ঢাকা ১০:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আসছে আরও এক নতুন শিক্ষাক্রম, আগামী বছর থেকে চালু

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫২:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
  • ১২ বার

আগামী বছর থেকে আবারও নতুন আরেকটি শিক্ষাক্রম চালু করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন এ শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতালব্ধ, জ্ঞাননির্ভর ও বাস্তবসম্মত পাঠদান করানো হবে। তবে কী পদ্ধতিতে পাঠদান বা মূল্যায়ন করা হবে, সে ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথমে এটি চালু হবে। পরে সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। গত ২৫ জুন এ নিয়ে এনসিটিবিতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়নের বিষয়টি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে বা কোন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে- তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

নতুন কারিকুলাম তৈরি নিয়ে নানান অ্যাসেসমেন্ট চলমান। চলতি মাসে কারিকুলাম বিষয়ে কর্মশালা হওয়ার কথা ছিল। সেটি পিছিয়ে আগামী জুলাইয়ে করা হবে বলেও জানান এনসিটিবি কর্মকর্তারা।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব সাহতাব উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রম যাচাই-বাছাই করে নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হবে ২০২৭ সাল থেকেই। প্রথমে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও পরে ক্রমে অন্য শ্রেণিতে এ শিক্ষাক্রম চালু করা হবে।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাতবার শিক্ষাক্রম বা শিক্ষাপদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে সরকার। প্রথম পাঁচবার শিক্ষাক্রমের মূল থিম ঠিক রেখে ৫ থেকে ১০ শতাংশ পরিবর্তন করা হয়েছিল। তবে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়। সেবারের শিক্ষাক্রমটি ‘সৃজনশীল পদ্ধতি’ নামে পরিচিত। এ পদ্ধতি প্রণয়নের ৯ বছরের মাথায় ২০২১ সালে আবারও নতুন একটি শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন করা হয়।

সেই রূপরেখা অনুযায়ী- ২০২৩ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তখন বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীদের মুখস্থ নির্ভরতা কমিয়ে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শিখনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এ শিক্ষাক্রম। বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে হাতে-কলমে শেখানো হবে।

অভিভাবকরা সেই শিক্ষাক্রম স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করতে পারেননি। তাদের অভিযোগ ছিল, এমন শিক্ষাক্রমের কারণে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। শিক্ষাক্রম বাতিলে টানা আন্দোলনও হয়।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতন হলে একই মাসের শেষ দিকে বাতিল করা হয় সেই শিক্ষাক্রম। ফিরিয়ে আনা হয় ২০১২ সালে প্রণীত আলোচিত সৃজনশীল শিক্ষাক্রম।

এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৩ সালের শিক্ষাক্রম নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কিছু বিষয় ছিল, যা ছিল সময়োপযোগী। নতুন যে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে সেখানে ২০২৩ ও ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের অনেক বিষয় থাকবে। ২০২৭ সালে চালু হওয়া শিক্ষাক্রম কেমন হবে, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত রাজনৈতিক সরকারের প্রত্যাশার ওপর।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আসছে আরও এক নতুন শিক্ষাক্রম, আগামী বছর থেকে চালু

আপডেট টাইম : ১১:৫২:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

আগামী বছর থেকে আবারও নতুন আরেকটি শিক্ষাক্রম চালু করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন এ শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতালব্ধ, জ্ঞাননির্ভর ও বাস্তবসম্মত পাঠদান করানো হবে। তবে কী পদ্ধতিতে পাঠদান বা মূল্যায়ন করা হবে, সে ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথমে এটি চালু হবে। পরে সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। গত ২৫ জুন এ নিয়ে এনসিটিবিতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়নের বিষয়টি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে বা কোন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে- তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

নতুন কারিকুলাম তৈরি নিয়ে নানান অ্যাসেসমেন্ট চলমান। চলতি মাসে কারিকুলাম বিষয়ে কর্মশালা হওয়ার কথা ছিল। সেটি পিছিয়ে আগামী জুলাইয়ে করা হবে বলেও জানান এনসিটিবি কর্মকর্তারা।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব সাহতাব উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রম যাচাই-বাছাই করে নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হবে ২০২৭ সাল থেকেই। প্রথমে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও পরে ক্রমে অন্য শ্রেণিতে এ শিক্ষাক্রম চালু করা হবে।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাতবার শিক্ষাক্রম বা শিক্ষাপদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে সরকার। প্রথম পাঁচবার শিক্ষাক্রমের মূল থিম ঠিক রেখে ৫ থেকে ১০ শতাংশ পরিবর্তন করা হয়েছিল। তবে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়। সেবারের শিক্ষাক্রমটি ‘সৃজনশীল পদ্ধতি’ নামে পরিচিত। এ পদ্ধতি প্রণয়নের ৯ বছরের মাথায় ২০২১ সালে আবারও নতুন একটি শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন করা হয়।

সেই রূপরেখা অনুযায়ী- ২০২৩ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তখন বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীদের মুখস্থ নির্ভরতা কমিয়ে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শিখনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এ শিক্ষাক্রম। বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে হাতে-কলমে শেখানো হবে।

অভিভাবকরা সেই শিক্ষাক্রম স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করতে পারেননি। তাদের অভিযোগ ছিল, এমন শিক্ষাক্রমের কারণে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। শিক্ষাক্রম বাতিলে টানা আন্দোলনও হয়।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতন হলে একই মাসের শেষ দিকে বাতিল করা হয় সেই শিক্ষাক্রম। ফিরিয়ে আনা হয় ২০১২ সালে প্রণীত আলোচিত সৃজনশীল শিক্ষাক্রম।

এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৩ সালের শিক্ষাক্রম নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কিছু বিষয় ছিল, যা ছিল সময়োপযোগী। নতুন যে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে সেখানে ২০২৩ ও ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের অনেক বিষয় থাকবে। ২০২৭ সালে চালু হওয়া শিক্ষাক্রম কেমন হবে, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত রাজনৈতিক সরকারের প্রত্যাশার ওপর।