ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবর্তন এসেছে। নতুন এ পরিস্থিতিতে দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন অনেক উজ্জীবিত। জাতীয় নির্বাচনের জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তারা কোনো ডেডলাইন দেননি। তবে সরকারের দায়িত্ব তারা কবে নির্বাচনের ডেডলাইন বা রোডম্যাপ দেবেন। অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে। তিনি আশাবাদী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বললে কী সংস্কারের প্রয়োজন, সেগুলো আসবে। এর ভিত্তিতে সংস্কার এবং নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ তৈরি হবে। তবে নির্বাচনব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা, সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও বিচার বিভাগ-এ চারটি বিষয়ে ন্যূনতম যে সংস্কার, সেটি হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে তিনি মনে করেন।
বিএনপি নির্বাচনের জন্য সব সময় প্রস্তুত জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে একটা সংস্কারের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করাই আমাদের এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। তিনি জানান, এ সরকার যেন এক-এগারোর সরকারে পরিণত না হয়, সেজন্য কিছুটা আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া তাদের দায়িত্ব বলে মনে করেন। সেটা তারা দিয়েছেন। সরকারি কর্মকর্তা যারা মূলত এ সরকারকে পরিচালনা করেন, সেখানে যদি এক-এগারোর কোনো লোক থাকে, তাহলে তাদের সরিয়ে নতুন লোক নিয়ে আসাই বাঞ্ছনীয় হবে। জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের সঙ্গে যে রাজনৈতিক সম্পর্ক, সেটাই থাকবে। তবে বিএনপির সঙ্গে যে জোট ছিল, আন্দোলনের জন্য জোট, সেটা অনেক আগেই অকার্যকর হয়ে গেছে।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানী গুলশানের বাসায় যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। দেশের চলমান পরিস্থিতি, জাতীয় নির্বাচন, রাষ্ট্র সংস্কার, সরকারের সঙ্গে সংলাপ, চীন-ভারত-আমেরিকার সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক, জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার, ভারতে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রসঙ্গ, সংখ্যালঘু নির্যাতন-দখলসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব।
যুগান্তর : ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রায় ১৬ বছর রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা, নানা নির্যাতন-গুম-খুন, মামলা-হামলা চলেছে। এবার মুক্ত পরিবেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
মির্জা ফখরুল : বন্যার কারণে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি আমরা সীমিত করেছি। এ সংক্রান্ত টাকা বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে। এবার একটু ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হবে। কারণ, ১৬ বছর যে নির্যাতন করা হয়েছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের ওপর হয়েছে কি না, জানা নেই। সুতরাং এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আমাদের কাছে একটা নতুন স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। ফ্যাসিবাদমুক্ত হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে। তাদের কাছে আশা করছি একটা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করবে। গণতন্ত্রকে একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে। আমরাও সেখানে সহযোগিতা করছি। আমাদের উদ্দেশ্য এখানে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তৈরি করা। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করব। দলকে আমরা সেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
যুগান্তর : ৫ আগস্টের পর বিদেশিসহ সব মহলে বিএনপির গুরুত্ব বেড়েছে বলে মনে হয়।
মির্জা ফখরুল : বিএনপি একটা বিশাল দল। সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। বিএনপি অতীতে ক্ষমতায় ছিল। সুতরাং নির্বাচন যখন আসবে, তখন বিএনপির গুরুত্ব তো অবশ্যই বাড়বে।
যুগান্তর : চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, আপনিসহ লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অসংখ্য রাজনৈতিক মামলা রয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহার বা নিষ্পত্তির বিষয়ে বর্তমান সরকারের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস পেয়েছেন কি না?
মির্জা ফখরুল : আমরা এ মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি। অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা এ কেসগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে সরকারকে দিচ্ছি। পাশাপাশি বর্তমান লিগ্যাল সিস্টেমে মুভ করছি। অলরেডি আমাদের দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মীর জামিন হয়েছে। তবে কেস উইথড্র হয়নি। কতগুলো আইনগত পদ্ধতি আছে, সেই ব্যাপারে ব্যবস্থা নিয়ে মামলাগুলো প্রত্যাহার করবে বলে আশা করি।
যুগান্তর : সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমরা তো এক-এগারোর কথা ভুলে যাইনি। আপনি কি এ সরকারের মধ্যে ১/১১-এর ছায়া দেখতে পাচ্ছেন?
মির্জা ফখরুল : না। এক-এগারোতে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তা সবার নিশ্চয়ই মনে আছে। এ সরকার যেন এক-এগারোর সরকারে পরিণত না হয়, সেজন্য কিছুটা আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি। সেটা আমরা দিয়েছি। সরকারি কর্মকর্তা যারা মূলত এ সরকারকে পরিচালনা করেন, সেখানে যদি এক-এগারোর কোনো লোক থাকে, তাদের সরিয়ে নতুন লোক নিয়ে আসাই বাঞ্ছনীয় হবে বলে মনে করি।
যুগান্তর : রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রোডম্যাপের কথা বলেছেন, এ ইস্যুতে সংলাপ জরুরি কেন মনে করছেন।
মির্জা ফখরুল : অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে। এ বিষয়ে আমি আশাবাদী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বললে মূল সমস্যাগুলো আসবে। সরকারের কী সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলো আসবে। এর ভিত্তিতে সংস্কারের একটি রোডম্যাপ তৈরি হবে। নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি হবে।
যুগান্তর : আপনার কি মনে হচ্ছে বর্তমান সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড়াই সংস্কার করবে?
মির্জা ফখরুল : আমরা এগুলো কিছু মনে করি না। আমরা মনে করি, এ সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মতামত নেবে। অন্যান্য যে স্টেকহোল্ডার আছে যেমন : বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যারা নির্বাচন, গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করে, মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে; তাদের সঙ্গে কথা বলে সংস্কার করবে, যা জনগণ চায়। একসঙ্গে তো সবকিছু হবে না। নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রধান যে বিষয়গুলোয় গুরুত্ব দিতে চাই, তা হলো নির্বাচনব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা, সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং বিচার বিভাগ-এ চারটি বিষয়ে ন্যূনতম যে সংস্কার, সেটি হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সরকার এসব নিয়ে কাজ করছে।
যুগান্তর : আপনারা বলছেন, ফ্যাসিবাদ সরকারের সঙ্গে জড়িত প্রশাসনের কর্মকর্তারা এখনো বহাল আছে। দ্রুত অপসারণের কথা বলেছেন। সরকার তা কি করছে?
মির্জা ফখরুল : অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। অনেকেই নতুন আসছে। সময় দিতেই হবে।
যুগান্তর : গুম-খুন এবং ছাত্র-জনতা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশের বেশ কয়েকজন বড় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের আটক করা হয়নি বলে নেতারা অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
মির্জা ফখরুল : আমি মনে করি, হয়তোবা তাদের পায়নি, তারা পালিয়ে আছে।
যুগান্তর : জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে কি কোনো ডেডলাইন থাকবে?
মির্জা ফথরুল : না। আমরা কোনো ডেডলাইন দিইনি।
যুগান্তর : এক বছরের মধ্যেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ডেডলাইন না দিলে বিএনপি কী করবে?
মির্জা ফখরুল : সরকারের দায়িত্ব তারা কবে নির্বাচনের ডেডলাইন বা রোডম্যাপ দেবে। এটা বর্তমান সরকারকেই করতে হবে। সেটা তখন দেখব।
যুগান্তর : জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের আদেশ বাতিল করেছে, নিবন্ধনও ফিরে পেতে পারে। আপনাদের সঙ্গে জোট ছিল এবং দীর্ঘদিন দলটির সঙ্গে একটা দূরত্ব বজায় রেখেছেন। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক এখন কোন পর্যায়ে আছে।
মির্জা ফখরুল : আমাদের সঙ্গে যে রাজনৈতিক সম্পর্ক, সেটাই থাকবে। তারা একটা রাজনৈতিক দল, আমরা একটা রাজনৈতিক দল। তারা রাজনীতি করুক, এটা আমরা অবশ্যই চাই। জামায়াতকে যখন নিষিদ্ধ করে, তার বিরুদ্ধেও আমরা ছিলাম। আমাদের যে জোট ছিল, আন্দোলনের জন্য জোট, সেটা অনেক আগেই অকার্যকর হয়ে গেছে। এটা এখন কোনো কাজ করে না। অনেক আগেই আমরা যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে প্রোগ্রাম ঠিক করে যুগপৎ আন্দোলন করেছি সরকার পতন অবধি। এটা এখন বলবৎ নেই। তবে অন্য দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। কারণ, এখনো অন্তর্বর্তী সরকার আছে। এরপর নির্বাচন আছে। সুতরাং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা বজায় রাখছি, এটা জরুরি। এ মুহূর্তে আমাদের কোনো জোট নেই। আমরা জোটবদ্ধ নই।
যুগান্তর : বিএনপি এ মুহূর্তে নির্বাচন করতে প্রস্তুত কি না?
মির্জা ফখরুল : আমরা নির্বাচন করতে সব সময়ই প্রস্তুত। আমাদের দল অনেক বড় দল। আমরা নির্বাচনের জন্য সব সময়ই প্রস্তুত থাকি।
যুগান্তর : ভারতে পালিয়ে গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখান থেকে নানা ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ আপনাদের। এ বিষয়ে ভারত সরকারের কাছে প্রত্যাশা কী?
মির্জা ফখরুল : শেখ হাসিনা ক্রিমিনাল মামলায় অভিযুক্ত। হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত। সুতরাং আমাদের প্রত্যাশা-তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিয়ে বিচারের সম্মুখীন করার সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত।
যুগান্তর : অনেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছে। এ ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কী?
মির্জা ফখরুল : আমি কখনোই কোনো রাজনৈতিক দলের নিষিদ্ধের পক্ষে নই। আমার দলও সেটা বিশ্বাস করে না। আমাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের শুরু করেছেন। আগে তো আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন শুরু করেছিল। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র শুরু করেছেন। সুতরাং কোনো দলের নিষিদ্ধের বিষয়টি আমরা সমর্থন করি না।
যুগান্তর : আপনাদের পররাষ্ট্রনীতি কেমন হবে? চীন, ভারত, আমেরিকার সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক কেমন হবে ভবিষ্যতে?
মির্জা ফখরুল : আমরা সবার বন্ধুত্ব চাই। আমরা পার্টিকুলার কোনো দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই না। কোনো দেশ বাংলাদেশের পার্টিকুলার কোনো দলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলুক, এটাও আমরা চাই না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, অন্য দেশ এখানকার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে পারস্পরিক স্বার্থ বিবেচনা করে। আমাদের সার্বভৌমত্ব সম্মান করে সম্পর্ক হবে।
যুগান্তর : প্রথমদিকে সংখ্যালঘু নির্যাতনে প্রচার চালিয়েছিল, এখন দখলদারি। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?
মির্জা ফখরুল : সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা সঠিক নয়। এটা ছিল একটা রাজনৈতিক সমস্যা। সেটাকে অনেকেই তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য প্রচার করেছে। কিন্তু তা টেকেনি। ঠিক একইভাবে দখলদারি, এটা কিছু কিছু জায়গায় ঘটছে। আমাদের দলের যদি কেউ এটা করে থাকে, আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তবে বেশির ভাগ দুর্বৃত্তরাই অপকর্ম করে বিএনপির ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। স্পষ্ট করে বলেছি, আমরা কোনো দুর্বৃত্তপনা বা অপরাধ বরদাশত করব না।
যুগান্তর : এ মুহূর্তে বিএনপির প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো কী?
মির্জা ফখরুল : প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দেশে একটা সংস্কারের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে যাওয়া। এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করা।
যুগান্তর : ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে নাগাদ দেশে ফিরতে পারেন?
মির্জা ফখরুল : তারেক রহমানকে তো আমরা দেশে ফিরিয়ে আনতেই চাই। তিনি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দ্বিতীয়ত, ওনার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো হয়েছে, আমরা মনে করি এবং বিশ্বাস করি, সেগুলোর আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। পুরোপুরি বানোয়াট, প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে মামলাগুলো করা হয়েছে। তার ফিরে আসা দেশের জন্য, দলের জন্য খুব প্রয়োজন।
যুগান্তর : চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর কথা আপনারা বারবার বলেছেন। এখন তিনি মুক্ত, এ বিষয়ে দলের এখনকার চিন্তাভাবনা কী?
মির্জা ফখরুল : আমরা চেয়ারপারসনকে বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে কাজ করছি। ওনার মেডিকেল বোর্ড কাজ করছে। একদিনে বললেই তো চলে যাওয়া যায় না। তার যে শারীরিক অবস্থা, তাতে তিনি ফ্লাই করতে পারবেন কি না, কোন দেশে যাবেন, সেটাও এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি। চেষ্টা হচ্ছে কত দ্রুত তাকে বিদেশে নেওয়া যায়। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে তার শারীরিক অবস্থার ওপর।
যুগান্তর : বর্তমান পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীদের প্রতি দলের কোনো নির্দেশনা আছে কি না?
মির্জা ফখরুল : নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলব, এখন বেশি সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপির যে দুঃসময় গেছে, সেই দুঃসময়ে যেন আবার ফিরে যেতে না হয়। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার যে সুযোগ এসেছে, তা পুরোপুরি যেন কাজে লাগাতে পারি। দেশি-বিদেশি কোনো চক্রান্তে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যে বিপ্লব অর্জন হয়েছে, যেটা যেন নস্যাৎ না হয়। এর জন্য এখন আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
যুগান্তর : সময় দেওয়ার জন্য যুগান্তরের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
মির্জা ফখরুল : আপনাকে এবং যুগান্তরের সব পাঠককে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ।