মৌলভীবাজার বিসিক শিল্প নগরীতে জে.পি.এল ডোর এন্ড ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রিজ, জে.পি.এল পিভিসি ডোর ইন্ডাস্ট্রিজ এর চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব এর ঘনিষ্ঠতার সুযোগে কুলাউড়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন নগদ টাকা ও ফার্নিচার বাবদ ২৮,০০,০০০/-(আটাশ লক্ষ) টাকা ধার ও মালামাল নেয়া এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, গুলশান শাখায় ১,৫০,০০,০০০/-(এক কোটি পঁঞ্চাশ লক্ষ) টাকা লোনের আবেদন বিষয়ে সাইফুল ইসলামকে প্রতারিত করার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় এএসপিকে বরখাস্ত করা হয়।
সাংবাদিকদের কাছে সংবাদটি প্রকাশ করার সাইফুল ইসলাম এর চিঠিটি তুলে ধরা হলো।
প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা,
আসসালামু আলাইকুম।
আমি মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব, চেয়ারম্যান, জে.পি.এল ডোর এন্ড ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রিজ, জে.পি.এল পিভিসি ডোর ইন্ডাস্ট্রিজ। আমি দীর্ঘ ১৬ বৎসর থেকে সুনামের সহিত ব্যবসা পরিচালনা করিয়া সরকারকে আয়কর প্রদান করিয়া আসিতেছি। ঢাকা সিলেট ও মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আমার নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ডিলার রহিয়াছে। এছাড়া মৌলভীবাজার বিসিক শিল্প নগরীতে আমার ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রিজ আছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রায় ৩০০ লোকের কর্মসংস্থান রহিয়াছে। এই ব্যবসার সুবাদে ২০১১ সালে আমার সাথে পরিচয় ও বন্ধুত্ব হয় মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া সার্কেলের সাবেক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন ও তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ডাঃ রাজিয়া সুলতানার। এই পরিচয়/বন্ধুত্বের সূত্র ধরে ২০১২ সালের বিভিন্ন তারিখে তারা উভয়ে আমার নিকট হইতে । ঐসময় আমার পাওনা টাকা পরিশোধ না করিয়া আমার কোন প্রকার অনুমতি ছাড়া আমাকে জিম্মাদার দেখাইয়া স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, গুলশান শাখায় ১,৫০,০০,০০০/- (এক কোটি পঁঞ্চাশ লক্ষ) টাকা লোনের আবেদন করেন। সেই সময় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমি ব্যাপারটি জানতে পারি এবং তাদেরকে আমাকে জিম্মাদার দেখাইয়া লোন গ্রহণ করতে বাঁধা/আপত্তি করি এবং আমার সাবেক সমুদয় পাওনা ২৮,০০,০০০/- (আটাশ লক্ষ) টাকা এক সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ করার নির্দেশ দিলে গত ০৭/০৮/২০১২ইং তারিখে এ.এস.পি আলমগীর হোসেন তার ক্ষমতার অপব্যাবহার করে কোন জিডি, মামলা, ওয়ারেন্ট ব্যতিরেকে মৌলভীবাজার জেলা হইতে সঙ্গে আরো কতেক পুলিশ সদস্যকে সাথে নিয়ে আমাকে আমার ঢাকার বনশ্রীর বাসা হইতে গ্রেপ্তার পূর্বক কীডন্যাপের মত করিয়া তুলে মৌলভীবাজার মডেল থানায় নিয়া যায় এবং একই তারিখে ৪৫ মিনিটের ব্যবধানে আমার বিরুদ্ধে তিনটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে কারাগারে প্রেরণ করে। আমি ২ মাস ২০ দিন কারাভোগের পর মাননীয় আদালত হইতে জামিনে মুক্তি পেয়ে গত ২১/১১/২০১২ইং তারিখে তার বিরুদ্ধে মাননীয় মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মাননীয় সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহা-পুলিশ পরিদর্শক (আই জি পি), অতিরিক্ত ডি আই জি (সিকিউরিটি সেল) ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে তাহাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ হেডকোয়ার্টার (সিকিউরিটি সেল) বিষয়টি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আমার আনীত অভিযোগের ৭টি অভিযোগই প্রমান হয় এবং ১৭/০১/২০১৩ইং তারিখে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সিকিউরিটি সেল) জনাব মোঃ আব্দুস সালাম ও পুলিশ পরিদর্শক জনাব মোঃ ওমর ফারুক সাহেবের স্বাক্ষরিত ২৫০ পাতার একটি তদন্ত রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাবরে পেশ করার পর গত ১৯/০৯/২০১৩ইং তারিখে স্মারক নম্বর নথি নং-৪৪.০০.০০০০.০৯৪.০২.০৫৬-৮৮১/১ স্মারকে তৎকালীন সিনিয়র সচিব জনাব সি.কিউ.কে মুস্তাক আহমেদ ও সিনিয়র সহকারী সচিব জনাব মোঃ আশফাকুল নোমান সাহেবগণের স্বাক্ষরিত ৭টি অভিযোগ প্রমাণ করে তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগনামা গঠন করেন। কিন্তু এত বড় বড় অভিযোগ গঠন হওয়ার পরেও তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিযোগ্য বিহিত ব্যবস্থা না করায় আমি বিগত ২৩/০২/২০১৪ইং তারিখে ১২জনকে রেসপন্ডেন্ট করে জাস্টিজ অব ডিমান্ড নোটিশ প্রেরণ করার পরেও কোন বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় গত ১৩/০৪/২০১৪ইং তারিখে মহামান্য হাইকোর্টের রীট পিটিশন নং-২৯৬৩/২০১৪ দায়ের করিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রসিকিউশন নং-২৭৯, তারিখ-১৩/০৪/২০১৪খ্রিঃ মূলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলা পুনরায় শুনানী/তদন্ত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দঃ) সিলেট জনাব রওশন-উজ-জামান সিদ্দিকী ৭টি অভিযোগ প্রমান করে ৪৫৮ পাতার মতামত দেন। সেই মতামতের প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক কমিটির পুলিশ শাখা-১ এর যুগ্ম সচিব জনাব আ.স.ম ইমদাদুদ দস্তগীর সাহেবের ১৬/০৪/২০১৫ইং তারিখের স্বাক্ষরিত স্মারক নং-৪৪.০০.০০০০.০৯৪.০২.০৫৬.১৩-৩৪৫ স্বারক মূলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভিযুক্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারী কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপীল বিধিমালা ১৯৮৫ এর ৭(৬) এবং ৪(৩)(ডি) বিধি মোতাবেক চাকরী হতে বরখাস্ত (উরংসরংংধষ ভৎড়স ংবৎারপব) দন্ড্র প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন সচিবালয়কে নির্দেশ দেন। প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আপনারা অনেকেই হয়ত জানেন আমার প্রতি আইনের রক্ষক হয়ে এ.এস.পি আলমগীর সহ মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ কি অবিচার করেছে। এ.এস.পি আলমগীরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলায় স্বাক্ষী দিতে গেলে গত ১৪/০৮/২০১৪ইং তারিখে বিকাল আনুমানিক ৫:০০ ঘটিকার সময় তার নির্দেশে থানার সামনে হইতে আমার গাড়ী আটকিয়ে আমাকে থানায় নিয়ে আটক রেখে আমার বিরুদ্ধে আরো একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। আমি নাকি থানার ভেতরে প্রবেশ করে এস.আই নাজিম উদ্দিন ও এস.আই মাসুদকে মারধর করে মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করি। শুনলে আশ্চর্য্য হবেন, উক্ত মামলায় দুইটি চার্জশীট দিয়ে একটি মামলাকে দুইটি মামলায় রূপান্তর করা হয়। প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আপনারাই বলেন, আমার মত নিরীহ প্রকৃতির একজন ব্যবসায়ি লোক একা থানার ভেতরে ঢুকে থানায় উপস্থিত এত পুলিশের সামনে দুইজন পুলিশ অফিসারকে মেরে হাসপাতালে পাঠানো কি সম্ভব? দীর্ঘ্য প্রায় ০৩ বছর পরে হলেও আমি বিচার পেয়েছি, কেননা এ.এস.পি আলমগীরকে চাকুরী হতে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, মিথ্যা পরাজিত হয়ে সত্যের জয় হবেই। এ.এস.পি আলমগীরের বিরুদ্ধে আমার দায়েরী অভিযোগে যে সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ও পুলিশ হেডকোয়ার্টর সিকিউরিটি সেলের তদন্তকারী সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের প্রতি রইল আমার অসীম কৃতজ্ঞতা। প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আমি মৌলভীবাজার জেলার সন্তান। আপনাদের প্রতি আমার আকুল আবেদন, আপনারা আপনাদের লিখনি শক্তি দিয়ে এই সত্য ঘটনাটি দেশবাসীর কাছে তুলে ধরলে আমি সারাজীবন আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।
বিঃদ্রঃ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের শৃঙ্খলা শাখা-২ এর সিনিয়র সহকারী সচিব জনাবা হাসিনা বেগমের স্বাক্ষরিত গত ২২/০৮/২০১৩ইং তারিখের স্বারক নং-৪৫.১৫১.০২৭.০০.০০.১২৩.২০১৩.৩৫২ মূলে ডাঃ রাজিয়া সুলতানাকে সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ১৯৮৫ এর ৩(বি) ও (সি) পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধে চাকুরী হইতে বরখাস্ত করা হয়।