দেশের সর্ব উত্তরের শীত প্রবণ হিমালয়কন্যা খ্যাত সীমান্ত জেলা পঞ্চগড়ে শীত মৌসুমে পৌষের শুরুতেই শীত জেঁকে বসেছে। গত শুক্রবার থেকে টানা ৬ দিন ধরে এ জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে । এর মধ্যে গত দুই দিন দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া হিম শীতল বাতাসে শীত জেঁকে বসায় কাবু হয়ে পড়েছে এই জনপদের মানুষ। বিশেষ করে খেটে খাওয়া চা, পাথর শ্রমিক, দিনমজুর ও অন্যান্য কর্মজীবি মানুষেরা বেশী বিপাকে পড়েছেন। তীব্র শীতে কাজে যেতে না পারায় দুর্ভোগে পড়েছে তারা।
বেড়েছে শীতজনিত রোগী ব্যাধি ।বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা জ্বর, শর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে জেলার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।
এদিকে শীতবস্ত্রের অভাবে দরিদ্র শীতার্ত মানুষগুলো কষ্ট পাচ্ছেন। গ্রামীণ জনপদে অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। শীতে গৃহপালিত পশুগুলোর অবস্থাও জবুথবু। দিনের বেলা কুয়াশার দাপট কমে আসলেও বিকেল থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা পড়ে সমগ্র এলাকা। দিনের বেলা সুর্যের দেখা মিললেও হিমালয় পাহাড় থেকে বয়ে আসা হিমশীতল বাতাসে বেশ শীত অনুভুত হচ্ছে।
শীত-কষ্ট লাঘবে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের উদ্যোগে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। এ প্রসঙ্গে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী জানান, সরকারি ভাবে ইতোমধ্যে ৩ হাজার শীর্তাত মানুষের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আরও শীতবস্ত্রের বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের শীতবস্ত্র ক্রয়ের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। তিনি শীতার্ত মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।
এদিকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভাবপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, আজ বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়ে সকাল ৯ টায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগে গতকাল বুধবার সকাল ৯ টায় পঞ্চগড়ে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গত মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় পঞ্চগড়ে ৯ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত সোমবার ( ১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। গত ৬ দিন ধরে এ জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। গত শুক্রবার থেকে বুধবার পর্যন্ত পঞ্চগড় জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। ডিসেম্বরের শেষ দিকে এবং জানুয়ারিতে তাপমাত্রা আরো কমে যাবে এবং পঞ্চগড় জেলার উপর দিয়ে একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন। ২০ ডিসেম্বর থেকে এই এলাকার আকাশে মেঘ জমতে পারে বলে তিনি জানান। তবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল দশটার পরে ঝলমলে রোদ উঠেছে।