ঢাকা ০১:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবিসির বিশ্লেষণ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে যেভাবে ফাটল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৪ বার

বিগত কয়েক দশকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উপভোগ করেছে। কিন্তু এ বছরের শুরুতেই সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়। সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে যে শান্তিপূর্ণ ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা বাংলাদেশের কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য দেশব্যাপী আন্দোলনে পরিণত হয়। এই প্রতিবাদকে বিশ্বের প্রথম জেনারেল জেড বিপ্লব হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যার ফলস্বরূপ হাসিনা একটি হেলিকপ্টারে চড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান এবং দিল্লিতে আশ্রয় নেন। পরের মাসগুলোতে বাংলাদেশে একজন হিন্দু সন্ন্যাসীকে গ্রেপ্তার এবং ভারতের একটি বাংলাদেশি কনস্যুলেটে জনতার হামলা দুই দেশের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়। এখন দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে, বেড়েছে ধর্মীয় উত্তেজনা।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অবস্থা তুলে ধরে এবিসি নিউজের করা এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। ‘ইন্ডিয়া অ্যান্ড বাংলাদেশ টাইজ স্ট্রেইন্ড বাই শেখ হাসিনা ফ্লিং টু দিল্লি’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি শুক্রবার প্রকাশ হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আয়রন লেডি’ শেখ হাসিনার কট্টর শাসনের অধীনে ভারত দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে তার অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল অংশীদার বলে মনে করে এসেছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা সকলেই সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উত্থান-পতনের সাক্ষী থেকেছে। কিন্তু হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামল আগস্টে আকস্মিকভাবে

শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়, যাকে আবার হাসিনাবিরোধী বলে মনে করা হয়। হিন্দুরা বাংলাদেশের ১৭৪ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ এবং তাদের অনেকেই হাসিনার তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল। হাসিনা ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর দাঙ্গাবাজরা আওয়ামী লীগের প্রতীক এবং কিছু ক্ষেত্রে হিন্দুদের টার্গেট করেছিল। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর মীনাক্ষী গাঙ্গুলী আগস্টে রিপোর্ট করেছেন যে, বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর ‘হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে এবং দোকান লুট করা হয়েছে’।

সেই সময়ে, ইউনূস সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এই ‘সহিংসতার’ নিন্দা করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘সহিংসতা আমাদের শত্রু। দয়া করে আরও শত্রু তৈরি করবেন না। শান্ত হন, দেশ গড়ার জন্য প্রস্তুত হন।’ তবু ভারত ইউনূসের সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ করেছে।

ভারতে নির্বাসিত থেকে হাসিনা দাবি করেছেন, ইউনূস সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার’ জন্য দায়ী। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-গাজার মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব এবং বাংলাদেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উল্লেখ করে যে কোনো ‘অপ্রত্যাশিত’ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে নভেম্বরের শেষের দিকে বাংলাদেশে একজন হিন্দু সন্ন্যাসীকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়, যা ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে একটি বড় কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করে।

অক্টোবরে এক সমাবেশে বাংলাদেশের পতাকাকে অসম্মান করার অভিযোগে হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সমর্থকরা বিশ্বাস করেন যে তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল, কারণ তিনি তার দেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে হামলার বিষয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন। ইউনূস সম্প্রতি একটি ভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন যে, হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার দাবিগুলো ‘অতিরঞ্জিত’ ছিল, যা ভারতে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভারতে কট্টরপন্থি হিন্দু গোষ্ঠী এবং বাংলাদেশের কট্টরপন্থি মুসলিম গোষ্ঠীগুলো একে ওপরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে চলেছে এবং দুই দেশের সরকার যারা দীর্ঘদিন ধরে উষ্ণ সম্পর্ক উপভোগ করে এসেছে সেই ক্ষতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা জারি রেখেছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসিনা সরকারের পতনের অনেক আগে থেকেই অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের রিসার্চ ফেলো অমিত রঞ্জন বলেন, বাংলাদেশিদের মনে এই অনুভূতি সবসময় থাকে যে, ভারত বাংলাদেশের বিষয়ে খুব বেশি হস্তক্ষেপ করে। হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনকে ভারতীয় এস্টাবলিশমেন্ট সমর্থন করেছিল বলেও তাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরির গবেষক খন্দকার তাহমিদ রেজওয়ান বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক শুধু হাসিনার আওয়ামী শাসনামলের সঙ্গেই উষ্ণ ছিল, সাধারণ মানুষের সঙ্গে নয়। ইতোমধ্যে, ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে এবং বাংলাদেশের পতাকার অবমাননা করেছে। বিষয়টি বাংলাদেশে ভারতের প্রতি ক্ষোভ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ডিসেম্বরের শুরুতে প্রায় ৫০ জন বিক্ষোভকারী উত্তর-পূর্ব ভারতের শহর আগরতলায় বাংলাদেশি কনস্যুলেটে প্রবেশ করে বিক্ষোভ দেখায়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সাত বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ঘটনাটিকে ‘গভীরভাবে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছে। এই মাসের শুরুর দিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে এবং সম্পর্কের বরফ গলাতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। আগস্টে হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে এটি ছিল দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফর।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

এবিসির বিশ্লেষণ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে যেভাবে ফাটল

আপডেট টাইম : ১১:১৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

বিগত কয়েক দশকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উপভোগ করেছে। কিন্তু এ বছরের শুরুতেই সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়। সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে যে শান্তিপূর্ণ ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা বাংলাদেশের কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য দেশব্যাপী আন্দোলনে পরিণত হয়। এই প্রতিবাদকে বিশ্বের প্রথম জেনারেল জেড বিপ্লব হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যার ফলস্বরূপ হাসিনা একটি হেলিকপ্টারে চড়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান এবং দিল্লিতে আশ্রয় নেন। পরের মাসগুলোতে বাংলাদেশে একজন হিন্দু সন্ন্যাসীকে গ্রেপ্তার এবং ভারতের একটি বাংলাদেশি কনস্যুলেটে জনতার হামলা দুই দেশের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়। এখন দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে, বেড়েছে ধর্মীয় উত্তেজনা।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অবস্থা তুলে ধরে এবিসি নিউজের করা এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়। ‘ইন্ডিয়া অ্যান্ড বাংলাদেশ টাইজ স্ট্রেইন্ড বাই শেখ হাসিনা ফ্লিং টু দিল্লি’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি শুক্রবার প্রকাশ হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আয়রন লেডি’ শেখ হাসিনার কট্টর শাসনের অধীনে ভারত দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে তার অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল অংশীদার বলে মনে করে এসেছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা সকলেই সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উত্থান-পতনের সাক্ষী থেকেছে। কিন্তু হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামল আগস্টে আকস্মিকভাবে

শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়, যাকে আবার হাসিনাবিরোধী বলে মনে করা হয়। হিন্দুরা বাংলাদেশের ১৭৪ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ এবং তাদের অনেকেই হাসিনার তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল। হাসিনা ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর দাঙ্গাবাজরা আওয়ামী লীগের প্রতীক এবং কিছু ক্ষেত্রে হিন্দুদের টার্গেট করেছিল। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর মীনাক্ষী গাঙ্গুলী আগস্টে রিপোর্ট করেছেন যে, বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর ‘হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে এবং দোকান লুট করা হয়েছে’।

সেই সময়ে, ইউনূস সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এই ‘সহিংসতার’ নিন্দা করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘সহিংসতা আমাদের শত্রু। দয়া করে আরও শত্রু তৈরি করবেন না। শান্ত হন, দেশ গড়ার জন্য প্রস্তুত হন।’ তবু ভারত ইউনূসের সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ করেছে।

ভারতে নির্বাসিত থেকে হাসিনা দাবি করেছেন, ইউনূস সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার’ জন্য দায়ী। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-গাজার মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব এবং বাংলাদেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উল্লেখ করে যে কোনো ‘অপ্রত্যাশিত’ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে নভেম্বরের শেষের দিকে বাংলাদেশে একজন হিন্দু সন্ন্যাসীকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়, যা ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে একটি বড় কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করে।

অক্টোবরে এক সমাবেশে বাংলাদেশের পতাকাকে অসম্মান করার অভিযোগে হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সমর্থকরা বিশ্বাস করেন যে তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল, কারণ তিনি তার দেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে হামলার বিষয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন। ইউনূস সম্প্রতি একটি ভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন যে, হিন্দুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার দাবিগুলো ‘অতিরঞ্জিত’ ছিল, যা ভারতে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ইতোমধ্যে ভারতে কট্টরপন্থি হিন্দু গোষ্ঠী এবং বাংলাদেশের কট্টরপন্থি মুসলিম গোষ্ঠীগুলো একে ওপরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে চলেছে এবং দুই দেশের সরকার যারা দীর্ঘদিন ধরে উষ্ণ সম্পর্ক উপভোগ করে এসেছে সেই ক্ষতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা জারি রেখেছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাসিনা সরকারের পতনের অনেক আগে থেকেই অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের রিসার্চ ফেলো অমিত রঞ্জন বলেন, বাংলাদেশিদের মনে এই অনুভূতি সবসময় থাকে যে, ভারত বাংলাদেশের বিষয়ে খুব বেশি হস্তক্ষেপ করে। হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনকে ভারতীয় এস্টাবলিশমেন্ট সমর্থন করেছিল বলেও তাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।

বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরির গবেষক খন্দকার তাহমিদ রেজওয়ান বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক শুধু হাসিনার আওয়ামী শাসনামলের সঙ্গেই উষ্ণ ছিল, সাধারণ মানুষের সঙ্গে নয়। ইতোমধ্যে, ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছে এবং বাংলাদেশের পতাকার অবমাননা করেছে। বিষয়টি বাংলাদেশে ভারতের প্রতি ক্ষোভ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ডিসেম্বরের শুরুতে প্রায় ৫০ জন বিক্ষোভকারী উত্তর-পূর্ব ভারতের শহর আগরতলায় বাংলাদেশি কনস্যুলেটে প্রবেশ করে বিক্ষোভ দেখায়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সাত বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ঘটনাটিকে ‘গভীরভাবে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছে। এই মাসের শুরুর দিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে এবং সম্পর্কের বরফ গলাতে ঢাকায় গিয়েছিলেন। আগস্টে হাসিনা দিল্লিতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে এটি ছিল দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফর।