ঢাকা ০১:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইতিহাস গড়া ম্যাচে টাইগারদের জয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০১৯
  • ১৯৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ইতিহাস গড়ল টাইগাররা। ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৩৩০ রানের পাহাড় গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২১ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। এই জয়ে বিশ্বকাপের ১২তম আসর শুরু করল মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন দলটি।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান তুলতে সক্ষম হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। এছাড়া ৪৫ রান করেন ওপেনার মার্করাম, ৪১ রান করেন ভেন দার ডুসেন। ৩৮ রান করেন ডেভিড মিলার।

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে ৮.২ ওভারে ৬০ রান করেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল। হাতের চোট নিয়ে খেলতে নেমে প্রত্যাশিত ব্যাটিং করতে পারেননি তামিম ইকবাল।

ইনিংসের শুরু থেকে সৌম্য সরকার একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকালেও উইকেটের অন্য প্রান্ত আগলে রাখেন তামিম। কিন্তু আন্দিলে ফিহলোকাওয়ের গতির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন দেশসেরা ওপেনার। তার আগে ২৯ বলে দুটি চারের সাহায্যে ১৬ রান করেন তামিম।

এরপর ১৫ রানের ব্যবধানে ফেরেন অন্য ওপেনার সৌম্য সরকার। দলীয় ৭৫ রানে ক্রিস মরিসের বাউন্সি বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে বিপদে পড়েন দুর্দান্ত খেলতে যাওয়া সৌম্য। ক্রিস মরিসের করা বলটি সৌম্যর মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছিল।

উড়ে আসা সেই বলটি সৌম্যর গ্লাভসে লেগে উইকেটকিপার কুইন্টন ডি ককের ক্যাচে পরিনত হয়। সাজঘরে ফেরার আগে ৩০ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৪২ রান করেন করেন সৌম্য।

৭৫ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর হাল ধরেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকেটে তারা ১৪১ বলে ১৪২ রানের জুটি গড়েন। তাদের অনবদ্য জুটিতে বড় সংগ্রহ পায় টাইগাররা।

ক্যারিয়ারের ৪৩তম ওডিআই ফিফটি গড়ার পর সেঞ্চুরি পথেই ছিলেন সাকিব। কিন্তু ইমরান তাহিরের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। তার আগে ৮৪ বলে ৮টি চার ও এক ছক্কায় ৭৫ রান করেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার।

এদিকে আন্দিলে ফিলোকাওয়েকে বাউন্ডারি হাঁকানোর মধ্য দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩৪তম ফিফটি গড়েন মুশফিক। ফিফটির পর তিনিও সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। দলীয় ২৫০ রানে আউট হন মুশফিক। তার আগে ৮০ বলে ৮টি চারের সাহায্যে ৭৮ রান করেন এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

ইনিংসের শেষ দিকে রীতিমতো তাণ্ডব চালান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ৪৩ বলে ৬৬ রানের জুটি গড়েন তারা। ২০ বলে ২৬ রান করে ফেরেন সৈকত। মাত্র ৩৩ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত ৪৬ রান করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

৩৩১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে দলীয় ৪৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান আউট হয়ে ফেরেন আফ্রিকান ওপেনার। তার আগে ৩২ বলে ২৩ রান করেন ডি কক। ব্যাটিংয়ের পর ফিল্ডিংয়েও দুর্দান্ত মুশফিকুর রহিম। তার থ্রোতে ভেঙে যায় দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার কুইন্টন ডি ককের উইকেট।

ডি ককের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে অফিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিসের সঙ্গে ৫৩ রানের জুটি গড়েন মার্করাম। তাদের মধ্যকার এই জুটি ভাঙেন সাকিব। বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডারের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৫৬ বলে ৪৬ রান করেন মার্করাম। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ১০২ রানে দুই উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

মেহেদী হাসান মিরাজের অফ স্পিনে বিভ্রান্ত ফাফ ডু প্লেসিস। বাংলাদেশের বিপক্ষে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকান এ অধিনায়ককে বোল্ড করেন মিরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে ৫৩ বলে পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় ৬২ রান করেন ডু প্লেসিস।

১৬ রানেই আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার কথা ছিল ডেভিড মিলারের। সাকিবের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সৌম্য সরকারের কারণে লাইফ পান। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা মিলার কিলারকে আউট করে টাইগার শিবির স্বস্থির পরশ এনে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচে পরিনত হওয়ার আগে ৪৩ বলে দুটি চারের সাহায্যে ৩৮ রান করেন মিলার।

দলীয় ২২৮ রানে ভেন দার ডুসেনকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান সাইফউদ্দিন। তার আগে ৩৮ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ৪১ রান করেন দক্ষিণ আফ্রিকান এই ব্যাটসম্যান। সাইফউদ্দিনের বলে ক্যাচ তুলে দেন ফেহালুকাওয়ে। সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিনত হয়ে সাজঘরে ফেরেন দক্ষিণ আফ্রিকান এই পেসার। সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জয়ের দুয়ারে চলে যায় বাংলাদেশ।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পতনের কারণে পরাজয় এড়াতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ইতিহাস গড়া ম্যাচে টাইগারদের জয়

আপডেট টাইম : ১১:০৯:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ইতিহাস গড়ল টাইগাররা। ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৩৩০ রানের পাহাড় গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২১ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। এই জয়ে বিশ্বকাপের ১২তম আসর শুরু করল মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন দলটি।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান তুলতে সক্ষম হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। এছাড়া ৪৫ রান করেন ওপেনার মার্করাম, ৪১ রান করেন ভেন দার ডুসেন। ৩৮ রান করেন ডেভিড মিলার।

টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে ৮.২ ওভারে ৬০ রান করেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল। হাতের চোট নিয়ে খেলতে নেমে প্রত্যাশিত ব্যাটিং করতে পারেননি তামিম ইকবাল।

ইনিংসের শুরু থেকে সৌম্য সরকার একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকালেও উইকেটের অন্য প্রান্ত আগলে রাখেন তামিম। কিন্তু আন্দিলে ফিহলোকাওয়ের গতির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন দেশসেরা ওপেনার। তার আগে ২৯ বলে দুটি চারের সাহায্যে ১৬ রান করেন তামিম।

এরপর ১৫ রানের ব্যবধানে ফেরেন অন্য ওপেনার সৌম্য সরকার। দলীয় ৭৫ রানে ক্রিস মরিসের বাউন্সি বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে বিপদে পড়েন দুর্দান্ত খেলতে যাওয়া সৌম্য। ক্রিস মরিসের করা বলটি সৌম্যর মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছিল।

উড়ে আসা সেই বলটি সৌম্যর গ্লাভসে লেগে উইকেটকিপার কুইন্টন ডি ককের ক্যাচে পরিনত হয়। সাজঘরে ফেরার আগে ৩০ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৪২ রান করেন করেন সৌম্য।

৭৫ রানে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর হাল ধরেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকেটে তারা ১৪১ বলে ১৪২ রানের জুটি গড়েন। তাদের অনবদ্য জুটিতে বড় সংগ্রহ পায় টাইগাররা।

ক্যারিয়ারের ৪৩তম ওডিআই ফিফটি গড়ার পর সেঞ্চুরি পথেই ছিলেন সাকিব। কিন্তু ইমরান তাহিরের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। তার আগে ৮৪ বলে ৮টি চার ও এক ছক্কায় ৭৫ রান করেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার।

এদিকে আন্দিলে ফিলোকাওয়েকে বাউন্ডারি হাঁকানোর মধ্য দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩৪তম ফিফটি গড়েন মুশফিক। ফিফটির পর তিনিও সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। দলীয় ২৫০ রানে আউট হন মুশফিক। তার আগে ৮০ বলে ৮টি চারের সাহায্যে ৭৮ রান করেন এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

ইনিংসের শেষ দিকে রীতিমতো তাণ্ডব চালান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ৪৩ বলে ৬৬ রানের জুটি গড়েন তারা। ২০ বলে ২৬ রান করে ফেরেন সৈকত। মাত্র ৩৩ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত ৪৬ রান করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

৩৩১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে দলীয় ৪৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ভুল বোঝাবুঝির কারণে রান আউট হয়ে ফেরেন আফ্রিকান ওপেনার। তার আগে ৩২ বলে ২৩ রান করেন ডি কক। ব্যাটিংয়ের পর ফিল্ডিংয়েও দুর্দান্ত মুশফিকুর রহিম। তার থ্রোতে ভেঙে যায় দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার কুইন্টন ডি ককের উইকেট।

ডি ককের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে অফিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিসের সঙ্গে ৫৩ রানের জুটি গড়েন মার্করাম। তাদের মধ্যকার এই জুটি ভাঙেন সাকিব। বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডারের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৫৬ বলে ৪৬ রান করেন মার্করাম। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ১০২ রানে দুই উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

মেহেদী হাসান মিরাজের অফ স্পিনে বিভ্রান্ত ফাফ ডু প্লেসিস। বাংলাদেশের বিপক্ষে একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকান এ অধিনায়ককে বোল্ড করেন মিরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে ৫৩ বলে পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় ৬২ রান করেন ডু প্লেসিস।

১৬ রানেই আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার কথা ছিল ডেভিড মিলারের। সাকিবের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সৌম্য সরকারের কারণে লাইফ পান। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা মিলার কিলারকে আউট করে টাইগার শিবির স্বস্থির পরশ এনে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচে পরিনত হওয়ার আগে ৪৩ বলে দুটি চারের সাহায্যে ৩৮ রান করেন মিলার।

দলীয় ২২৮ রানে ভেন দার ডুসেনকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান সাইফউদ্দিন। তার আগে ৩৮ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ৪১ রান করেন দক্ষিণ আফ্রিকান এই ব্যাটসম্যান। সাইফউদ্দিনের বলে ক্যাচ তুলে দেন ফেহালুকাওয়ে। সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিনত হয়ে সাজঘরে ফেরেন দক্ষিণ আফ্রিকান এই পেসার। সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জয়ের দুয়ারে চলে যায় বাংলাদেশ।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পতনের কারণে পরাজয় এড়াতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা।