শ্রীলঙ্কায় মুসলিম ৯ মন্ত্রী ও ২ গভর্নরের পদত্যাগ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইস্টার সানডে’তে শ্রীলঙ্কায় সন্ত্রাসী হামলায় যুক্ত ইসলামিক উগ্রপন্থি গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগ উঠার পর ৯ জন মন্ত্রী ও ২ জন প্রাদেশিক গভর্নর সোমবার পদত্যাগ করেছেন। তারা সবাই মুসলিম। পদত্যাগের উদ্দেশ্য, যাতে ওই গ্রুপটির সঙ্গে তাদের কেউ কেউ জড়িত থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে তদন্তের ভিগ্ন না হয়। এ খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই।

এতে বলা হয়, শ্রীলঙ্কায় মোট দুই কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে শতকরা ৯ ভাগ মুসলিম। তাদেরকে সরকার নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হচ্ছে না বলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এসব মুসলিম রাজনীতিক। শ্রীলঙ্কায় ২২৫ সদস্যের পার্লামেন্টে ১৯ জন মুসলিম এমপি আছেন। তার মধ্যে ৯ জন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য। কেহ কেহ প্রতিমন্ত্রী ও উপ মন্ত্রীর পদমর্যায়ও রয়েছেন।

পদত্যাগ করে শ্রীলঙ্কা মুসলিম কংগ্রেসের এমপি রউফ হাকিম বলেছেন, যতদিন জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হবে এবং পুলিশের ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনস ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) তদন্ত শেষ না হচ্ছে ততদিন আমরা সরকারের ব্যাকবেঞ্চার হিসেবে রয়ে যাবো।

উল্লেখ্য, দেশটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ভিক্ষুরা সহ কয়েক হাজার মানুষ চারদিন আগে ক্যান্ডি শহরে বিক্ষোভ প্রতিবাদ করেন। ওই প্রতিবাদ থেকে তিনজন মুসলিম নেতাকে বহিষ্কারের দাবি ওঠে সরকারের প্রতি। তাতে বলা হয়, ওই তিন মুসলিম নেতার যোগাযোগ রয়েছে কলম্বোতে ভয়াবহ হামলা চালানো ও বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন ন্যাশনাল তওহীদ জামায়াতের (এনটিজে) সঙ্গে। ওই বিক্ষোভের চারদিন পরে মুসলিম এমপি ও গভর্নররা পদত্যাগ করলেন।

অভিযোগ আছে, আইসিসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এনটিজে’কে সমর্থন দিচ্ছেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী রিশাথ বাথিয়ুথিন। সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলি জাতিগোষ্ঠী ওই মন্ত্রীকে বরখাস্ত করার জন্য দাবি তুলেছে সরকারের কাছে। মন্ত্রী রিশাথের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোট আনার উদ্যোগ নিয়েছে বিরোধী দল। তবে এনটিজের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা ও তাদের কর্মকান্ডের সঙ্গে যোগসূত্র থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মন্ত্রী রিশাথ।

ওদিকে ইস্টার সানডে হামলার পর সিংহলি সম্প্রদায় মুসলিমদের সহায়সম্পত্তির ওপর আক্রমণ করে। রাজধানীর উত্তরাঞ্চলীয় শহরে এ হামরায় কমপক্ষে একজন মুসলিম নিহত হন। শত শত দোকানপাট, বাড়িঘর, মসজিদ ধ্বংস করা হয়।

ওদিকে সিনিয়র একজন মন্ত্রী কবির হাশিম পদত্যাগের বিষয়ে বলেছেন, তাদের এ সিদ্ধান্তকে আমরা একটি দায়িত্বশীল সম্প্রদায়ের কাজ হিসেবে নিয়েছি। আমরা চাই দেশে পুনর্জাগরণ এবং শান্তি নিশ্চিত হোক। কর্মকর্তারা বলেছেন, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বিক্ষোভের জবাবে ওয়েস্টার্ন প্রদেশের গভর্নর আজাদ স্যালি এবং ইস্টার্ন প্রদেশের গভর্নর এমএএলএম হিজবুল্লাহ তাদের পদত্যাগপত্র তুলে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার হাতে। এ দু’জন গভর্নরই প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার মিত্র। তাদেরকে তিনিই নিয়োগ দিয়েছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর