ঢাকা ০৫:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বর্ডারে দুর্নীতির কারণে ঠেকানো যাচ্ছে না ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:১০:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ২৪ বার

বর্ডারে দুর্নীতির কারণেই রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না বলে মন্তব‍্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন।

সম্প্রতি থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, চীন ও লাওসের মধ্যে অনুষ্ঠিত অনানুষ্ঠানিক পরামর্শ সভায় যোগ দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ঢাকায় ফিরে রবিবার (২২ ডিসেম্বর) তিনি এ সভা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘মিয়ানমারকে বলেছি সীমান্ত তোমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে। আমরা তো রাষ্ট্র হিসেবে নন-স্টেট অ্যাক্টর (আরাকান আর্মি) যারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, তাদের সঙ্গে দর কষাকষি করতে পারি না। কাজেই তোমাদের দেখতে হবে, কোন পদ্ধতিতে সীমান্ত এবং রাখাইনের সমস্যার সমাধান করবে।’’

থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাঙ্গিয়াম্পংসারের সভাপতিত্বে বৈঠকে মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান সোয়ে, লাওসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেলুয়েমেস্কেই কোমাসিথ, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ও চীনের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মা ঝাউজু নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেন। বাংলাদেশের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

আলোচনা সভার বিষয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘মূল বিষয় ছিল ৩টি। সীমান্ত, মাদক ও অস্ত্র, মানবপাচার। আর মিয়ানমারের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে। একেবারে সবাই মিয়ানমারকে সমর্থন করতে চায়। তারা (মিয়ানমার) যদি সমস্যা মিটিয়ে ফেলে, তাহলে তাদের জন্য একটা পথ ঠিক করুন। একজন অবশ্য বলেছেন, একটা ফেডারেল স্ট্রাকচার প্রত্যাশিত। কেউ বিশ্বাস করেন না যে, মিয়ানমারে আজকে তিন বছর বা পাঁচ বছর আগে যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থায় ফিরে যাবে।’’

রবিবার দুপুরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন

উপদেষ্টা বলেন, ‘‘যদি প্রত্যাশা করত এই আলোচনার দরকার ছিল না। সবাই বলেছে, আমরা মিয়ানমারকে সমর্থন করব, তারা যদি করতে চায় (ফেডারেল স্ট্রাকচার) আমরা হস্তক্ষেপ করব না। কিন্তু আমরা চাই সমাধান হোক।’’

সীমান্ত ইস্যুতে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘সীমান্তের ব্যাপারে প্রধানত, উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ সীমান্ত নিয়ে বেশি কথা হয়েছে। এ ছাড়া পশ্চিমের সীমান্ত, যেখানে আমাদের স্বার্থ আছে। স্ক্যাম সেন্টার কতগুলো গড়ে উঠেছে, যেটায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হয়; সেই অপরাধ নিয়ে তারা খুব উদ্বিগ্ন। এ ছাড়া মাদক তো আছেই। অপরাধ এবং বর্ডার ইস্যুতে বলা হয়েছে, মিয়ানমার যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।’’

গত দুই মাসে সীমান্ত দিয়ে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা ঢুকছে। বিষয়টি সভায় তুলে ধরেছিলেন উপদেষ্টা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘বাকি দেশগুলোর উদ্বেগ রোহিঙ্গা নিয়ে যতটা ছিল না, তার চেয়ে বেশি ছিল অন্যান্য ইস্যুতে। ভবিষ্যতের অশনি সংকেত যেগুলো আছে, সেগুলো নিয়ে ওয়াকিবহাল করেছি। আমি স্পষ্টভাবে বলেছি, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে, আপনারা যে শান্তি বা স্থিতিশীলতার কথা চিন্তা করছেন; এটা কোনদিন সম্ভব না। বর্ডারের দুই পাশে এবং ক্যাম্প অপরাধীরা আছে।’’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বর্ডারে দুর্নীতির কারণে ঠেকানো যাচ্ছে না ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ

আপডেট টাইম : ০৭:১০:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

বর্ডারে দুর্নীতির কারণেই রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছে না বলে মন্তব‍্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন।

সম্প্রতি থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, চীন ও লাওসের মধ্যে অনুষ্ঠিত অনানুষ্ঠানিক পরামর্শ সভায় যোগ দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ঢাকায় ফিরে রবিবার (২২ ডিসেম্বর) তিনি এ সভা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘মিয়ানমারকে বলেছি সীমান্ত তোমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে। আমরা তো রাষ্ট্র হিসেবে নন-স্টেট অ্যাক্টর (আরাকান আর্মি) যারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, তাদের সঙ্গে দর কষাকষি করতে পারি না। কাজেই তোমাদের দেখতে হবে, কোন পদ্ধতিতে সীমান্ত এবং রাখাইনের সমস্যার সমাধান করবে।’’

থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিস সাঙ্গিয়াম্পংসারের সভাপতিত্বে বৈঠকে মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান সোয়ে, লাওসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেলুয়েমেস্কেই কোমাসিথ, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ও চীনের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মা ঝাউজু নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেন। বাংলাদেশের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

আলোচনা সভার বিষয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘মূল বিষয় ছিল ৩টি। সীমান্ত, মাদক ও অস্ত্র, মানবপাচার। আর মিয়ানমারের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে। একেবারে সবাই মিয়ানমারকে সমর্থন করতে চায়। তারা (মিয়ানমার) যদি সমস্যা মিটিয়ে ফেলে, তাহলে তাদের জন্য একটা পথ ঠিক করুন। একজন অবশ্য বলেছেন, একটা ফেডারেল স্ট্রাকচার প্রত্যাশিত। কেউ বিশ্বাস করেন না যে, মিয়ানমারে আজকে তিন বছর বা পাঁচ বছর আগে যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থায় ফিরে যাবে।’’

রবিবার দুপুরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন

উপদেষ্টা বলেন, ‘‘যদি প্রত্যাশা করত এই আলোচনার দরকার ছিল না। সবাই বলেছে, আমরা মিয়ানমারকে সমর্থন করব, তারা যদি করতে চায় (ফেডারেল স্ট্রাকচার) আমরা হস্তক্ষেপ করব না। কিন্তু আমরা চাই সমাধান হোক।’’

সীমান্ত ইস্যুতে আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘সীমান্তের ব্যাপারে প্রধানত, উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ সীমান্ত নিয়ে বেশি কথা হয়েছে। এ ছাড়া পশ্চিমের সীমান্ত, যেখানে আমাদের স্বার্থ আছে। স্ক্যাম সেন্টার কতগুলো গড়ে উঠেছে, যেটায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হয়; সেই অপরাধ নিয়ে তারা খুব উদ্বিগ্ন। এ ছাড়া মাদক তো আছেই। অপরাধ এবং বর্ডার ইস্যুতে বলা হয়েছে, মিয়ানমার যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।’’

গত দুই মাসে সীমান্ত দিয়ে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা ঢুকছে। বিষয়টি সভায় তুলে ধরেছিলেন উপদেষ্টা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘বাকি দেশগুলোর উদ্বেগ রোহিঙ্গা নিয়ে যতটা ছিল না, তার চেয়ে বেশি ছিল অন্যান্য ইস্যুতে। ভবিষ্যতের অশনি সংকেত যেগুলো আছে, সেগুলো নিয়ে ওয়াকিবহাল করেছি। আমি স্পষ্টভাবে বলেছি, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে, আপনারা যে শান্তি বা স্থিতিশীলতার কথা চিন্তা করছেন; এটা কোনদিন সম্ভব না। বর্ডারের দুই পাশে এবং ক্যাম্প অপরাধীরা আছে।’’