ঢাকা ০১:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তেঁতুলের ৬টি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৪:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৭
  • ৩৪৮ বার

টক-মিষ্টি স্বাদের তেঁতুল এর কথা মনে হলেই জিভে জল চলে আসে অনেকের। বিভিন্ন খাবারের সাথে খাওয়া হয় তেঁতুল। অন্যদিকে এর পুষ্টিগুণ এবং নিরাময় ক্ষমতাও প্রচুর। কিন্তু তেঁতুলের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। আজকে আমরা সেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলোর বিষয়েই জানবো।

১। রক্তপাত বৃদ্ধি করে নির্দিষ্ট ঔষধের ক্ষেত্রে

তেঁতুল রক্তপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে এবং মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে যদি নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের সাথে গ্রহণ করা হয়। এ ধরনের ঔষধগুলো হচ্ছে –

· অ্যাসপিরিন,

· ইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সিন এর মত নন-স্টেরয়ডাল অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ড্রাগ (NSAIDs),

· রক্ত পাতলা করার ঔষধ (হেপারিন, ওয়ারফেরিন ইত্যাদি )

· অ্যান্টি-প্লাটিলেট ড্রাগ (ক্লপিডোগ্রেল)

যদি আপনি এই ঔষধগুলো গ্রহণের সময় তেঁতুল খান তাহলে শরীরে এদের শোষণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে এরা শরীরে অনেক বেশি কাজ করা শুরু করে বলে ক্রমান্বয়ে অধিক রক্তপাত শুরু হয়।

২। হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে

পারে

নিয়মিত অনেক বেশি পরিমাণে তেঁতুল খেলে রক্তের সিরাম গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায় বলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়। পুষ্টিবিদেরা প্রতিদিন ১০ গ্রাম তেঁতুল গ্রহণের পরামর্শ দেন যা নিয়মিত খাদ্যগ্রহণের ০.৮ %। এর চেয়ে বেশি গ্রহণ করলে শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা যারা রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর ঔষধ গ্রহণ করছেন তারা তেঁতুল খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।

৩। অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে

তেঁতুলের একটি সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে অ্যালার্জি বা অতিসংবেদনশীলতা। অনেক মানুষের মধ্যেই এই ফলটির উপাদানের প্রতি সংবেদনশীল হতে দেখা যায়। এ কারণে তাদের মধ্যে র‍্যাশ, চুলকানি, ইনফ্লামেশন, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি হওয়া বা শ্বাসকষ্ট হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।

৪। দাঁতের এনামেল নষ্ট করে

তেঁতুল উচ্চ মাত্রার এসিডিক প্রকৃতির। তাই নিয়মিত তেঁতুল খেলে আপনার দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই বলা যায় যে অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য যেমন খারাপ তেমনি আপনার দাঁতের জন্য ও খারাপ।

৫। পিত্তপাথর গঠনে সাহায্য করে

কয়েকজন ভারতীয় গবেষক প্রমাণ করেছেন যে, ঘন ঘন প্রচুর পরিমাণে তেঁতুল খাওয়া পিত্তপাথর হতে সাহায্য করে। এর ফলে জন্ডিস, তীব্র জ্বর, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, পরিপাকের সমস্যা এবং লিভারের সমস্যা হতে পারে।

৬। এসিড রিফ্লাক্স বৃদ্ধি করে

যেহেতু তেঁতুল এসিডিক খাবার তাই এটি বেশি খেলে আমাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল নালীতে বিশেষ করে পাকস্থলীতে এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই যদি আপনি এসিড রিফ্লাক্সের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনার তেঁতুল খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিৎ।

এছাড়াও যদি আপনি রক্তনালীর সংকোচনের ঔষধ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে আপনি তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরিত থাকুন। এই ফলটি রক্তনালীকে আরো সরু করে দিবে। ফলে রক্তপ্রবাহ কম হবে এবং রক্তনালী পুরোপুরি বন্ধও হয়ে যেতে পারে। নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকের সাথে প্রতিক্রিয়া দেখায় তেঁতুল। যেহেতু ল্যাক্সেটিভ হিসেবে কাজ করে তেঁতুল তাই আপনি যদি ইতিমধ্যেই লেক্সেটিভ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে তেঁতুল গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে আপনাকে।-স্টাইলক্রেজ/প্রিয়.কম

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

তেঁতুলের ৬টি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

আপডেট টাইম : ১১:৪৪:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৭

টক-মিষ্টি স্বাদের তেঁতুল এর কথা মনে হলেই জিভে জল চলে আসে অনেকের। বিভিন্ন খাবারের সাথে খাওয়া হয় তেঁতুল। অন্যদিকে এর পুষ্টিগুণ এবং নিরাময় ক্ষমতাও প্রচুর। কিন্তু তেঁতুলের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। আজকে আমরা সেই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলোর বিষয়েই জানবো।

১। রক্তপাত বৃদ্ধি করে নির্দিষ্ট ঔষধের ক্ষেত্রে

তেঁতুল রক্তপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে এবং মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে যদি নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের সাথে গ্রহণ করা হয়। এ ধরনের ঔষধগুলো হচ্ছে –

· অ্যাসপিরিন,

· ইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সিন এর মত নন-স্টেরয়ডাল অ্যান্টিইনফ্লামেটরি ড্রাগ (NSAIDs),

· রক্ত পাতলা করার ঔষধ (হেপারিন, ওয়ারফেরিন ইত্যাদি )

· অ্যান্টি-প্লাটিলেট ড্রাগ (ক্লপিডোগ্রেল)

যদি আপনি এই ঔষধগুলো গ্রহণের সময় তেঁতুল খান তাহলে শরীরে এদের শোষণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে এরা শরীরে অনেক বেশি কাজ করা শুরু করে বলে ক্রমান্বয়ে অধিক রক্তপাত শুরু হয়।

২। হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে

পারে

নিয়মিত অনেক বেশি পরিমাণে তেঁতুল খেলে রক্তের সিরাম গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায় বলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়। পুষ্টিবিদেরা প্রতিদিন ১০ গ্রাম তেঁতুল গ্রহণের পরামর্শ দেন যা নিয়মিত খাদ্যগ্রহণের ০.৮ %। এর চেয়ে বেশি গ্রহণ করলে শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা যারা রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর ঔষধ গ্রহণ করছেন তারা তেঁতুল খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।

৩। অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে

তেঁতুলের একটি সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে অ্যালার্জি বা অতিসংবেদনশীলতা। অনেক মানুষের মধ্যেই এই ফলটির উপাদানের প্রতি সংবেদনশীল হতে দেখা যায়। এ কারণে তাদের মধ্যে র‍্যাশ, চুলকানি, ইনফ্লামেশন, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি হওয়া বা শ্বাসকষ্ট হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।

৪। দাঁতের এনামেল নষ্ট করে

তেঁতুল উচ্চ মাত্রার এসিডিক প্রকৃতির। তাই নিয়মিত তেঁতুল খেলে আপনার দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই বলা যায় যে অতিরিক্ত তেঁতুল খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য যেমন খারাপ তেমনি আপনার দাঁতের জন্য ও খারাপ।

৫। পিত্তপাথর গঠনে সাহায্য করে

কয়েকজন ভারতীয় গবেষক প্রমাণ করেছেন যে, ঘন ঘন প্রচুর পরিমাণে তেঁতুল খাওয়া পিত্তপাথর হতে সাহায্য করে। এর ফলে জন্ডিস, তীব্র জ্বর, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, পরিপাকের সমস্যা এবং লিভারের সমস্যা হতে পারে।

৬। এসিড রিফ্লাক্স বৃদ্ধি করে

যেহেতু তেঁতুল এসিডিক খাবার তাই এটি বেশি খেলে আমাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল নালীতে বিশেষ করে পাকস্থলীতে এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই যদি আপনি এসিড রিফ্লাক্সের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনার তেঁতুল খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিৎ।

এছাড়াও যদি আপনি রক্তনালীর সংকোচনের ঔষধ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে আপনি তেঁতুল খাওয়া থেকে বিরিত থাকুন। এই ফলটি রক্তনালীকে আরো সরু করে দিবে। ফলে রক্তপ্রবাহ কম হবে এবং রক্তনালী পুরোপুরি বন্ধও হয়ে যেতে পারে। নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকের সাথে প্রতিক্রিয়া দেখায় তেঁতুল। যেহেতু ল্যাক্সেটিভ হিসেবে কাজ করে তেঁতুল তাই আপনি যদি ইতিমধ্যেই লেক্সেটিভ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে তেঁতুল গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে আপনাকে।-স্টাইলক্রেজ/প্রিয়.কম