ঢাকা ০২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অব্যাহতিপ্রাপ্ত এসআইদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৬:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৩ বার

শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ বিভিন্ন কারণে বাদ পড়া শিক্ষানবীশ ৩২১ জন এসআই চাকরি ফিরে পেতে আন্দোলন শুরু করেছেন। গত দুইদিন ধরে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আর এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মামুনুর রশীদ মামুন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামুন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলেন। দ্বিতীয় কমিটিতে তিনি ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আর তৃতীয় কমিটি ঘোষণার আগে তিনি সভাপতি প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রে লবিং করেছিলেন। তবে সেই কমিটিতে পদ না পেলেও তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য হিসেবে পদ পান।

ছাত্রলীগের এ নেতার বিরুদ্ধে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চাদাবাজি, মাদক সেবন, শিক্ষার্থীদের মারধরসহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে।

 

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করা একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মামুন ছাত্রলীগের পরিচয় নানাবিধ অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে প্রক্টর অফিসে একাধিক অভিযোগ জমা হয়। যার বেশিরভাগই মারধর, চাদাবাজি, হলের সিট বাণিজ্য,মাদক সেবন কেন্দ্রীক।

জানা যায়, মামুনুর রশীদ মামুনের বাড়ি দিনাজপুরে হওয়ায় সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আবু হুসাইন বিপুর সঙ্গে তার সখ্যতা ছিল।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মামুন খুব প্রভাবশালী ছিলেন। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারতেন না। তিনি নিজের ক্ষমতা প্রকাশ করতে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি কয়েকদিন পর পর ফেসবুকে পোস্ট করতেন।’

অভিযোগ আছে, মামুনুর রশীদ মামুন পুলিশের এস আই পদে নিয়োগ পেতে অস্বাধু উপায় অবলম্বন করেছিলেন। তাকে নিয়োগ দিতে সুপারিশ করেছিলেন পলাতক সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

 

এদিকে চাকরি থেকে বাদ পড়ায় এসআইদের আন্দোলনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতার নেত্বত্ব দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ছাত্র-জনতা।

গতকাল মঙ্গলবার ছাত্রলীগ নেতা মামুনের একটি ভিডিও বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হলে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।

এ বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেরোবির অন্যতম সমন্বয়ক এস এম আশিকুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন এ অধিকাংশই যে ছাত্রলীগ কোটায় চাকরি পেয়েছে, এটা বলার অপেক্ষা থাকে না। তাদের মাঝে একদল ছিল পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন পদে, যাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এটা একদম উপযুক্ত সিদ্ধান্ত বলে আমরা মনে করি। প্রশাসন থেকে স্বেরাচারের দোসরদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের নেতৃত্বে অনশনের নামে পুনরায় ছাত্রলীগকে প্রশাসন পুর্নবহালের যে অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা থাকে না। অনশনের নামে যে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের এসব অপচেষ্টা রুখে দিতে হবে। স্বেরাচারের দোসরদের কোনো স্থান প্রশাসনে হবে না। দোসরদের রুখে দিতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত। প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নামব। তবু কোনো ছাড় নয়।’

এদিকে এ প্রসঙ্গে মামুনুর রশীদ মামুনের মুঠোফোনে কল দিলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

অব্যাহতিপ্রাপ্ত এসআইদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা

আপডেট টাইম : ১১:০৬:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ বিভিন্ন কারণে বাদ পড়া শিক্ষানবীশ ৩২১ জন এসআই চাকরি ফিরে পেতে আন্দোলন শুরু করেছেন। গত দুইদিন ধরে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আর এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মামুনুর রশীদ মামুন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামুন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলেন। দ্বিতীয় কমিটিতে তিনি ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। আর তৃতীয় কমিটি ঘোষণার আগে তিনি সভাপতি প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রে লবিং করেছিলেন। তবে সেই কমিটিতে পদ না পেলেও তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য হিসেবে পদ পান।

ছাত্রলীগের এ নেতার বিরুদ্ধে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চাদাবাজি, মাদক সেবন, শিক্ষার্থীদের মারধরসহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে।

 

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করা একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মামুন ছাত্রলীগের পরিচয় নানাবিধ অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে প্রক্টর অফিসে একাধিক অভিযোগ জমা হয়। যার বেশিরভাগই মারধর, চাদাবাজি, হলের সিট বাণিজ্য,মাদক সেবন কেন্দ্রীক।

জানা যায়, মামুনুর রশীদ মামুনের বাড়ি দিনাজপুরে হওয়ায় সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আবু হুসাইন বিপুর সঙ্গে তার সখ্যতা ছিল।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মামুন খুব প্রভাবশালী ছিলেন। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারতেন না। তিনি নিজের ক্ষমতা প্রকাশ করতে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি কয়েকদিন পর পর ফেসবুকে পোস্ট করতেন।’

অভিযোগ আছে, মামুনুর রশীদ মামুন পুলিশের এস আই পদে নিয়োগ পেতে অস্বাধু উপায় অবলম্বন করেছিলেন। তাকে নিয়োগ দিতে সুপারিশ করেছিলেন পলাতক সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

 

এদিকে চাকরি থেকে বাদ পড়ায় এসআইদের আন্দোলনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতার নেত্বত্ব দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ছাত্র-জনতা।

গতকাল মঙ্গলবার ছাত্রলীগ নেতা মামুনের একটি ভিডিও বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হলে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।

এ বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেরোবির অন্যতম সমন্বয়ক এস এম আশিকুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন এ অধিকাংশই যে ছাত্রলীগ কোটায় চাকরি পেয়েছে, এটা বলার অপেক্ষা থাকে না। তাদের মাঝে একদল ছিল পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন পদে, যাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এটা একদম উপযুক্ত সিদ্ধান্ত বলে আমরা মনে করি। প্রশাসন থেকে স্বেরাচারের দোসরদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের নেতৃত্বে অনশনের নামে পুনরায় ছাত্রলীগকে প্রশাসন পুর্নবহালের যে অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা থাকে না। অনশনের নামে যে সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের এসব অপচেষ্টা রুখে দিতে হবে। স্বেরাচারের দোসরদের কোনো স্থান প্রশাসনে হবে না। দোসরদের রুখে দিতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত। প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নামব। তবু কোনো ছাড় নয়।’

এদিকে এ প্রসঙ্গে মামুনুর রশীদ মামুনের মুঠোফোনে কল দিলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।