নিজাম (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণা মোহনগঞ্জের এক কলেজ শিক্ষক কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই ভারত ভ্রমণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ছুটি মঞ্জুর না হলেও ১৮ দিন ভারত ভ্রমণ করে দেশে ফিরেছেন শিক্ষক অখিল কুমার সরকার। তিনি মোহনগঞ্জ মহিলা কলেজে ইংরেজি বিভাগে কর্মরত রয়েছেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী ১৫ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নেওয়ার নিয়ম নেই। এছাড়া নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করারও নিয়ম নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিয়মানুযায়ী এমপিওভুক্ত কলেজের কোনো শিক্ষক বিদেশে যেতে হলে তাঁর আবেদনটি কলেজের গভর্নিং বডির সভার মাধ্যমে রেজুলেশন আকারে অনুমোদিত হতে হয়। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে চিঠি দিয়ে অবহিত করতে হয়। কিন্তু শিক্ষক অখিল কুমার সরকার গত ১২ অক্টোবর ১৫ দিনের নৈমিত্তিক ছুটির জন্য কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর আবেদন করেন। আবেদন করেই তিনি ভারতে চলে যান। ১৫ দিনের আবেদন করলেও ১৮ দিন পরে ভারত ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে কলেজে যোগদান করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত শিক্ষক অখিল কুমার সরকারের ছুটি মঞ্জুর করেনি গভর্নিং বডি। এছাড়াও শিক্ষক অখিল কুমারের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া বছরে কয়েকবার ভারতে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ভারতে তাঁর বাড়ি ঘর রয়েছে বলেও অভিযোগ আছে।
শিক্ষক অখিল কুমার সরকার জানান, ভারতে আমার মা ভীষণ অসুস্থ থাকায় পুজার ছুটিতে দেখতে গিয়েছিলাম। তাড়াহুড়ো ভুলে আবেদনে নৈমিত্তিক ছুটির কথা লিখে ফেলেছি। নতুন একটা প্রজ্ঞাপণ অনুযায়ী অধ্যক্ষই বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিতে পারেন। এটা কোন সমস্যা না। মায়ের অসুখ বেশি থাকায় ১৫ দিনের জায়গায় ১৮ দিন পরে এসেছি।
এ বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অখিল সরকারের ছুটির আবেদন দেখান। আবেদনে দেখা গেছে, বিশেষ প্রয়োজনে ভারতে যাওয়ার জন্য অধ্যক্ষ বরাবর ১৫ দিনের নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন করেন অখিল সরকার। আবেদনপত্রে অধ্যক্ষের একটি স্বাক্ষর থাকলেও এতে কোন অনুমোদন বা সিল নেই। ছাড়পত্র ও গভর্নির বডির অনুমোদন বা রেজুলেশনের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি।
অধ্যক্ষ মো. মুখলেছুর রহমান আকন্দ জানান, কোনো শিক্ষক বিদেশ যেতে হলে সেই ছুটি দেওয়ার এখতিয়ার অধ্যক্ষের রয়েছে। তাই তিনি নিজ ক্ষমতাবলে ওই শিক্ষককে ছুটি দিয়েছেন। পরে সেটি গভর্নিং বডির সভায় অনুমোদন করে নিবেন। বিদেশ ভ্রমণের আলাদা কোন ছুটি নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে তিনি দাবি করেন।
এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ মহিলা কলেজের গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজওয়ানা কবির বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। কোন শিক্ষক আমার কাছ থেকে বিদেশ যাওয়ার ছুটি নেননি।
কলেজের গভর্নিং বডির সদ্য মনোনিত সভাপতি গোলাম রাব্বানী পুতুল বলেন, এ বিষয়ে কেউ কিছু আমাকে জানায়নি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাইদ জানান, এমপিওভুক্ত কলেজের কোন শিক্ষক বিদেশে যাওয়ার অনুমতি অধ্যক্ষ দিতে পারেন না। আবেদনটি গভর্নিং বডির সভায় অনুমোদন করে রেজুলেশন আকারে অনুমোদন দিতে হবে। আর নৈমিত্তিক ছুটিতে বিদেশ যাওয়ার নিয়ম নেই।