জাপানে প্রথম কোভিড-১৯ সংক্রমণের পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে গত বছরের মার্চ পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় ৭ কোটি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। গত আগস্ট পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) কায়োদু নিউজের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আনাদােলু এজেন্সি।
২০২২ সালে অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সময় মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ হলেও, এরপর থেকে বার্ষিক মৃত্যুহার কমে যায়। তবে, সাধারণ ভাইরাসের তুলনায় এখনও কোভিড-১৯ এর কারণে মৃত্যু অনেক বেশি এবং ভাইরাসটি গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ঋতুতে ঋতুভিত্তিকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগের অধ্যাপক ইউকি ফুরুসে বলেন, জাপানের জনসংখ্যার বড় একটি অংশ সংক্রমিত হবে বলে আশা করা হয়েছিল, তবে কার্যকর ভ্যাকসিনের দ্রুত উন্নয়ন এবং অন্যান্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সংক্রমণের তীব্রতা কমাতে সাহায্য করেছে।
তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ সমাজের উপর একটি বোঝা হয়ে থাকবে। এই বোঝা কমানোর প্রচেষ্টা, যার মধ্যে মৌলিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত। এটি ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখতে হবে।
গত বছরের মার্চ মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জাপানের ৪৭টি প্রিফেকচারের মধ্যে ২২টিতে রক্ত পরীক্ষা চালিয়ে দেখতে পেয়েছে, ৬০.৭ শতাংশ মানুষের শরীরে আগের করোনাভাইরাস সংক্রমণের অ্যান্টিবডি ছিল। এছাড়া ১২ কোটি জনসংখ্যার উপর ভিত্তি করে অনুমান করা যায়, অন্তত ৭ কোটি ৩০ লাখ মানুষ একবার হলেও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়।
২০২০ থেকে আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত জাপানে কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার মানুষ মারা গেছে। একই সময়ে সাধারণ ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৩,৬০০ বলে জানিয়েছে পরিসংখ্যান।
২০২৩ সালের মে মাসে কোভিড-১৯ কে সাধারণ ভাইরাসের সমান শ্রেণিতে নামানোর পর, সরকার প্রতিদিনের নতুন সংক্রমণের সংখ্যা প্রকাশ বন্ধ করে দেয়। সরকার কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য ওষুধের ভর্তুকি ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেয়। ফলে সন্দেহজনক সংক্রমণের ক্ষেত্রে অনেকেই চিকিৎসকের কাছে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন, যা ভাইরাসের বিস্তারের সঠিক মূল্যায়ন কঠিন করে তুলেছে।
যদিও জাপানের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত মৃত্যুহার অনেক উন্নত দেশের তুলনায় কম, তবে মহামারির প্রভাব ব্যাপক ছিল। এটি জন্মহার হ্রাস এবং আত্মহত্যার সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এখনও কিছু হাসপাতালে দর্শনার্থীদের প্রবেশে এখনও কঠোর বিধিনিষেধ বজায় রয়েছে।