ঢাকা ০৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ মার্চ ২০২৫, ২৩ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শীতকালীন ত্বকের রোগ এবং যত্ন-আত্তি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫৩:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৫ বার

শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায়, বায়ুমণ্ডল ত্বক থেকে শুষে নেয় পানি। ফলে ত্বক, ঠোঁট ও পায়ের তালু ফেটে যেতে থাকে। মানবদেহের ৫৬ শতাংশই পানি। এর মধ্যে ত্বক একাই ধারণ করে ১০ শতাংশ। ত্বক থেকে পানি বেরিয়ে গেলে ত্বক দুর্বল ও অসহায় হয়ে পড়ে।ত্বকের যেসব গ্রন্থি থেকে তেল আর পানি বের হয়, তা আর আগের মতো ঘর্ম বা তেল কোনোটাই তৈরি করতে পারে না। এতে ত্বক আরও শুকিয়ে যায়। আমাদের মনে রাখা খুবই প্রয়োজন যে, ত্বকে থাকে ঘর্মগ্রন্থি ও তেলগ্রন্থি, যেখান থেকে অনবরত তেল ও ঘাম বের হতে থাকে। এ ঘাম ও তেল মিলে দেহের ওপর একটি তেল ও পানির মিশ্রণ বা আবরণী তৈরি করে, যা দেহ শীতল রাখে এবং শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা ও ত্বকের ফাটা ভাব প্রতিরোধ করে।

ঠোঁটের যত্নে করণীয় : শীতে ত্বক ছাড়াও বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয় ঠোঁট নিয়ে। কমবেশি সবারই ঠোঁট ফাটে। তবে তৈলাক্ত প্রলেপ ঠোঁটে ব্যবহার করলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এ ক্ষেত্রে ভ্যাসলিন, লিপজেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করে ঠোঁট ভালো রাখা যায়। মনে রাখবেন, জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভেজানো উচিত নয়। এতে ঠোঁট ফাটা আরও বেড়ে যেতে পারে।

পায়ের যত্নে করণীয় : কারো কারো মধ্যে শীতে পা ফাটার প্রবণতা দেখা যায়। সেক্ষেত্রে অ্যাক্রোফ্লেভিন দ্রবণে পা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর পা শুকিয়ে গেলে ভ্যাসলিন মেখে দিন। এ ছাড়াও গ্লিসারিন ও পানির দ্রবণ পায়ে মেখে পায়ের ফাটা রোধ করা সম্ভব। পায়ের ফাটা কম হলে অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল ব্যবহারেও উপকার পাওয়া যায়। বাজারে নানা রকম ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়। এটা আসলে তেল ও পানির মিশ্রণ। এতে থাকে ত্বক কোমলকারী পদার্থ। যেমন- পেট্রোলিয়াম, ভেজিটেবল অয়েল, ল্যানোলিন, সিলিকন, লিকুইড, প্যারাফিন ইত্যাদি।

জন্মগত রোগ ইকথায়োসিস : শীত

এলেই বাড়ে, এমন একটি রোগের নাম হলো ইকথায়োসিস। এটি আবার বিভিন্ন ধরনের। এর মধ্যে ইকথায়োসিস ভ্যালগারিস একটি। এটি জন্মগত রোগ এবং রোগটি শিশুকাল থেকেই লক্ষ করা যায়। এ রোগে যারা আক্রান্ত হয়, তাদের হাত-পায়ের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায়, ত্বক ফাটা ফাটা এবং ছোট ছোট গুঁড়াগুঁড়া মরা চামড়া বা আঁইশ পায়ের সামনের অংশের বা হাতের চামড়ায় লক্ষণীয়ভাবে ফুটে উঠতে দেখা যায়। তবে হাত ও পায়ের ভাঁজযুক্ত স্থানে থাকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। এদের ক্ষেত্রে শীত এলেই প্রতিবছর রোগটি ব্যাপকভাবে বাড়ে। এদের হাত বা পায়ের দিকে তাকালে দেখা যায়, হাতের রেখাগুলো খুবই স্পষ্ট এবং মোটা, যা কিনা সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় নয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শীতকালীন ত্বকের রোগ এবং যত্ন-আত্তি

আপডেট টাইম : ০৬:৫৩:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায়, বায়ুমণ্ডল ত্বক থেকে শুষে নেয় পানি। ফলে ত্বক, ঠোঁট ও পায়ের তালু ফেটে যেতে থাকে। মানবদেহের ৫৬ শতাংশই পানি। এর মধ্যে ত্বক একাই ধারণ করে ১০ শতাংশ। ত্বক থেকে পানি বেরিয়ে গেলে ত্বক দুর্বল ও অসহায় হয়ে পড়ে।ত্বকের যেসব গ্রন্থি থেকে তেল আর পানি বের হয়, তা আর আগের মতো ঘর্ম বা তেল কোনোটাই তৈরি করতে পারে না। এতে ত্বক আরও শুকিয়ে যায়। আমাদের মনে রাখা খুবই প্রয়োজন যে, ত্বকে থাকে ঘর্মগ্রন্থি ও তেলগ্রন্থি, যেখান থেকে অনবরত তেল ও ঘাম বের হতে থাকে। এ ঘাম ও তেল মিলে দেহের ওপর একটি তেল ও পানির মিশ্রণ বা আবরণী তৈরি করে, যা দেহ শীতল রাখে এবং শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা ও ত্বকের ফাটা ভাব প্রতিরোধ করে।

ঠোঁটের যত্নে করণীয় : শীতে ত্বক ছাড়াও বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয় ঠোঁট নিয়ে। কমবেশি সবারই ঠোঁট ফাটে। তবে তৈলাক্ত প্রলেপ ঠোঁটে ব্যবহার করলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এ ক্ষেত্রে ভ্যাসলিন, লিপজেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করে ঠোঁট ভালো রাখা যায়। মনে রাখবেন, জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভেজানো উচিত নয়। এতে ঠোঁট ফাটা আরও বেড়ে যেতে পারে।

পায়ের যত্নে করণীয় : কারো কারো মধ্যে শীতে পা ফাটার প্রবণতা দেখা যায়। সেক্ষেত্রে অ্যাক্রোফ্লেভিন দ্রবণে পা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর পা শুকিয়ে গেলে ভ্যাসলিন মেখে দিন। এ ছাড়াও গ্লিসারিন ও পানির দ্রবণ পায়ে মেখে পায়ের ফাটা রোধ করা সম্ভব। পায়ের ফাটা কম হলে অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল ব্যবহারেও উপকার পাওয়া যায়। বাজারে নানা রকম ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়। এটা আসলে তেল ও পানির মিশ্রণ। এতে থাকে ত্বক কোমলকারী পদার্থ। যেমন- পেট্রোলিয়াম, ভেজিটেবল অয়েল, ল্যানোলিন, সিলিকন, লিকুইড, প্যারাফিন ইত্যাদি।

জন্মগত রোগ ইকথায়োসিস : শীত

এলেই বাড়ে, এমন একটি রোগের নাম হলো ইকথায়োসিস। এটি আবার বিভিন্ন ধরনের। এর মধ্যে ইকথায়োসিস ভ্যালগারিস একটি। এটি জন্মগত রোগ এবং রোগটি শিশুকাল থেকেই লক্ষ করা যায়। এ রোগে যারা আক্রান্ত হয়, তাদের হাত-পায়ের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায়, ত্বক ফাটা ফাটা এবং ছোট ছোট গুঁড়াগুঁড়া মরা চামড়া বা আঁইশ পায়ের সামনের অংশের বা হাতের চামড়ায় লক্ষণীয়ভাবে ফুটে উঠতে দেখা যায়। তবে হাত ও পায়ের ভাঁজযুক্ত স্থানে থাকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। এদের ক্ষেত্রে শীত এলেই প্রতিবছর রোগটি ব্যাপকভাবে বাড়ে। এদের হাত বা পায়ের দিকে তাকালে দেখা যায়, হাতের রেখাগুলো খুবই স্পষ্ট এবং মোটা, যা কিনা সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় নয়।