ঢাকা ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোন ভিটামিনের অভাবে মহিলারা খিটখিটে হয়ে যান?

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:১১:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২ বার

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই মুড স্যুইংয়ের সমস্যায় আক্রান্ত হন। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এটি একটি সাধারণ সমস্যা, যা বিশেষ করে মেনোপজের আগে এবং পরে তীব্র হতে পারে। ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন, খিটখিটে মন, রাগ বৃদ্ধি—এই সমস্যাগুলি বেশিরভাগ সময় মহিলাদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। তবে এই মুড স্যুইংয়ের পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও পুষ্টির অভাব।

পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, মুড স্যুইংয়ের সমস্যা রোধে কিছু বিশেষ ভিটামিন ও খনিজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আসুন, জেনে নিই কোন ভিটামিন ও খনিজের অভাবে মুড স্যুইং হতে পারে এবং কীভাবে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

১. ভিটামিন বি (B1, B6, B12):

ভিটামিন বি মস্তিষ্কে রাসায়নিক বার্তা পৌঁছানোর প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে। এটি স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি-এর অভাবে অল্পতেই ক্লান্তি, উদ্বেগ এবং মনোভাবের পরিবর্তন হতে পারে। বিশেষত, ভিটামিন বি-১, বি-৬ এবং বি-১২ শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকতে হবে। তাই আপনার ডায়েটে শাকসবজি, গোটা শস্য, ডিম, মাছ এবং লিন প্রোটিন যুক্ত খাবার রাখা উচিত।

২. ম্যাগনেসিয়াম:

ম্যাগনেসিয়াম স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। এটি মুড স্যুইংকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে খিটখিটে মেজাজ এবং মানসিক চাপ বাড়তে পারে। কুমড়া বীজ, কাঠবাদাম, ডার্ক চকলেট এবং সবুজ শাকসবজি খাওয়া উচিত ম্যাগনেসিয়ামের অভাব পূরণের জন্য।

৩. আয়রন:

আয়রনের অভাব শরীরে অক্সিজেন পরিবহন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, যার ফলে ক্লান্তি, অবসাদ, এবং হতাশা দেখা দিতে পারে। মস্তিষ্কের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে আয়রন অত্যন্ত জরুরি। পালংশাক, বিনস, ডাল, মাংস এবং অন্যান্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

৪. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড:

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি উদ্বেগ এবং যন্ত্রণাও কমাতে সাহায্য করে। স্যামন, টুনা, আখরোট, ফ্ল্যাক্সসিড এবং অন্যান্য ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

৫. ভিটামিন ডি:

ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখার পাশাপাশি শরীরের স্ট্রেস লেভেল কমাতে সহায়তা করে। এটি উদ্বেগ এবং ডিপ্রেশন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈলাক্ত মাছ, ডিম এবং সূর্যালোক গ্রহণ করেও ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণ করা যেতে পারে।

মুড স্যুইংয়ের সমস্যা যদি অতিরিক্ত জটিল হয়ে যায় বা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়, তবে দ্রুত মনোবিদের সাহায্য নেওয়া উচিত। কখনও কখনও এই ধরনের সমস্যা অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার লক্ষণ হতে পারে, যেমন উদ্বেগ, ডিপ্রেশন বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। সেক্ষেত্রে, পেশাদার পরামর্শ এবং চিকিৎসা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কোন ভিটামিনের অভাবে মহিলারা খিটখিটে হয়ে যান?

আপডেট টাইম : ০৭:১১:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই মুড স্যুইংয়ের সমস্যায় আক্রান্ত হন। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এটি একটি সাধারণ সমস্যা, যা বিশেষ করে মেনোপজের আগে এবং পরে তীব্র হতে পারে। ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন, খিটখিটে মন, রাগ বৃদ্ধি—এই সমস্যাগুলি বেশিরভাগ সময় মহিলাদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। তবে এই মুড স্যুইংয়ের পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও পুষ্টির অভাব।

পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, মুড স্যুইংয়ের সমস্যা রোধে কিছু বিশেষ ভিটামিন ও খনিজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আসুন, জেনে নিই কোন ভিটামিন ও খনিজের অভাবে মুড স্যুইং হতে পারে এবং কীভাবে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

১. ভিটামিন বি (B1, B6, B12):

ভিটামিন বি মস্তিষ্কে রাসায়নিক বার্তা পৌঁছানোর প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে। এটি স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি-এর অভাবে অল্পতেই ক্লান্তি, উদ্বেগ এবং মনোভাবের পরিবর্তন হতে পারে। বিশেষত, ভিটামিন বি-১, বি-৬ এবং বি-১২ শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকতে হবে। তাই আপনার ডায়েটে শাকসবজি, গোটা শস্য, ডিম, মাছ এবং লিন প্রোটিন যুক্ত খাবার রাখা উচিত।

২. ম্যাগনেসিয়াম:

ম্যাগনেসিয়াম স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। এটি মুড স্যুইংকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে খিটখিটে মেজাজ এবং মানসিক চাপ বাড়তে পারে। কুমড়া বীজ, কাঠবাদাম, ডার্ক চকলেট এবং সবুজ শাকসবজি খাওয়া উচিত ম্যাগনেসিয়ামের অভাব পূরণের জন্য।

৩. আয়রন:

আয়রনের অভাব শরীরে অক্সিজেন পরিবহন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, যার ফলে ক্লান্তি, অবসাদ, এবং হতাশা দেখা দিতে পারে। মস্তিষ্কের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে আয়রন অত্যন্ত জরুরি। পালংশাক, বিনস, ডাল, মাংস এবং অন্যান্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

৪. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড:

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি উদ্বেগ এবং যন্ত্রণাও কমাতে সাহায্য করে। স্যামন, টুনা, আখরোট, ফ্ল্যাক্সসিড এবং অন্যান্য ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

৫. ভিটামিন ডি:

ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখার পাশাপাশি শরীরের স্ট্রেস লেভেল কমাতে সহায়তা করে। এটি উদ্বেগ এবং ডিপ্রেশন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈলাক্ত মাছ, ডিম এবং সূর্যালোক গ্রহণ করেও ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণ করা যেতে পারে।

মুড স্যুইংয়ের সমস্যা যদি অতিরিক্ত জটিল হয়ে যায় বা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়, তবে দ্রুত মনোবিদের সাহায্য নেওয়া উচিত। কখনও কখনও এই ধরনের সমস্যা অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার লক্ষণ হতে পারে, যেমন উদ্বেগ, ডিপ্রেশন বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। সেক্ষেত্রে, পেশাদার পরামর্শ এবং চিকিৎসা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।