৪ টাকায় মিলছে দীঘিনালায় জাম্বুরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় জাম্বুরা ফলের উৎপাদন বেড়েছে, দামও কিছুটা কমেছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে চার থেকে আট টাকায় মিলছে একটি জাম্বুরা। ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা দীঘিনালার স্থানীয় বাজার থেকে জাম্বুরা ফল সংগ্রহ করছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে পাহাড়ে উৎপাদিত জাম্বুরার কদর।

গত শনিবার সকালে উপজেলার বড় কাঁচাবাজার বোয়ালখালী নতুন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রচুর পরিমাণ জাম্বুরা ফল বিক্রির জন্য আনা হয়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা আকারভেদে ১০০ জাম্বুরা ৪০০ থেকে ৮০০ টাকায় কিনছেন। বাজারে জাম্বুরা বিক্রি করতে আসা জামতলী এলাকার মঙ্গল ত্রিপুরা বললেন, তিনি তাঁর তিনটি গাছ থেকে সাড়ে তিন শটি জাম্বুরা প্রতিটি পাঁচ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। কাটারুং ডিপি পাড়া এলাকার মলয় বিকাশ চাকমা তাঁর পাঁচটি গাছের সাড়ে ৭০০টি জাম্বুরা প্রতিটি ৪ থেকে ৮ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।
জাম্বুরা বিক্রেতারা জানান, গত বছর ফলের উৎপাদন কম হলেও দামটা ভালো ছিল। গত বছর প্রতিটি জাম্বুরা আকারভেদে বিক্রি হয়েছিল ৭ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত। এ বছর উৎপাদন বেশি তাই দাম কম।
জাম্বুরা ফলের খুচরা ব্যবসায়ী কুসুম বিকাশ ত্রিপুরা ও মো. বাবুল মিয়া জানান, তাঁরা বিভিন্ন গ্রামে গিয়েও গাছ থেকে জাম্বুরা সংগ্রহ করেন। গত বছর গ্রাম থেকে যে জাম্বুরা ছয় টাকায় সংগ্রহ করেছেন, এ বছর একই আকারের জাম্বুরা বাজারে চার থেকে পাঁচ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
জাম্বুরার পাইকারি ব্যবসায়ী ফুতায়ন চাকমা বলেন, ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ি অঞ্চলের জাম্বুরার কদর বেশি। আমি শনিবারে এক ট্রাক জাম্বুরা কিনেছি। প্রতিটি জাম্বুরা পাঁচ থেকে আট টাকা কেনা দর পড়েছে। বিক্রি হবে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। তবে পরিবহন খরচটা একটু বেশি।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছর দীঘিনালায় ৬০ হেক্টর জমিতে জাম্বুরা চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে ৬৮০ মেট্রিক টন। গত বছর একই পরিমাণ জমিতে জাম্বুরা উৎপাদন হয়েছিল ৫৭০ মেট্রিক টন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুপন চাকমা বলেন, জাম্বুরা গাছ রোগাক্রান্ত হয় না বলেই চলে। একেকটি জাম্বুরাগাছে ফলন ভালো হলে ৪০০ থেকে ৫০০টি পর্যন্ত ফলন হয়। ফাল্গুন মাসে জাম্বুরা গাছে ফলের মুকুল আসে। ভাদ্র থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত জাম্বুরার ফলন উত্তোলন করা হয়।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের পরামর্শক পলাশ নাগ বলেন, জাম্বুরার (বাতাবি লেবু) মধ্যে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এ ফল ঠান্ডা, সর্দি-জ্বর, ডায়াবেটিস, মুখের ঘা, পাকস্থলীসহ শরীরের বিভিন্ন রোগের জন্য উপকারী। এ ফল শরীরের শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর এবং পেটের নানা রকম হজমজনিত সমস্যার জন্যও উপকারী।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর