পটুয়াখালীর মহিপুর ইউনিয়নের বিপীনপুর গ্রাম। বছর পাঁচেক আগেও এ মৌসুমে এ গ্রামে প্রচুর পরিমাণে বোরো ধানসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ হতো। কিন্তু জমিতে লবণাক্ততা বাড়ায় বিগত দিনের তুলনায় কমে যায় ফলন। এতে অনেকটা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন কৃষক। পরে এই অবস্থার উত্তরণ ঘটান ১৫ জন কৃষক।
কৃষক খোকন সিকদারের নেতৃত্বে এই ১৫ জন কৃষক ২৮ বিঘা জমিতে চাষ করেন সূর্যমুখী ফুলের। বর্তমানে তাদের আবাদকৃত জমি ছেয়ে গেছে সূর্যমুখী ফুলের হলুদ আভায়। বাম্পার ফলনে হাসি ফুটেছে তাদের মুখে। শুধু বিপীনপুরের কৃষকরাই নয় এই উপজেলার সহস্রাধিক কৃষক প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করেছেন সূর্যমুখী ফুলের। উপজেলা হিসেবে দেশের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে কলাপাড়ায়। আর এসব ফুলের বীজ দিয়ে ১০ লাখ টন ভোজ্য তেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আরাফাত হোসেন।
মহিপুরের বিপীনপুর গ্রামের কৃষক খোকন সরদার জানান, ৫ বছর আগেও আমরা এখানে লাউ, শশা, সিম ও মরিচসহ বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করতাম। কিন্তু উৎপাদনের লক্ষমাত্রা কমে যাওয়ায় লোকসানে পড়ি। পরে আমরা কৃষকরা একত্রিত হয়ে সূর্যমূখী ফুলের আবাদ শুরু করি। গত বছরও করেছিলাম। আমাদের বেশ ভালো ফলন হয়েছে। আমরা অনেক খুশি। আমাদের বীজ ও সার দিয়ে সহায়তা করেছে ব্র্যাক।
অপর কৃষক নীলগঞ্জ ইউনিয়নের সাইদুল ইসলাম বলেন, জমিতে লবণের পরিমাণ বেড়েছে। তাই বোরো বাদ দিয়ে আমি একাই ১০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। এখন তেলের দামটা ভালো পেলেই আমরা পুষিয়ে উঠতে পারবো।
কৃষিবিদ আরাফাত হোসেন বলেন, অনেক কৃষক দলবদ্ধভাবে অনেক বেশি জমিতে আবার অনেক কৃষক সীমিত পরিসরে কম জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করছে। আমাদের কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে অধিকাংশ স্থানেই বাম্পার ফলন হয়েছে। আর আমাদের উপজেলায় দেশের অন্যান্য উপজেলার চেয়ে সবচেয়ে বেশি জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। আমরা ১০ লাখ টন ভোজ্য তেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। আশা করছি আগামী বছরএই এলাকায় আরো বেশি পরিমাণ জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হবে।