আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রেসিডেন্ট নাওয়াফ সালামকে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন। গতকাল সোমবার তাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত করা হয়।রয়টার্স, সিএনএনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউনের কার্যালয় গতকাল সোমবার নাওয়াফ সালামকে সরকার গঠন করতে বলে। এর আগে জোসেফ আউনের সঙ্গে পরামর্শকালে দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতা তার প্রতি সমর্থন জানান।
জোসেফ আউনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ও নাওয়াফ সালামের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশটির সরকারব্যবস্থায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা অচলাবস্থার অবসান ঘটল। ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে লেবাননের প্রেসিডেন্ট পদটি খালি ছিল। এ ছাড়া এত দিন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সক্ষমতার ভিত্তিতে দেশটির মন্ত্রিপরিষদ পরিচালিত হতো।
সৌদি আরবের জোরালো চাপের জেরে গত ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে এমপিদের ভোটের ভিত্তিতে লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন আউন। তারপর নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণের জন্য সোমবার ফের ভোট দেন এমপিরা।
লেবাননের পার্লামেন্টের মোট আসনসংখ্যা ১২৮টি। এক প্রতিবেদনে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, এই এমপিদের মধ্যে ৮৪ জন নাওয়াফ সালামের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
সালাম বর্তমানে লেবাননের বাইরে আছেন, তবে আজ মঙ্গলবারের মধ্যেই তিনি দেশে ফিরবেন বলে জানা গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নাওয়াফ সালাম সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দুবার প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রার্থী ছিলেন। তিনি ব্যাপকভাবে একজন সংস্কারবাদী হিসেবে পরিচিত। তিনি সুন্নি মুসলিম। আর শুধু সুন্নি মুসলিমরাই লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।
আইসিজের প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা গণহত্যা মামলা এবং অন্যান্য ট্রাইব্যুনালের নেতৃত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে এই বিচারক আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন।
কিছু সংবাদমাধ্যম নাওয়াফ সালামের প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হওয়ার বিষয়টিকে ‘সুনামির’ সঙ্গে তুলনা করেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, গত রবিবার সকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেন। এর আগপর্যন্ত ক্ষমতাসীন তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতিকে ওই পদের জন্য সবচেয়ে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছিল।
এদিকে সালামের প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্র হিসেবে পরিচিত শিয়া রাজনৈতিক দল আমালের জন্য একটি বড় ধাক্কা। প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য নাজিব মিকাতির প্রতি তাদের সমর্থন ছিল বলে ধারণা করা হয়।
হিজবুল্লাহর সংসদীয় ব্লকের নেতা মোহাম্মদ রাদ সাংবাদিকদের বলেন, সালামকে মনোনীত করার পদক্ষেপ দেশে ‘বিভাজনের’ বীজ বপন করেছে। তিনি আশা করেন যে মন্ত্রিসভা দেশের স্বীকারোক্তিমূলক ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তিকে সম্মান করবে।