হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনার প্রভাব মোকাবেলায় রফতানি খাত স্বাভাবিক রাখতে বড় ধরনের ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে করোনার কারণে সৃষ্ট ঝুঁকি মোকাবেলার ব্যবস্থা রেখে বিকল্প কোনো উৎস থেকে রফতানিকারকদের চাহিদা অনুযায়ী ঋণের জোগান অব্যাহত রাখতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংকগুলোকে বিকল্প হিসাব খুলে রফতানিকারকের বৈদেশিক মুদ্রা আয়-ব্যয়, ঘাটতি ও ঋণের আলাদা হিসাব রাখতে হবে।
এ বিষয়ে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এটির আলোকে দ্রুত ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে।
আগে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী রফতানির বিল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশে না এলে এর বিপরীতে ব্যাংক ফোর্স লোন বা বাধ্যতামূলক ঋণ সৃষ্টি করে গ্রাহকের দেনা শোধ করত। ফোর্স লোন পরিশোধ না করা পর্যন্ত গ্রাহককে নতুন কোনো ঋণ দিত না। এতে গ্রাহক সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নামে রফতানি কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারতেন না।
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব বাণিজ্য বিপর্যস্ত। অনেক দেশে এখনও লকডাউন (অবরুদ্ধ অবস্থা) চলছে। এ কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে রফতানির বিল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেশে আসছে না। সাধারণত ৯০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে রফতানি বিল দেশে আনার নিয়ম রয়েছে। করোনার কারণে এ বিল দেশে আনার মেয়াদ ১৮০ দিন পর্যন্ত বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর মধ্যেও রফতানি বিল আসছে না। বিশেষ করে গত জানুয়ারিতে যেসব পণ্য রফতানি করা হয়েছে সেগুলোর অনেক এখনও বকেয়া পড়ে আছে। ফলে সংশ্লিষ্ট রফতানিকারকরা ব্যাংক থেকে নতুন ঋণ পাচ্ছেন না। এ কারণে রফতানি কার্যক্রম সচল রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়টি অবহিত হয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই নীতিমালা শিথিল করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- করোনার কারণে যেসব রফতানিকারকের রফতানির বিল দেশে আনতে দেরি হবে তাদের নীতিমালার বাইরে গিয়ে বিকল্প উৎস থেকে অর্থের জোগান দিতে হবে; যাতে রফতানি কার্যক্রম চালু থাকে।
এ খাতে যে ঝুঁকি থাকবে তার বিপরীতে রফতানিকারকের অন্য কোনো গ্যারান্টি দিতে হবে। যাতে একটি এলসির বিপরীতে রফতানি আয় কোনো কারণে দেশে আসা বিলম্বিত হলেও অন্য এলসির বিলগুলো দেশে আসতে পারে।
একই সঙ্গে করোনা সংকটের কারণে যেসব বিল সময়ের মধ্যে আসবে না সেগুলো দেরি হলেও যাতে সংগ্রহ করা যায়, সে বিষয়ে বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। প্রয়োজনে আমদানিকারকের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে হবে। তবে একাধিক এলসির ক্ষেত্রে এমন ঝুঁকি নেয়া যাবে না।
এতে আরও বলা হয়, এসব ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো বৈদেশিক মুদ্রায় যে ঋণের জোগান দেবে তার বিপরীতে ৬ মাস মেয়াদি লন্ডন ইন্টার ব্যাংক অফার রেটের (লাইবর) সঙ্গে সাড়ে ৩ শতাংশ যোগ করে সুদ আদায় করা যাবে। কোনোক্রমেই এর চেয়ে বেশি সুদ আদায় করা যাবে না।