ঢাকা ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্যানসার প্রতিরোধে অতিপ্রয়োজনীয় পরামর্শ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:১৭:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • ৩১ বার

বিশ্বজুড়ে যত মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে, তার মধ্যে ১২ শতাংশের বেশি হয়ে থাকে ক্যানসারের কারণে। কাজেই এ রোগটিকে হেলাফেলা করে চাপিয়ে রাখা কোনো মানুষের জন্যই মঙ্গলজনক নয়। ক্যানসার একটি মারাত্মক মরণব্যাধি। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে প্রয়োজনীয় চিকিৎসায় রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারেন। ক্যানসার সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে বিস্তার ঘটিয়ে তা দেহের চারপাশের টিস্যু, এমনকি দূরবর্তী কোনো অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। পরিণতিতে আক্রান্ত ব্যক্তি একপর্যায়ে মৃত্যুবরণ করে থাকেন।

ক্যানসার মরণব্যাধি রোগ বলেই আমাদের সবার এ বিষয়ে সচেতন হওয়া একান্ত দরকার। আমাদের দেশে স্তন, জরায়ু, অন্ত্রনালি, প্রোস্টেট, ফুসফুস, পাকস্থলী, ডিম্বাশয়, যকৃত, খাদ্যনালি, মুখগহ্বর, ত্বক ইত্যাদি অঙ্গের ক্যানসার প্রায়ই পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। এসব অঙ্গে ক্যানসার হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে পান-সুপারি, জর্দা, তামাকপাতা, ধূমপান, মদ্যপান, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ, ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শ, কিছু কিছু ভাইরাস (হেপাটাইটিস-বি ও সি, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ঐচঠ), এইচআইভি, ইবিস্টেইন বার ভাইরাস, সাইটোমেগালা ভাইরাস), কিছু পরজীবী (সিস্টোসোমিয়াসিস), সূর্যকিরণ, তেজষ্ক্রিয়তা, কীটনাশক, কাপড়ের রঙ, বায়ুদূষণ ইত্যাদিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ক্যানসার প্রতিরোধ কিছু নিয়ম-কানুন মেনে সবার জন্যই উত্তম। এসব নিয়মের মধ্যে সুপারি, জর্দা, তামাকপাতা, ধূমপান ও মদ্যপান বর্জন করতে হবে। ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, বিশেষ করে নারীদের ঋতুস্রাব এবং সন্তান জন্মের পরে পরিচ্ছন্নতা বিশেষ প্রয়োজন। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম করে শরীর সচল রাখা খুব জরুরি। সব ধরনের তেজষ্ক্রিয়তা এড়িয়ে চলা ভালো। পেশাগত কারণে কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শে আসার আশঙ্কা থাকলে প্রয়োজনীয় প্রটেকশন নিয়ে কাজ করতে হবে। সময়মতো টিকা গ্রহণ করা জরুরি। যেমনÑ ঐচঠ টিকা, হেপাটাইটিসবি টিকা। রঙিন খাদ্য ও পানীয়, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ এবং কসমেটিক বর্জন করতে হবে।

সর্বোপরি খাদ্য, ওষুধ ও কসমেটিক ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। পর্যাপ্ত উদ্ভিজ খাবার (শাকসবজি, ফলমূল) ও আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। খাবারে অতিরিক্ত লবণ বর্জন করুন। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ বা এড়িয়ে চলুন। যেসব অসুখ থেকে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেগুলোর দ্রুত চিকিৎসা করানো উত্তম। ধূমপান ও মাদকবিরোধী আইন মেনে চলুন অথবা তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিন। ক্যানসারের কারণ, প্রতিরোধ দ্রুত ক্যানসার নির্ণয় এবং ক্যানসারের পরিণতি সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করার মাধ্যমে জনসচেনতা সৃষ্টি করার মাধ্যমে ক্যানসার থেকে দূরে থাকা যায়। দ্রুত ক্যানসার নির্ণয় ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে এ ঘাতকব্যাধি নির্মূল করা সম্ভব। তাই ক্যানসারের লক্ষণ অনুভূত হলে শুরুতেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন সুস্থ থাকুন।

যেভাবে রোগটি প্রতিরোধ করবেন : খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, যেমনÑ টাটকা ফলমূল খাবেন। প্রক্রিয়াজাত খাবার খাবেন না। ওজন কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার, এন্ডোসকপিক স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে গেলে ভালো থাকা যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ক্যানসার প্রতিরোধে অতিপ্রয়োজনীয় পরামর্শ

আপডেট টাইম : ০৭:১৭:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

বিশ্বজুড়ে যত মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকে, তার মধ্যে ১২ শতাংশের বেশি হয়ে থাকে ক্যানসারের কারণে। কাজেই এ রোগটিকে হেলাফেলা করে চাপিয়ে রাখা কোনো মানুষের জন্যই মঙ্গলজনক নয়। ক্যানসার একটি মারাত্মক মরণব্যাধি। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে প্রয়োজনীয় চিকিৎসায় রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারেন। ক্যানসার সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে বিস্তার ঘটিয়ে তা দেহের চারপাশের টিস্যু, এমনকি দূরবর্তী কোনো অঙ্গেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। পরিণতিতে আক্রান্ত ব্যক্তি একপর্যায়ে মৃত্যুবরণ করে থাকেন।

ক্যানসার মরণব্যাধি রোগ বলেই আমাদের সবার এ বিষয়ে সচেতন হওয়া একান্ত দরকার। আমাদের দেশে স্তন, জরায়ু, অন্ত্রনালি, প্রোস্টেট, ফুসফুস, পাকস্থলী, ডিম্বাশয়, যকৃত, খাদ্যনালি, মুখগহ্বর, ত্বক ইত্যাদি অঙ্গের ক্যানসার প্রায়ই পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। এসব অঙ্গে ক্যানসার হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে পান-সুপারি, জর্দা, তামাকপাতা, ধূমপান, মদ্যপান, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ, ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শ, কিছু কিছু ভাইরাস (হেপাটাইটিস-বি ও সি, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস ঐচঠ), এইচআইভি, ইবিস্টেইন বার ভাইরাস, সাইটোমেগালা ভাইরাস), কিছু পরজীবী (সিস্টোসোমিয়াসিস), সূর্যকিরণ, তেজষ্ক্রিয়তা, কীটনাশক, কাপড়ের রঙ, বায়ুদূষণ ইত্যাদিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ক্যানসার প্রতিরোধ কিছু নিয়ম-কানুন মেনে সবার জন্যই উত্তম। এসব নিয়মের মধ্যে সুপারি, জর্দা, তামাকপাতা, ধূমপান ও মদ্যপান বর্জন করতে হবে। ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, বিশেষ করে নারীদের ঋতুস্রাব এবং সন্তান জন্মের পরে পরিচ্ছন্নতা বিশেষ প্রয়োজন। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম করে শরীর সচল রাখা খুব জরুরি। সব ধরনের তেজষ্ক্রিয়তা এড়িয়ে চলা ভালো। পেশাগত কারণে কোনো ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শে আসার আশঙ্কা থাকলে প্রয়োজনীয় প্রটেকশন নিয়ে কাজ করতে হবে। সময়মতো টিকা গ্রহণ করা জরুরি। যেমনÑ ঐচঠ টিকা, হেপাটাইটিসবি টিকা। রঙিন খাদ্য ও পানীয়, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ এবং কসমেটিক বর্জন করতে হবে।

সর্বোপরি খাদ্য, ওষুধ ও কসমেটিক ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। পর্যাপ্ত উদ্ভিজ খাবার (শাকসবজি, ফলমূল) ও আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। খাবারে অতিরিক্ত লবণ বর্জন করুন। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ বা এড়িয়ে চলুন। যেসব অসুখ থেকে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেগুলোর দ্রুত চিকিৎসা করানো উত্তম। ধূমপান ও মাদকবিরোধী আইন মেনে চলুন অথবা তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিন। ক্যানসারের কারণ, প্রতিরোধ দ্রুত ক্যানসার নির্ণয় এবং ক্যানসারের পরিণতি সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করার মাধ্যমে জনসচেনতা সৃষ্টি করার মাধ্যমে ক্যানসার থেকে দূরে থাকা যায়। দ্রুত ক্যানসার নির্ণয় ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে এ ঘাতকব্যাধি নির্মূল করা সম্ভব। তাই ক্যানসারের লক্ষণ অনুভূত হলে শুরুতেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন সুস্থ থাকুন।

যেভাবে রোগটি প্রতিরোধ করবেন : খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, যেমনÑ টাটকা ফলমূল খাবেন। প্রক্রিয়াজাত খাবার খাবেন না। ওজন কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার, এন্ডোসকপিক স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা চালিয়ে গেলে ভালো থাকা যায়।