আইরিশ চ্যালেঞ্জে শুরু টাইগারদের মিশন

টেস্ট খেলুড়ে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের আয়োজন করছে আইসিসির সহযোগী দেশ আয়ারল্যান্ড। কাল আয়োজক আইরিশদের চ্যালেঞ্জ নিয়ে শুরু হচ্ছে সিরিজে টাইগারদের মিশন। এরই মধ্যে বাংলাদেশ দল সেখানে পৌঁছে অনুশীলনও শুরু করেছে। গতকাল একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলে মাশরাফি বিন মুর্তজা বাহিনী। অবশ্য এর আগে ১০ দিন ইংল্যান্ডের সাসেক্স ক্যাম্পে কাটিয়েছে শুধু কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে। কারণ এখানে মাঠে ব্যাট-বলের লড়াইয়ের চেয়ে বড় প্রতিপক্ষ শীত। শীতল আবহওয়াতে খুব একটা অভ্যস্ত নয় বাংলাদেশ দল। তবে স্বস্তির বিষয় আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়াতে এই ঠাণ্ডা হয়তো তেমন সমস্যা হবে না তামিম-সাকিবদের। এই ম্যাচে অবশ্য নেতৃত্ব দিতে পারছেন না নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি। স্লো ওভার রেটের কারণে সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে শেষে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পান তিনি। যে কারণে আজ তার পরিবর্তে দলের সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে মাঠে নামবে টাইগাররা। ডাবলিনে বাংলাদেশ সময় ৩টা ৪৫ মিনিটে শুরু হবে খেলা।
৭ বছর পর আয়ারল্যান্ডের মাটিতে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হচ্ছে টাইগাররা। এর আগে ২০১০ সালে বেলফাস্টে শেষ সিরিজ খেলে দুই দল। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে ব্রিজটাউনে আয়ারল্যান্ডের বিপেক্ষ প্রথমবার মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ দল। টেস্ট মর্যাদা পাওয়া বাংলাদেশকে ৭৪ রানের বড় হারই দেখতে হয়েছিল সেই ম্যাচে আইরিশদের বিপক্ষে। এরপর ২০০৮ সালে আয়ারল্যান্ড দল বাংলাদেশে আসে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে। সেখানে প্রতিশোধটা ভালভাবেই নেয় বাংলাদেশ। হোয়াইটওয়াশ করেই তাদের বিদায় করে। এর ঠিক দুই বছর পর ২০১০ সালে মাশরাফির নেতৃত্বে আয়ারল্যান্ডে দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু আইরিশদের বিপক্ষে ৭ উইকেটে হারের লজ্জা নিয়ে শুরু হয়েছিল তাদের মাটিতে টাইগারদের প্রথম লড়াই। যদিও পরের ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতেছিল মাশরাফিরা। সেই সুবাদে সিরিজটিও ড্র হয়ে কিছুটা মুখ রক্ষা হয়। কিন্তু সেই লজ্জা এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় টাইগারদের। শেষ দেখা ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ঢাকায়। সেবার ২৭ রানের জয় পায় সাকিব আল হাসানের দল।
অনেকটা বছর পার হয়ে গেছে, ক্রিকেটের মানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এখন একেবারেই অন্যরকম। তামিম ইকবাল, সাকিব, মুশফিকুর রহীম ছাড়াও তরুণ সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজদের নিয়েও ভাবতে হয় বিশ্বের সেরা দলগুলোকে। বিশেষ করে ওয়ানডে ফরমেটে এখন যে কোনো দলের আতঙ্কের নাম বাংলাদেশ। তারপরও মাশরাফির সামনে এখন অন্যতম চ্যালেঞ্জ আইরিশদের বিপক্ষে সেই হারের দুঃস্মৃতি ভোলানোর। এই পর্যন্ত ৭ বার আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছে টাইগাররা। এরমধ্যে দুটি হারের অন্যতম কারণ ছিল কন্ডিশন। তাই সেই কন্ডিশনকে জয়ের চেষ্টাতেই এখন কঠোর অনুশীলন করছে দল। ৬ বছর আগে ওয়ানডেতে সাকিবের নেতৃত্বে আইরিশরা হেরেছিল। আজ সেই সাকিবই তাদের মাটিতে প্রস্তুত জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করতে। মাশরাফির অনুপস্থিতিতে পেস বিভাগের নেতৃত্ব দিবেন রুবেল হোসেন। দলের এই অভিজ্ঞ পেসারের জন্য নিজেকে ফের একবার প্রমাণের কঠিন চ্যালেঞ্জ বলা যেতে পারে এই ম্যাচকে। সঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন পেস বিভাগের আক্রমণের শক্তি হবেন। এছাড়াও সাকিবের সঙ্গে স্পিনে মেহেদী হাসান মিরাজ। দুই স্পিনারই অল রাউন্ডার। এছাড়াও ব্যাট হাতে তামিম ইকবালের সঙ্গী হবেন সৌম্য সরকার। যদিও গতকালের প্রস্তুতি ম্যাচে তিনি ১৭ রান করে আউট হয়েছেন তারপরও এই তরুণের ওপরই আস্থা রাখবে দল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিন নম্বরে সাব্বির রহমান, চারে মুশফিকুর রহীম, পাঁচে সাকিব, ছয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ অথবা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তবে চার পেসার নিয়ে মাঠে নামতে পারে দল সেই ক্ষেত্রে কমাতে হবে একজন ব্যাটসম্যান। সিরিজটি মূলত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে প্রস্তুতি হিসেবে কাজে লাগানোর সুযোগ বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের জন্য। সেই সঙ্গে এই সিরিজ জিতে গেলে টাইগারদের আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হবে। তবে হেরে গেলে থাকছে অবনমনের শঙ্কাও। নিউজিল্যান্ড এই সিরিজে পাঠিয়েছে তারুণ্য নির্ভর ‘এ’ দলকে। সিরিজের সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ডাবলিনে। বাংলাদেশ সময় বিকাল পৌনে ৪টায়। সবগুলো ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে বেসরকারি টেলিভিশন মাছরাঙা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর