মেয়েটির নাম অ্যানি। আর ছেলেটির নাম বিপ্লব। তারা ভাই-বোন। অ্যানি প্রতিদিন অফিসে আসেন। সঙ্গে বিপ্লবও আসেন। না। তারা দুজন একসঙ্গে চাকরি করেন না। তাহলে কেন আসেন?
মেয়েটিকে কোলে করে অফিসে নিয়ে আসেন তার ভাই। শুধু অফিস নয়, মেয়েটির প্রতিটি পরীক্ষার দিনও তাকে কোলে করে নিয়ে গেছেন তার ভাই। যেদিন কোনো কারনে যেতে পারেন নি; সেদিন তার বাবা নিয়ে গেছেন।
কিন্তু কেন?
হ্যাঁ! মেয়েটি হাঁটতে পারেন না। স্বাভাবিকভাবে হাঁটার সক্ষমতা তার নেই। অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতেও পারেন না, এমনকি দাঁড়াতে গেলেও অন্যের সহযোগিতা নিতে হয় তাকে। তবে জন্মগত পঙ্গু নন তিনি। তিন বছর বয়স থেকে দুটি পা অকেজো হওয়ায় হাঁটতে পারেন না তিনি। দেশে-বিদেশে চিকিৎসা করিয়েও কোনো লাভ হয়নি।
ইচ্ছে থাকলে জগতের অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। এর উদাহরণ বনশ্রীর এই অ্যানি সমাদ্দার। অদম্য ইচ্ছে শক্তির ওপর ভর করেই এগিয়ে গিয়েছেন তিনি। পঙ্গুত্ব দমাতে পারেনি অ্যানির সাফল্য। চাকরি করছেন অডিটর হিসেবে সরকারি অফিসে।
আজ ছিলো তাদের বিভাগীয় পদোন্নতির পরীক্ষা এসএএস পার্ট-১ এর দ্বিতীয় দিন। সেগুন বাগিচা হাইস্কুল কেন্দ্রে ভাইয়ের কোলে চড়েই তাকে আসতে দেখা যায়। গতকালও দেখছিলাম তাকে। আজ কথা হয় তার সঙ্গে।
অ্যানি বলেন, ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। তাই মনের ইচ্ছা শক্তি ও মনোবল নিয়েই জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করছি।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি অ্যানিকে। অ্যানি ঘরে বসে থাকে নি। জীবনের সঙ্গে লড়ে গেছেন আর তার সঙ্গ দিয়েছেন তার ভাই। শুভ কামনা অ্যানি। লেখক: সহ-সম্পাদক, কালের কণ্ঠ