বিনা চাষের রসুনে বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার চলনবিল অঞ্চলের মাঠজুড়ে এখন রসুনের ঘ্রাণ। বিনা চাষে বোনা রসুনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটছে হাসি। বর্তমানে জমিতে রসুন তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পুরুষের পাশা-পাশি নারীরাও।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, শীত মৌসুমে ভেজা মাটি রসুন চাষের জন্য উপযোগী। জেলায় এবার ১ হাজার ৪ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে তাড়াশ উপজেলায় ৫১৭ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কুন্দইল, সবুজ পাড়া, বিন্নাবাড়ী, দিঘী সগুনা, ধামাইচ, নওগাঁসহ বিভিন্ন এলাকায় জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। মাঠে মাঠে রসুন তোলায় কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। বিনা চাষে রসুন আবাদ করলেও সার-বীজ-কীটনাশক দিয়ে বিঘা প্রতি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে।

রসুন ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করে চাষিরা বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন

উপজেলার কুন্দইল গ্রামের কৃষক জুলমাত আলী বলেন, ‘আমরা বিনা চাষে লাভের আশায় রসুন আবাদ করেছি। তারপরও সার-কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি দিয়ে বিঘা প্রতি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। এবার পাঁচ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। ন্যায্য দাম পেলে ভালো লাভ হবে।’

রসুন চাষীরা জানান, এ অঞ্চলে প্রতি বছরই বিনা চাষে রসুন চাষ করা হয়। ধানের আবাদের লাভ খুব কম হওয়ায় রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন চাষিরা। বিনা চাষে বোনা হলেও সার-কীটনাশক ও শ্রমিক মজুরিসহ খরচ এবার বেড়েছে। এবার যদি বাজারমূল্য কম হয়, তাহলে লোকসান গুণতে হবে তাদের। তবে ফলন ভালো হওয়ায় আশাবাদী তারা।

৫১৭ হেক্টর জমিতে বিনা চাষের রসুনে বাম্পার ফলন

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, গত বছর তাড়াশে ৪৪০ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে উপজেলায় এবার ৫১৭ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষ হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। এসব রসুন দেশের চাহিদা অনেকটাই পূরণ করবে বলে তিনি জানান।

জেলা কৃষিক সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হানিফ বলেন, ‘শীতের মৌসুমে মাটি ভেজা থাকায় কোনো ধরনের চাষ না দিয়ে সার ছিটানোর পর রসুন লাগান চাষিরা। এরপর খড় বা নাড়া দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এতে রসুনের ফলন ভালো হয়। চাষে বাড়তি খরচও তেমন লাগে না। ইতোমধ্যেই জেলার ৩৯০ হেক্টর জমির রসুন কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। যার উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি গড়ে ৭.২ টন।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর