ঢাকা ০৮:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৎস্য ও ডেইরিতে বাড়ছে কর্মসংস্থান

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৩৬:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ অগাস্ট ২০১৫
  • ৪৩৪ বার

অজ পাড়াগাঁয়ের অবহেলিত শ্রমিক দিনমজুর ও শিক্ষিত বেকার নারী-পুরুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে শহিদউল্লাহর হিমাগার, ডেইরি ফার্ম, হ্যাচারি ও মৎস্য প্রকল্প। কুমিল্লার দাউদকান্দি সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে গৌরীপুর-মতলব সড়কের পাশে বিটেশ্বর ইউনিয়নের নোয়াদ্দা গ্রামে তিনি গড়ে তুলেছেন সরকার আইস অ্যান্ড কোল্ডস্টোরেজ। একই সঙ্গে করেছেন ডেইরি ফার্ম, মৎস্য হ্যাচারি এবং মৎস্য প্রকল্প। এসব প্রকল্প তাকে যেমন দিয়েছে আর্থিক সফলতা, তেমনি এলাকার বেকারদের হয়েছে কর্মসংস্থান।

১৯৯৪ সালে শহিদউল্লাহ গড়ে তোলেন সরকার আইস অ্যান্ড কোল্ডস্টোরেজ নামে একটি হিমাগার। এ হিমাগারে কাজ করে বেকারত্ব ঘুচিয়েছেন প্রায় হাজার খানেক মানুষ। ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল এ তিন মাসে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ শ্রমিক কাজ করেন। এছাড়াও বাকি দিনগুলোতে ৭০ থেকে ৮০ মহিলা এবং শতাধিক পুরুষ শ্রমিক কাজ করে আসছেন। হিমাগারটিতে স্থায়ী কর্মচারী রয়েছেন ৫০ জন। রুবি বেগম, আছিয়া, রিনা ও জোহরা আক্তার হিমাগারে আলু পরিচর্যার কাজ করেন দীর্ঘদিন থেকে। তারা বলেন, প্রতিদিন এখানে কাজ করতে আসি, কাজ শেষে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা রোজগার করছি, যা দিয়ে আমাদের পরিবার চলছে। এখানে কোল্ডস্টোরেজ হওয়ায় আমরা কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করার সুযোগ পাচ্ছি।

হিমাগারের পাশেই রয়েছে সরকার ডেইরি ফার্ম। এ ফার্মে রয়েছে প্রায় দুই শতাধিক গরু। এখানে প্রতিদিন ১২ শ্রমিক কাজ করছেন। সরকার মৎস্য প্রকল্পের আওতায় ২০টি পুকুর রয়েছে। এ পুকুরগুলোতে সব প্রজাতির মাছের চাষ করা হয়। এখান থেকে অনেকেই সহজে মাছ কিনতে পারেন। সেখানে ১২ শ্রমিক প্রতিনিয়ত কাজ করছেন। উন্নতমানের মৎস্য হ্যাচারি রয়েছে সেখানে। সায়েন্টেফিক পদ্ধতির মাধ্যমে ডিম সংগ্রহ, ডিম থেকে রেণু পোনা উৎপাদন করা হয় এ হ্যাচারিতে। প্রায় সব ধরনের মাছের রেণু পোনা এখানে পাওয়া যায়। এতে সাধারণ মানুষ ও মাছ চাষিরা সহজেই এখান থেকে রেণু পোনা সংগ্রহ করতে পারেন। হ্যাচারিতে কর্মরত রয়েছেন ৮ শ্রমিক।

শহিদউল্লাহ তার কর্মকা-ে শুধু বেকার শ্রমিকের মুখে হাসি ফোটাননি, হাসি ফুটিয়েছেন অসংখ্য মেধাবী গরিব শিক্ষার্থীদের মাঝেও। সামাজিক কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষা ক্ষেত্রে রয়েছে তার অসামান্য অবদান। দাউদকান্দি, মেঘনা ও তিতাস উপজেলায় ১৯৮০ সাল থেকে শুরু করেন ‘শহিদউল্লাহ বৃত্তি’ নামে একটি শিক্ষা কার্যক্রম।

শহিদউল্লাহ সরকার বলেন, শুধু কঠোর পরিশ্রমই পারে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পেঁৗছাতে। তাই সবার উচিত নিজ নিজ অবস্থানে পরিশ্রমের ফসল ফলানো। আমার প্রতিষ্ঠানে কাজ করে অনেক বেকার যুবক ও মহিলার পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। বিত্তবানদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা গ্রাম এবং গ্রামের মানুষের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মৎস্য ও ডেইরিতে বাড়ছে কর্মসংস্থান

আপডেট টাইম : ০৮:৩৬:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ অগাস্ট ২০১৫

অজ পাড়াগাঁয়ের অবহেলিত শ্রমিক দিনমজুর ও শিক্ষিত বেকার নারী-পুরুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে শহিদউল্লাহর হিমাগার, ডেইরি ফার্ম, হ্যাচারি ও মৎস্য প্রকল্প। কুমিল্লার দাউদকান্দি সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে গৌরীপুর-মতলব সড়কের পাশে বিটেশ্বর ইউনিয়নের নোয়াদ্দা গ্রামে তিনি গড়ে তুলেছেন সরকার আইস অ্যান্ড কোল্ডস্টোরেজ। একই সঙ্গে করেছেন ডেইরি ফার্ম, মৎস্য হ্যাচারি এবং মৎস্য প্রকল্প। এসব প্রকল্প তাকে যেমন দিয়েছে আর্থিক সফলতা, তেমনি এলাকার বেকারদের হয়েছে কর্মসংস্থান।

১৯৯৪ সালে শহিদউল্লাহ গড়ে তোলেন সরকার আইস অ্যান্ড কোল্ডস্টোরেজ নামে একটি হিমাগার। এ হিমাগারে কাজ করে বেকারত্ব ঘুচিয়েছেন প্রায় হাজার খানেক মানুষ। ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও এপ্রিল এ তিন মাসে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ শ্রমিক কাজ করেন। এছাড়াও বাকি দিনগুলোতে ৭০ থেকে ৮০ মহিলা এবং শতাধিক পুরুষ শ্রমিক কাজ করে আসছেন। হিমাগারটিতে স্থায়ী কর্মচারী রয়েছেন ৫০ জন। রুবি বেগম, আছিয়া, রিনা ও জোহরা আক্তার হিমাগারে আলু পরিচর্যার কাজ করেন দীর্ঘদিন থেকে। তারা বলেন, প্রতিদিন এখানে কাজ করতে আসি, কাজ শেষে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা রোজগার করছি, যা দিয়ে আমাদের পরিবার চলছে। এখানে কোল্ডস্টোরেজ হওয়ায় আমরা কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করার সুযোগ পাচ্ছি।

হিমাগারের পাশেই রয়েছে সরকার ডেইরি ফার্ম। এ ফার্মে রয়েছে প্রায় দুই শতাধিক গরু। এখানে প্রতিদিন ১২ শ্রমিক কাজ করছেন। সরকার মৎস্য প্রকল্পের আওতায় ২০টি পুকুর রয়েছে। এ পুকুরগুলোতে সব প্রজাতির মাছের চাষ করা হয়। এখান থেকে অনেকেই সহজে মাছ কিনতে পারেন। সেখানে ১২ শ্রমিক প্রতিনিয়ত কাজ করছেন। উন্নতমানের মৎস্য হ্যাচারি রয়েছে সেখানে। সায়েন্টেফিক পদ্ধতির মাধ্যমে ডিম সংগ্রহ, ডিম থেকে রেণু পোনা উৎপাদন করা হয় এ হ্যাচারিতে। প্রায় সব ধরনের মাছের রেণু পোনা এখানে পাওয়া যায়। এতে সাধারণ মানুষ ও মাছ চাষিরা সহজেই এখান থেকে রেণু পোনা সংগ্রহ করতে পারেন। হ্যাচারিতে কর্মরত রয়েছেন ৮ শ্রমিক।

শহিদউল্লাহ তার কর্মকা-ে শুধু বেকার শ্রমিকের মুখে হাসি ফোটাননি, হাসি ফুটিয়েছেন অসংখ্য মেধাবী গরিব শিক্ষার্থীদের মাঝেও। সামাজিক কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষা ক্ষেত্রে রয়েছে তার অসামান্য অবদান। দাউদকান্দি, মেঘনা ও তিতাস উপজেলায় ১৯৮০ সাল থেকে শুরু করেন ‘শহিদউল্লাহ বৃত্তি’ নামে একটি শিক্ষা কার্যক্রম।

শহিদউল্লাহ সরকার বলেন, শুধু কঠোর পরিশ্রমই পারে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পেঁৗছাতে। তাই সবার উচিত নিজ নিজ অবস্থানে পরিশ্রমের ফসল ফলানো। আমার প্রতিষ্ঠানে কাজ করে অনেক বেকার যুবক ও মহিলার পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। বিত্তবানদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা গ্রাম এবং গ্রামের মানুষের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন