পর্যটকে সরগরম কক্সবাজার

শীত মৌসুমকে সামনে রেখে পর্যটন রাণী কক্সবাজারে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসতে শুরু করেছে। মৌসুমের শুরু থেকেই পর্যটক আসা শুরু করলেও মাসাধিককাল ধরে বিপুল সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে এসেছে। গত সপ্তাহ ধরে এই সংখ্যা অনেক বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে এসেছে। শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে অনেক পর্যটকের দেখা মিলেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে সংশ্লিষ্টরা। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যটনের মূল মৌসুম শুরু হয় ডিসেম্বর মাস দিয়ে। সে অনুসারে পর্যটকের আনাগোনা বাড়ছে। এরই মধ্যে লক্ষাধিক পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছে। বিজয় দিবস ও থার্টিফার্স্ট নাইটকে উপলক্ষ্য করে চলতি মাসেই পাঁচলক্ষাধিক পর্যটক সমাগম হবে। হোটেল-মোটেল গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার জানান, ‘কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের মৌসুম শীতনির্ভর। শীতকালেই কক্সবাজারে সর্বোচ্চ পর্যটকের সমাগম ঘটে। শীতের প্রারম্ভের মাস হিসেবে ডিসেম্বর মাস দিয়ে কক্সবাজারের পর্যটন মৌসুম শুরু হয়। তাই মৌসুম শুরুর সঙ্গে পর্যটকও আসা শুরু করেছে। বিজয় দিবস উপলক্ষে আগামী ১২ই ডিসেম্বর থেকে সব হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউজের ৯০ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে। শুক্রবার কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, সৈকত জুড়ে স্থানীয় লোকজনের সমাগমের মাঝে দূর-দূরান্ত থেকে আসা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতি দেখা গেছে। সৈকতের পুরো এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এসব পর্যটকরা বিচরণ করছেন। কথা হলে কুমিল্লা থেকে আসা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তানভীর মাহিন বলেন, ‘অনেক দিন কক্সবাজার আসা হয় না। অনেক দিন ধরে আসতে চাচ্ছিলাম এখানে। তাই মৌসুমের শুরুতেই এসে পড়লাম।’ টুর অপারেটরস অব কক্সবাজার (টুয়াক) সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার বেড়াতে আসা পর্যটকরা কক্সবাজার শহর ছাড়িয়ে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, হিমছড়ি, ইনানী, দরিয়ানগর, ডুলাহাজরা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, সোনাদিয়া সহ অন্যান্য পর্যটন স্পটেও বেড়াতে যাচ্ছে। দৈনিক চারটি জাহাজে করে ১২ শ’ পর্যটক সেন্টমার্টিনে যাচ্ছে। পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি পর্যটক কক্সবাজারে বেড়াতে আসবেন। ১৬ই ডিসেম্বরের পর থেকে পুরোদমে পর্যটক আসা শুরু হবে। জানা গেছে, মৌসুম উপলক্ষে কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ীরা সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। অবকাঠামো তৈরি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নতুন রূপে গড়া ও সাজসজ্জাসহ সব রকমের কাজ শেষ করে পর্যটকদের সার্বিক সেবা দেয়ার জন্য তারা পুরোপুরি প্রস্তুত। ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএস কিবরিয়া খান বলেন, ‘মৌসুম সামনে নিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত নগরী কক্সবাজারে ছুটে আসছে পর্যটকরা। পর্যটক বরণে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা পুরোপুরি প্রস্তুত।’ আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ‘চলতি ডিসেম্বর মাস দিয়ে ‘বিশ্ববাসী নানার বাড়ি’ কক্সবাজারে পর্যটক আসা শুরু করেছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় মৌসুমের শুরু দিয়ে পর্যটকরা কক্সবাজারে আসা শুরু করেছে। একইভাবে পর্যটক বরণে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে প্রশাসনের। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, ইনানী, হিমছড়ি, টেকনাফ সৈকত ও সেন্টমার্টিনে ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল দল নিয়োজিত থাকবে। সঙ্গে সঙ্গে সাদা পোশাকেও পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে।’ জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘পর্যটক বরণে জেলা প্রশাসন ও বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির নানা উদ্যোগ রয়েছে। পর্যটনের উন্নয়নে সব উদ্যোগ কাজে লাগানো হবে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর