হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীর রমনা ও মতিঝিল এলাকার বাসিন্দারা কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে রীতিমতো অতিষ্ঠ। তুচ্ছ ঘটনায় হইচই-মারামারি নিত্যদিনের ঘটনা।
কিশোর গ্যাংয়ের অনেক সদস্য পেশাদার অপরাধী হিসাবেও পুলিশের তালিকাভুক্ত। কেউ কেউ হাত পাকিয়েছেন চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসায়। স্কুলের গণ্ডি পার হওয়ার আগেই ইভটিজিং আর বখাটেপনায় অনেকে সিদ্ধহস্ত।
সূত্র বলছে, পুলিশের রমনা ও মতিঝিল জোনে কিশোর গ্যাংয়ের সংখ্যা ১৯। এর মধ্যে মতিঝিলে ১১ এবং রমনায় ৮। প্রতিটি গ্যাংয়ের পেছনে সরকারদলীয় কতিপয় নেতার আশীর্বাদ রয়েছে। কিশোর গ্যাং লালনপালনের নেপথ্যে তাদের উদ্দেশ্য একটাই-যে কোনোভাবে এলাকার আধিপত্যবজায় রাখা।
পৃষ্ঠপোষক যারা : রমনা ও মতিঝিল এলাকায় একাধিক কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষক হিসাবে পুলিশের তালিকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতার নাম পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক মোরশেদ কামাল এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ইসমাইল হোসেন তপু। এর মধ্যে মোরশেদ কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে-তিনি কলাবাগান এলাকায় সক্রিয় কিশোর গ্যাং জসিম গ্রুপকে শেল্টার দেন। এছাড়া হাজারীবাগে সক্রিয় লাভলেন ও বাংলা গ্রুপকে শেল্টার দেওয়ার অভিযোগ ছাত্রলীগ নেতা তপুর বিরুদ্ধে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানার জন্য মোরশেদ কামালের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে বক্তব্য চেয়ে খুদেবার্তা পাঠানো হলেও সাড়া মেলেনি। পুলিশের তালিকায় ছাত্রলীগ নেতা তপুর ৪টি মোবাইল নম্বর উল্লেখ রয়েছে। বক্তব্য জানার জন্য এসব নম্বরে ফোন করা হলে ২টি বন্ধ পাওয়া যায় এবং ২টিতে রিং হলেও কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
তালিকা অনুযায়ী রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী, মগবাজার এবং শান্তিনগর এলাকায় সক্রিয় কিশোর গ্যাং বেইলি কিং রন বা রন গ্রুপের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক ১৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ। স্থানীয় থানায় তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ আছে। এছাড়া টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মাদকসেবন, বখাটেপনা ও ছিনতাইয়ে জড়িত অলি গ্রুপ। এর পৃষ্ঠপোষক অলি গাজী নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের টিএসসি ইউনিটের নেতা বলে পরিচয় দেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চাইলে অলি গাজী বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে বলেন, এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। দলের বদনাম হয়-এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আমি জড়িত নই।
পুলিশের তালিকায় কিশোর গ্যাংয়ের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক হিসাবে নাম আছে কলাবাগান থানা যুবলীগের যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া ও হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রবিনের। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রবিন যুগান্তরকে বলেন, ‘এলাকায় রাজনৈতিক পক্ষ-বিপক্ষ আছে। অন্যায় কর্মকাণ্ডে সমর্থন না দেওয়ায় অনেকে ক্ষুব্ধ হন। তাদের মাধ্যমে এ ধরনের তালিকা হয়ে থাকতে পারে। তবে এলাকায় পরিষ্কার বলা আছে মাদক, ইভটিজিং ও মারামারি-এ তিনটি অপরাধে জড়ালে কেউ ছাত্রলীগের কাছ থেকে কোনো ধরনের সহায়তা পাবে না।’
হাজারীবাগের চৌধুরী বাড়ি মোড়, পার্ক কুঞ্জ এবং বাড্ডা নগর এলাকায় সক্রিয় ‘লাড়া দে’ গ্রুপের পৃষ্ঠপোষক সরফুদ্দিন আহম্মেদ ঢালী নামের স্থানীয় এক প্রভাবশালী। কিশোর গ্যাংয়ের লালনপালন ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বেড়িবাঁধ এলাকায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী তৎপরতার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘সব মিথ্যা। আমাকে এলাকার সবাই ভালো মানুষ হিসাবে জানে। দীর্ঘ ১৪ বছর আমি জাপানে ছিলাম। পারিবারিকভাবে আমাদের বিপুল ধনসম্পদ রয়েছে। চাঁদার টাকায় আমার সংসার চলে না।’
রাজধানীর মুগদা এলাকায় সক্রিয় চাঁন যাদু গ্রুপের পৃষ্ঠপোষক হিসাবে ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া রাজার নাম জানা যায়। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ কেউ করতে পারে-এটা শুনে তিনি বাগ্রুদ্ধ। কী বলবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না। প্রকৃতপক্ষে চান-যাদু গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে তিনি পুলিশকে তাগাদা দিয়ে আসছেন। অথচ তার নামই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।’
সিটি করপোরেশনের ৭২নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হাজী বিপ্লবের বিরুদ্ধেও কিশোর গ্যাং লালনপালনের অভিযোগ আছে। অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার তিনি যুগান্তরকে জানান, ‘তিনি ক্লিন ইমেজের নেতা। তার নাম ভাঙিয়ে কেউ অপকর্ম করলে দায়দায়িত্ব তিনি নেবেন না। স্থানীয় কিশোর গ্যাং বিচ্ছু বাহিনী গ্রুপের সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে তিনি একাধিকবার অনুরোধ করেছেন।
রমনা থানা : রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় সক্রিয় কিশোর গ্যাং বেইলি কিং রন বা রন গ্রুপের লিডার সামিউল হক ওরফে রন এলাকায় প্রভাবশালী হিসাবে পরিচিত। মহল্লায় বের হলেই তার সঙ্গে ১০/২০ জন সঙ্গী জুটে যায়। এদের নিয়ে তিনি বিভিন্ন অলিগলিতে মহড়া দেন। এ সময় পথচারীদের উত্ত্যক্ত করা হয়। নারীদের দেখে করা হয় অশালীন মন্তব্য। রন’র বাবার নাম মৃত সাইদুল হক। বর্তমানে সিদ্ধেশ্বরী ১১/১/এ, তৃতীয় তলার বাসিন্দা। রন’র সহযোগীদের অন্যতম হলেন রমনা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফারহান। তার অন্যতম সহযোগীদের মধ্যে ইমন, নিলয়, মুসা দেওয়ান, পারভেজ, সৈকত ও সানির নাম উল্লেখযোগ্য। রন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষক স্থানীয় ১৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ।
শাহবাগ থানা : সোহরাওর্দী উদ্যান এলাকায় ছিনতাইয়ে জড়িত কিশোর গ্যাং অলি গ্রুপ। লিডারের নাম অলি গাজী। তিনি নিজেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের টিএসসি ইউনিটের নেতা হিসাবে পরিচয় দেন। গ্রুপের কোনো সদস্য গ্রেফতার হলেই তিনি সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে শাহবাগ থানায়। অলি গাজীর বাবার নাম রফিক গাজী। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের দক্ষিণ মহিষদী।
অলি গ্রুপের সদস্যসংখ্যা ১০/১২ জন। তাদের মধ্যে বাবু, পিতা আবুল কাশেম ওরফে আইয়ুব আলী, সাকিব (সোহরাওয়াদী এলাকায় ভাসমান), শুক্কুর, সুমন ও রিপন, পিতা সেলিম, নবী, লিটন পিতা মোতালেব, বিল্লাল পিতা মকবুল হোসেন এবং রাব্বি অন্যতম।
কলাবাগান : রাজধানীর কলাবাগান থানার আশপাশ, বারেক হোটেল এবং ভূতের গলি এলাকায় সক্রিয় জসিম গ্রুপ। লিডারের নাম জসিম। পিতা হালিম শেখ। ৪১/২ নর্থ সার্কুলার রোডে তার বাড়ি। জসিম গ্রুপের সদস্যসংখ্যা ১০/১২ জন। এদের মধ্যে শুভ, দিপু, সেলিম, সাইফুল, দিপু ও মেহেদীর নাম আছে পুলিশের তালিকায়। এদের বিরুদ্ধে ইভটিজিং, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের অভিযোগ আছে।
পুলিশের তালিকা অনুযায়ী জসিম গ্রুপের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোরশেদ কামাল এবং কলাবাগান থানা যুবলীগের যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। এদের আশ্রয়প্রশ্রয়ে গ্রুপের বেশির ভাগ সদস্য অপরাধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। এলাকায় মারামারি থেকে শুরু করে ছিনতাই-চাঁদাবাজিতে জড়িত অনেকে।
হাজারীবাগ থানা : হাজারীবাগ থানায় ৫টি কিশোর গ্যাং তালিকাভুক্ত। এর মধ্যে দুর্ধর্ষ প্রকৃতির একটি হচ্ছে লাভলেন এবং অপরটি বাংলা গ্রুপ। এর সদস্যদের অনেকেই ছিনতাই, চাঁদাবাজি এবং মারামারিতে সিদ্ধহস্ত। লাভলেন গ্রুপের সদস্যরা মদিনা মসজিদ, মিতালী রোড এবং তলাবাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেন। সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন রহিম, হাসান, সোহাগ, সাব্বির ও ইয়াছিন আরাফাত। এদের বেশির ভাগই বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। লাভলেন গ্রুপের লিডারের নাম ফরিদ।
বাংলা গ্রুপের সদস্যদের দেখা যায় জরিনা সিকদার বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এবং বাংলা সড়ক এলাকায়। গ্রুপের লিডার সাখাওয়াত হোসেন ওরফে বাংলা সৈকত। তার বাবার নাম নাসির হোসেন। রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী ১নং গেটে তার বাড়ি। সদস্যসংখ্যা ১৫ থেকে ১৬ জন। এদের মধ্যে শুকুর (স্থানীয় লেদের দোকানের কর্মচারী), সৈকত ওরফে রবিন, সজল হোসেন মজুমদার, মোস্তাফিজ বিল্লাহ রবিন, সজল হোসেন, আকাশ, রাসেল, মুন্না, শাওন, আনোয়ার, পারভেজ, দুলাল, হৃদয়, বাপ্পি ও রাহাদের নাম আছে পুলিশের খাতায়। লাভলেন এবং বাংলা গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বে ইয়াছিন আরাফাত নামের কিশোর নিহত হয়। ২০১৯ সালের ২৯ জুন তার লাশ পাওয়া যায়।
পুলিশের তালিকা অনুযায়ী দুটি গ্রুপের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ইসমাইল হোসেন তপু। হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রবিনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে পারফেক্স গ্যাং স্টার নামের একটি গ্রুপ। এ গ্রুপের লিডারের নাম আজিম। এছাড়া কোম্পানিঘাট এলাকায় সক্রিয় সুমন গ্রুপ। লিডারের নাম শেখর সুমন। তিনি ২২ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য।
পুলিশের তালিকায় বলা হয়েছে, হাজারীবাগ পার্ক, চৌধুরীবাড়ি মোড়, ষড়কুঞ্জ, বাড্ডা নগর পানির ট্যাং এলাকার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে লাড়া দে গ্রুপের হাতে। ৩০/৩৫ জনের গ্রুপটি দুর্ধর্ষ হিসাবে এলাকায় পরিচিত। গ্রুপ লিডার জনির প্রধান সহযোগী টুটুল ওরফে ড্যান্স টুটুল। সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন কথিত ছাত্রলীগ নেতা ফুয়াদ হাসান হৃদয়, আক্তার, চায়না মিলন, ফয়সাল, বাপ্পা, নাঈম ও সুমন।
লাড়া দে গ্রুপের শেল্টারদাতা হিসাবে পুলিশের তালিকায় স্থানীয় প্রভাবশালী সরফুদ্দিন আহম্মেদ ঢালীর নাম আছে। কিশোর গ্যাং লালনপালনের পাশাপাশি তিনি বেড়িবাঁধ এবং সেকশন এলাকায় অবৈধ লেগুনা স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ করেন।
মতিঝিল থানা : রাজধানীর ফকিরাপুল, আরামবাগ ও আশপাশের এলাকায় মিম গ্রুপ নামের একটি কিশোর গ্যাং সক্রিয়। লিডার শেখ সাদ আহম্মেদ ওরফে মিম। তার বাবা মৃত শেখ শামীম আহম্মেদ, ফকিরাপুল (সাফায়েত উল্লাহ লেন) এলাকায় তার বাসা। মীম গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মোশারফ হোসেন হৃদয় ওরফে চুগনি ও মেহেদী হাসান। এদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
মুগদা থানা : মুগদা থানা এলাকায় সক্রিয় ৬টি কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে ১ নম্বরে আছে চান-যাদু গ্রুপের নাম। এদের লিডার হলেন লিমন ওরফে চাঁন। সদস্য সংখ্যা ৭/৮ জন। এদের মধ্যে ইমন ওরফে যাদু, রাব্বি, সাব্বির হোসেন ও শারফিন অন্যতম।
চান-যাদু গ্রুপের বেশির ভাগ সদস্য একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে বলে জানা যায়। পৃষ্ঠপোষক হিসাবে ৬৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া ওরফে রাজার নাম আছে পুলিশের তালিকায়।
মুগদার ডেভিল কিং ফুল পার্টির লিডারের নাম অপু। তার বাবার নাম জমসের মেম্বার। সদস্যদের মধ্যে লিমন, প্রান্ত, সিফাত ও রবিন অন্যতম। এছাড়া উত্তর মুগদা, ঝিলপাড় ও আশপাশ এলাকায় সক্রিয় কিশোর গ্যাং জিসান গ্রুপের লিডার হলেন শাহনেওয়াজ ওরফে জিসান। বাঁধন, হাসান, রহিত, হৃদয়, নইম, রাব্বি ও শুক্কুর নামের ৮ জন সদস্যকে তালিকাভুক্ত করেছে পুলিশ। গ্রুপের বেশির ভাগ সদস্যরা ছিনতাই ও চাঁদাবাজিতে জড়িত। এছাড়া এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে রেসিং, ইভটিজিং ও অহেতুক মারামারিতে জড়িত অনেকে।
উত্তর ও দক্ষিণ মান্ডা এলাকায় সক্রিয় কিশোর গ্যাং বিচ্ছু বাহিনীর লিডার মশিউর রহমান ওরফে প্লাবন। গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে মাত্র ৪ জনের নাম পেয়েছে পুলিশ। এরা হলেন আল আমিন (১) ও আলামিন (২), রবিন এবং তানভীর। ৭২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হাজী বিপ্লব জিসান গ্রুপের পৃষ্ঠপোষক।
মুগদা থানার বাশার টাওয়ার ও আশপাশের এলাকায় একটি কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে দেয় লিটন হোসেন নামের এক তরুণ। তবে এ গ্যাংয়ের নাম জানতে পারেনি পুলিশ। সদস্যদের মধ্যে নিবিড় ও হৃদয়কে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।
এছাড়া উত্তর মান্ডা এবং জার্মান স্কুল এলাকায় সক্রিয় অপর একটি কিশোর গ্যাংয়ের লিডার হিসাবে পুলিশের তালিকাভুক্ত হয়েছেন সানজু। তার বাবার নাম জানু মিয়া। ৮৯/৯০ উত্তর মান্ডা এলাকায় তার বাড়ি। তার সহযোগীদের মধ্যে শামস, মেহেদী ও কালু ওরফে শান্ত অন্যতম।
রামপুরা থানা : রামপুরা থানার হাজীপাড়া, বালুর মাঠ ও আশপাশের এলাকায় সক্রিয় আকিল ও অন্নয় গ্রুপ। লিডারের নাম আকিল হোসেন। সদস্যদের মধ্যে অন্নয়, শিপলু, ইয়াছিন, শাকিল ও শুক্কুর অন্যতম। এদের বিরুদ্ধে মোবাইল ফোন ছিনতাই, মাদকসেবন ও পথচারীদের টাকাপয়সা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
শাহজাহানপুর থানা : শাহজাহানপুর আবুজর গিফারী কলেজ এলাকায় সক্রিয় কিশোর গ্যাং নিবিড় গ্রুপ। সদস্যসংখ্যা ৮/৯ জন। লিডারের নাম শরিফ উদ্দিন ওরফে নিবিড়। অন্য সদস্যদের মধ্যে শাহ জামাল, রানা, জুয়েল, মনির, হামিদ ও বাবু অন্যতম। এদের মধ্যে হামিদ শাহজাহানপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তার বাবার নাম শেখ মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন।
সবুজবাগ থানা : সবুজবাগ ২ নম্বর রোড ও তাজ স্কুলের আশপাশে সক্রিয় মাসুদ গ্রুপ। লিডার মাসুদের বাবার নাম জানু মিয়া ওরফে করম আলী। গ্রুপের সদস্যসংখ্যা ৮/১০ জন। এদের মধ্যে সৌরভ ওরফে সোহরাব, টুডিও ওরফে টুন্ডা, সজিব ও বাবু ওরফে গেদা বাবু পুলিশের তালিকাভুক্ত।
এছাড়া দক্ষিণ রাজারবাগ ও আশপাশের এলাকায় একটি কিশোর গ্রুপের ৬/৭ জন সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের লিডার সাগর হোসেন নামের এক তরুণ। সদস্যদের মধ্যে সিয়াম, বাপ্পী ও ইয়াসিন পুলিশের তালিকাভুক্ত।