ঢাকা ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় আজ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২০:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ অক্টোবর ২০১৮
  • ২৯৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় বুধবার (১০ অক্টোবর) ঘোষণা করা হবে। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচার শাহেদ নূর উদ্দিন রায়ের জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা দুই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ সব আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানিয়েছে। অপরদিকে খালাসের দাবি জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

২০০৪ সালের একুশে অগাস্টে ঢাকায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার এক সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলো ২৪ জন-যে ঘটনা একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলা হিসেবে পরিচিত। সেদিনের সেই গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ জন আহত হন।

ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশ হচ্ছিলো আওয়ামী লীগের উদ্যোগে। সমাবেশের প্রায় শেষ পর্যায়ে তাতে বক্তব্য রাখছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।একটি ট্রাকের ওপর তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে তিনি বক্তব্য দেবার সময় তাকে ঘিরে ছিলেন দলীয় নেতারা। আর সামনের দিক থেকে তার ছবি তুলছিলো অনেক ফটো সাংবাদিক।বক্তব্যের প্রায় শেষ পর্যায়ে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়।

ঘটনাস্থলে ছবি তুলছিলেন ফটো সাংবাদিক জিয়াউল ইসলাম। “এমন নৃশংসতা কখনো হতে পারে আমার কল্পনাতেও ছিলোনা। আমি মঞ্চেই ছিলাম। চেয়ারে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। প্রচণ্ড হুড়োহুড়ি আর ধাক্কায় চেয়ার থেকে নীচে পড়ে যাই। আমার ওপরে পড়ে অনেকে। হঠাৎ ট্রাকের পাটাতনের ফাঁকে চোখে পড়লো আস্ত গ্রেনেড। সেটি বিস্ফোরিত হলে কি হতো ভাবতেও শিউরে উঠি এখনো। শেখ হাসিনা কয়েক হাত দুরে। তাকে ঘিরে মানববর্ম তৈরি করেছেন তার দলের নেতারা। গ্রেনেডের শব্দ শেষে শুরু হলো গুলির শব্দ। এক পর্যায়ে উঠে দাঁড়াই এবং গুলি থামলে ট্রাক থেকে নেমে আসি। নামার পর যা দেখি সেটি আরেক বিভীষিকা। চারদিকে আর্তনাদ, গোঙ্গানি। রক্তাক্ত পড়ে আছে বহু নারী পুরুষ। কে জীবিত কে মৃত বোঝা মুশকিল। নিজে বেঁচে আছি বুঝতে পেরে আবার ক্যামেরার শাটারে ক্লিক করতে আরম্ভ করি”।

গ্রেনেড হামলার ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলাটির প্রথমে তদন্ত শুরু করে থানা পুলিশ।পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ হয়ে তদন্তের দায়িত্ব পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে। অবশ্য এর মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী আরও দুটি মামলা করেছিলেন।

পরে এসব মামলা বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।২০০৪ সালের ২২শে অগাস্ট: বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন ২০০৪ সালের ২২ অগাস্ট বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনকে চেয়ারম্যান করে এক সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে সরকার। মাত্র এক মাস ১০ দিনের মাথায় ওই বছরের ২ অক্টোবর কমিশন সরকারের কাছে ১৬২ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, কমিশনের সংগৃহীত তথ্য-প্রমাণ সন্দেহাতীতভাবে ইঙ্গিত করে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার পেছনে একটি শক্তিশালী বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত ছিল। অভিযানটি পরিচালনা করা হয়েছিল ভাড়া করা দুর্বৃত্তদের মাধ্যমে। এসব লোক প্রধানত একটি সংগঠনের সশস্ত্র ক্যাডারদের মধ্য থেকে নেওয়া হয়, যাদের সমাবেশে ভিড়ের মধ্যে মিশে যাওয়ার মতো ভালো জ্ঞান ছিল। যদিও ওই প্রতিবেদনে বিদেশি শক্তি বলতে কোনো দেশের নাম বলা হয়নি।

একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্তের এক আলোচিত অধ্যায় জজ মিয়া। ২০০৫ সালের ৯ই জুন গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগের একটি চায়ের দোকান থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় সেনবাগ থানায়। ঢাকা থেকে সিআইডির অনুরোধ পেয়ে সেনবাগ থানা পুলিশ জজ মিয়াকে গ্রেপ্তারের জন্য সোর্স নিয়োগ করে।পরে ৯ই জুন বেলা ১টার দিকে জজ মিয়াকে আটক করে থানায় খবর দেয়। এরপর পুলিশ তাকে সেখান থেকে থানায় নিয়ে আসে। পনের দিন সিআইডি পুলিশের হেফাজতে থাকার পর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর গ্রেনেড হামলার মামলায় তিনি ‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি’ দিয়েছেন বলে জানায় পুলিশ।

পরে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয় যখন গণমাধ্যমে ফাঁস হয় যে জজ মিয়ার বিষয়টি পুলিশের সাজানো।আসামী করার বদৌলতে তার পরিবারকে টাকা দেয়ার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। এরপর নানা ঘটনাপ্রবাহের পর ২০০৮ সালে তাকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র জমা দেয় সিআইডি। পরে আদালত এ মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেন। ২০০৯ সালে মুক্তি পান জজ মিয়া।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ১১ই জুন মুফতি হান্নানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির। ২০০৯ সালের ৩রা অগাস্ট রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। এরপর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আখন্দ।তিনি ২০১১ সালের ৩রা জুলাই বিএনপি নেতা তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৫২ জনের নামে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি অভিযোগপত্র দেন।

গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০১১ সালের ৩রা জুলাই সম্পূরক চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। সেদিন বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা-সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ স্বাক্ষরিত চার্জশীটটি দাখিল করেন এস আই গোলাম মাওলা।দুটি পৃথক ট্রাঙ্কে ভর্তি করে আনা চার্জশীটে নতুন করে ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগের চার্জশীটে ২২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। নতুনভাবে অভিযুক্তদের মধ্যে স্থান পান বিএনপি নেতা তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ উল্লেখযোগ্য।

এতে জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও জেএমবি সদস্য শহিদুল আলম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড অন্য মামলায় ইতোমধ্যেই কার্যকর হওয়ায় মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়। ফলে এ মামলায় এখন আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৯ জনে। এর মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জন পলাতক রয়েছেন। বাকি আসামিদের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন ২৩ জন এবং জামিনে ছিলেন ৮ জন। জামিনে থাকা আট জনের জামিন বাতিল করে আদালত।

মামলা চলাকালে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবীরা বারবার বলেছেন যে তারা মনে করেন ওই হামলার উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করা ৷ তারা আদালতকে জানান, ওই হামলার আগে ঢাকায় ১০টি বৈঠক হয় এবং এসব বৈঠকে তারেক রহমান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, হারিছ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন ৷ টাকা এবং গ্রেনেড আসে পাকিস্তান থেকে৷ পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন-এর আব্দুল মজিদ বাট এই কাজে বাংলাদেশে অবস্থান করছিল ৷ বাংলাদেশে হামলা চালায় জঙ্গি সংগঠন হরকতুল জিহাদ-এর সদস্যরা ৷

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মামলাটির নতুন করে তদন্ত শুরু হলে অনেক নতুন তথ্য প্রকাশ পায় ৷ এর ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সম্পূরক চার্জশিটে তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে আরো অনেকের নাম আসে ৷ রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতে এসব আসামীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হয়েছে। যদিও আসামী পক্ষের আইনজীবীরা মনে করেন মামলার তদন্তই ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে।

গ্রেনেড হামলার পর মামলা হয়েছিলো পৃথক তিনটি। এর মধ্যে প্রথম সাত বছরের মধ্যেই তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয় মোট ছয়বার। প্রথম তদন্ত হয় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কিন্তু কোনো প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে নতুন তদন্তে সিআইডির এএসপি ফজলুল কবীর ২০০৮ সালের ১১ই জুন অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই অভিযোগ পত্রে মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করা হলেও গ্রেনেডের উৎস ও মদদদাতাদের শনাক্ত করা হয়নি। বর্তমান সরকার আমলে রাষ্ট্র পক্ষের আবেদনের পর আদালত মামলার বর্ধিত তদন্তের আদেশ দেন। ১৩ দফা সময় বাড়িয়ে ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার মধ্য দিয়ে ভয়ঙ্কর গ্রেনেড হামলার তদন্ত শেষ হয়।

একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলার মামলায়, খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ৫২ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচার কাজ শুরু হয় ২০১২ সালের ২৮শে মার্চ বুধবার ৷ বিশেষ ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় ওই বছর ৯ই এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয় ৷ এর আগে একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার শুরু হয়েছিলো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে বিশেষ ট্রাইবুনালে ৷ এই মামলায় বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক রহমানসহ ২২ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকার্য শুরু হয়েছিল ৷ আদালত ৬১ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নিয়েছিলেন৷আলোচিত এ মামলায় ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ গ্রহণ করা হয়েছে। আরও ২০ জনের সাফাই সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।

মামলার দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে পরস্পরকে দায়ী করেছেন রাষ্ট্র ও আসামী পক্ষের আইনজীবীরা। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেছেন, “আসামী পক্ষের আইনজীবীরা মামলা দুটি পাঁচ বার উচ্চ আদালতে নিয়ে যাওয়ায় আদালতের ২৯২ কার্যদিবস ব্যয় হয়েছে”। এছাড়া তারা যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে কালক্ষেপণ করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন বিএনপির সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদিন মেজবাহ।

তিনি বলেন, “এই মামলায় শুরুতে ৬১ জনের সাক্ষী নেয়ার পর অধিকতর তদন্তের আবেদন করা হয়। দ্বিতীয় রিপোর্ট আসা পর্যন্ত কয়েক বছর পেরিয়ে যায়। এছাড়া প্রত্যেকটা আসামীর পক্ষে আলাদা আলাদা আইনজীবী জেরা করছেন। রাষ্ট্রপক্ষ ২২৫ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে। এটা অবশ্যই সময়সাপেক্ষ। সবই হয়েছে আইনানুগ প্রক্রিয়ায়। কোন কিছু সংক্ষিপ্ত করার কোন সুযোগ নেই।”

রায় দশ অক্টোবর গত ১৮ই সেপ্টেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ১০ই অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন। এ নিয়ে ১১৯তম কার্যদিবসে মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হল। এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ৩০ ও আসামিপক্ষ ৮৯ কার্যদিবস ব্যয় করেছে। ঘটনার ১৪ বছর এক মাস ২০ দিন পর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হচ্ছে।

গ্রেনেড হামলার রায় ঘিরে সহিংসতার চেষ্টা হলে কঠোর ব্যবস্থা
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে ঘিরে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল সহিংসতার চেষ্টা করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। বুধবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়। এটা আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রমের একটা অংশ। এ রায়কে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাজনিত কোনো হুমকি ও নিরাপত্তা বিঘ্ন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ রায়কে ঘিরে শঙ্কিত হবার কোনো কারণ নেই। নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ প্রস্তুত ও সতর্ক রয়েছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের নজরদারি রয়েছে। এ রায়কে কেন্দ্র করে সহিংসতার চেষ্টা হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। কোনো ধরনের অপতৎপরতা বরদাশত করা হবে না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় আজ

আপডেট টাইম : ১০:২০:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ অক্টোবর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় বুধবার (১০ অক্টোবর) ঘোষণা করা হবে। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচার শাহেদ নূর উদ্দিন রায়ের জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা দুই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ সব আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানিয়েছে। অপরদিকে খালাসের দাবি জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

২০০৪ সালের একুশে অগাস্টে ঢাকায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার এক সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলো ২৪ জন-যে ঘটনা একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলা হিসেবে পরিচিত। সেদিনের সেই গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ জন আহত হন।

ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সমাবেশ হচ্ছিলো আওয়ামী লীগের উদ্যোগে। সমাবেশের প্রায় শেষ পর্যায়ে তাতে বক্তব্য রাখছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।একটি ট্রাকের ওপর তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে তিনি বক্তব্য দেবার সময় তাকে ঘিরে ছিলেন দলীয় নেতারা। আর সামনের দিক থেকে তার ছবি তুলছিলো অনেক ফটো সাংবাদিক।বক্তব্যের প্রায় শেষ পর্যায়ে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়।

ঘটনাস্থলে ছবি তুলছিলেন ফটো সাংবাদিক জিয়াউল ইসলাম। “এমন নৃশংসতা কখনো হতে পারে আমার কল্পনাতেও ছিলোনা। আমি মঞ্চেই ছিলাম। চেয়ারে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। প্রচণ্ড হুড়োহুড়ি আর ধাক্কায় চেয়ার থেকে নীচে পড়ে যাই। আমার ওপরে পড়ে অনেকে। হঠাৎ ট্রাকের পাটাতনের ফাঁকে চোখে পড়লো আস্ত গ্রেনেড। সেটি বিস্ফোরিত হলে কি হতো ভাবতেও শিউরে উঠি এখনো। শেখ হাসিনা কয়েক হাত দুরে। তাকে ঘিরে মানববর্ম তৈরি করেছেন তার দলের নেতারা। গ্রেনেডের শব্দ শেষে শুরু হলো গুলির শব্দ। এক পর্যায়ে উঠে দাঁড়াই এবং গুলি থামলে ট্রাক থেকে নেমে আসি। নামার পর যা দেখি সেটি আরেক বিভীষিকা। চারদিকে আর্তনাদ, গোঙ্গানি। রক্তাক্ত পড়ে আছে বহু নারী পুরুষ। কে জীবিত কে মৃত বোঝা মুশকিল। নিজে বেঁচে আছি বুঝতে পেরে আবার ক্যামেরার শাটারে ক্লিক করতে আরম্ভ করি”।

গ্রেনেড হামলার ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলাটির প্রথমে তদন্ত শুরু করে থানা পুলিশ।পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ হয়ে তদন্তের দায়িত্ব পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) হাতে। অবশ্য এর মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী আরও দুটি মামলা করেছিলেন।

পরে এসব মামলা বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।২০০৪ সালের ২২শে অগাস্ট: বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন ২০০৪ সালের ২২ অগাস্ট বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনকে চেয়ারম্যান করে এক সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে সরকার। মাত্র এক মাস ১০ দিনের মাথায় ওই বছরের ২ অক্টোবর কমিশন সরকারের কাছে ১৬২ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, কমিশনের সংগৃহীত তথ্য-প্রমাণ সন্দেহাতীতভাবে ইঙ্গিত করে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার পেছনে একটি শক্তিশালী বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত ছিল। অভিযানটি পরিচালনা করা হয়েছিল ভাড়া করা দুর্বৃত্তদের মাধ্যমে। এসব লোক প্রধানত একটি সংগঠনের সশস্ত্র ক্যাডারদের মধ্য থেকে নেওয়া হয়, যাদের সমাবেশে ভিড়ের মধ্যে মিশে যাওয়ার মতো ভালো জ্ঞান ছিল। যদিও ওই প্রতিবেদনে বিদেশি শক্তি বলতে কোনো দেশের নাম বলা হয়নি।

একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার তদন্তের এক আলোচিত অধ্যায় জজ মিয়া। ২০০৫ সালের ৯ই জুন গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগের একটি চায়ের দোকান থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় সেনবাগ থানায়। ঢাকা থেকে সিআইডির অনুরোধ পেয়ে সেনবাগ থানা পুলিশ জজ মিয়াকে গ্রেপ্তারের জন্য সোর্স নিয়োগ করে।পরে ৯ই জুন বেলা ১টার দিকে জজ মিয়াকে আটক করে থানায় খবর দেয়। এরপর পুলিশ তাকে সেখান থেকে থানায় নিয়ে আসে। পনের দিন সিআইডি পুলিশের হেফাজতে থাকার পর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর গ্রেনেড হামলার মামলায় তিনি ‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি’ দিয়েছেন বলে জানায় পুলিশ।

পরে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয় যখন গণমাধ্যমে ফাঁস হয় যে জজ মিয়ার বিষয়টি পুলিশের সাজানো।আসামী করার বদৌলতে তার পরিবারকে টাকা দেয়ার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। এরপর নানা ঘটনাপ্রবাহের পর ২০০৮ সালে তাকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দিয়ে অভিযোগপত্র জমা দেয় সিআইডি। পরে আদালত এ মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেন। ২০০৯ সালে মুক্তি পান জজ মিয়া।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ১১ই জুন মুফতি হান্নানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির। ২০০৯ সালের ৩রা অগাস্ট রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। এরপর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আখন্দ।তিনি ২০১১ সালের ৩রা জুলাই বিএনপি নেতা তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৫২ জনের নামে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি অভিযোগপত্র দেন।

গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০১১ সালের ৩রা জুলাই সম্পূরক চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। সেদিন বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা-সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ স্বাক্ষরিত চার্জশীটটি দাখিল করেন এস আই গোলাম মাওলা।দুটি পৃথক ট্রাঙ্কে ভর্তি করে আনা চার্জশীটে নতুন করে ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগের চার্জশীটে ২২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। নতুনভাবে অভিযুক্তদের মধ্যে স্থান পান বিএনপি নেতা তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ উল্লেখযোগ্য।

এতে জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও জেএমবি সদস্য শহিদুল আলম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড অন্য মামলায় ইতোমধ্যেই কার্যকর হওয়ায় মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়। ফলে এ মামলায় এখন আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৯ জনে। এর মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জন পলাতক রয়েছেন। বাকি আসামিদের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন ২৩ জন এবং জামিনে ছিলেন ৮ জন। জামিনে থাকা আট জনের জামিন বাতিল করে আদালত।

মামলা চলাকালে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবীরা বারবার বলেছেন যে তারা মনে করেন ওই হামলার উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করা ৷ তারা আদালতকে জানান, ওই হামলার আগে ঢাকায় ১০টি বৈঠক হয় এবং এসব বৈঠকে তারেক রহমান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, হারিছ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন ৷ টাকা এবং গ্রেনেড আসে পাকিস্তান থেকে৷ পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন-এর আব্দুল মজিদ বাট এই কাজে বাংলাদেশে অবস্থান করছিল ৷ বাংলাদেশে হামলা চালায় জঙ্গি সংগঠন হরকতুল জিহাদ-এর সদস্যরা ৷

২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মামলাটির নতুন করে তদন্ত শুরু হলে অনেক নতুন তথ্য প্রকাশ পায় ৷ এর ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সম্পূরক চার্জশিটে তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে আরো অনেকের নাম আসে ৷ রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতে এসব আসামীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হয়েছে। যদিও আসামী পক্ষের আইনজীবীরা মনে করেন মামলার তদন্তই ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে।

গ্রেনেড হামলার পর মামলা হয়েছিলো পৃথক তিনটি। এর মধ্যে প্রথম সাত বছরের মধ্যেই তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয় মোট ছয়বার। প্রথম তদন্ত হয় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কিন্তু কোনো প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে নতুন তদন্তে সিআইডির এএসপি ফজলুল কবীর ২০০৮ সালের ১১ই জুন অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই অভিযোগ পত্রে মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করা হলেও গ্রেনেডের উৎস ও মদদদাতাদের শনাক্ত করা হয়নি। বর্তমান সরকার আমলে রাষ্ট্র পক্ষের আবেদনের পর আদালত মামলার বর্ধিত তদন্তের আদেশ দেন। ১৩ দফা সময় বাড়িয়ে ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার মধ্য দিয়ে ভয়ঙ্কর গ্রেনেড হামলার তদন্ত শেষ হয়।

একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলার মামলায়, খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ৫২ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচার কাজ শুরু হয় ২০১২ সালের ২৮শে মার্চ বুধবার ৷ বিশেষ ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় ওই বছর ৯ই এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয় ৷ এর আগে একুশে অগাস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার শুরু হয়েছিলো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে বিশেষ ট্রাইবুনালে ৷ এই মামলায় বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক রহমানসহ ২২ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচারকার্য শুরু হয়েছিল ৷ আদালত ৬১ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নিয়েছিলেন৷আলোচিত এ মামলায় ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ গ্রহণ করা হয়েছে। আরও ২০ জনের সাফাই সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।

মামলার দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে পরস্পরকে দায়ী করেছেন রাষ্ট্র ও আসামী পক্ষের আইনজীবীরা। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেছেন, “আসামী পক্ষের আইনজীবীরা মামলা দুটি পাঁচ বার উচ্চ আদালতে নিয়ে যাওয়ায় আদালতের ২৯২ কার্যদিবস ব্যয় হয়েছে”। এছাড়া তারা যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে কালক্ষেপণ করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন বিএনপির সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদিন মেজবাহ।

তিনি বলেন, “এই মামলায় শুরুতে ৬১ জনের সাক্ষী নেয়ার পর অধিকতর তদন্তের আবেদন করা হয়। দ্বিতীয় রিপোর্ট আসা পর্যন্ত কয়েক বছর পেরিয়ে যায়। এছাড়া প্রত্যেকটা আসামীর পক্ষে আলাদা আলাদা আইনজীবী জেরা করছেন। রাষ্ট্রপক্ষ ২২৫ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে। এটা অবশ্যই সময়সাপেক্ষ। সবই হয়েছে আইনানুগ প্রক্রিয়ায়। কোন কিছু সংক্ষিপ্ত করার কোন সুযোগ নেই।”

রায় দশ অক্টোবর গত ১৮ই সেপ্টেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ১০ই অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন। এ নিয়ে ১১৯তম কার্যদিবসে মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হল। এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ৩০ ও আসামিপক্ষ ৮৯ কার্যদিবস ব্যয় করেছে। ঘটনার ১৪ বছর এক মাস ২০ দিন পর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হচ্ছে।

গ্রেনেড হামলার রায় ঘিরে সহিংসতার চেষ্টা হলে কঠোর ব্যবস্থা
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে ঘিরে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল সহিংসতার চেষ্টা করলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। বুধবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়। এটা আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রমের একটা অংশ। এ রায়কে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাজনিত কোনো হুমকি ও নিরাপত্তা বিঘ্ন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ রায়কে ঘিরে শঙ্কিত হবার কোনো কারণ নেই। নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ প্রস্তুত ও সতর্ক রয়েছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের নজরদারি রয়েছে। এ রায়কে কেন্দ্র করে সহিংসতার চেষ্টা হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। কোনো ধরনের অপতৎপরতা বরদাশত করা হবে না।