেকে নামানোর জন্য গাড়িটি ঘিরে বিক্ষোভ করতে শুরু করেন। এ সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করেন। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা জনি ও রাজনের মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দেন। পরে জনি ও রাজন ছিনতাই করা মুঠোফোন ও টাকা ফিরিয়ে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খালেদ হোসেন বলেন, ‘ছিনতাইকারী ছাত্রলীগের কেউ হতে পারে না। ঘটনাটি শোনার পর সহসম্পাদক জনি আহমেদকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে সুপারিশ করার প্রক্রিয়া চলছে। আইনশৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা জানিয়েছি।
নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবীর বলেন, দুই ছিনতাইকারীদের আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় বাদী হয়ে কে মামলা করবে তা এখনো ঠিক হয়নি। মামলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।