ঢাকা ০১:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপহরণ চক্রের হয়ে কাজ করছেন গাড়িচালকরা, সতর্ক করল ডিবি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৮:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ৮২ বার

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার মধ্যে বেশকিছু ক্ষেত্রে অপহরণ চক্রের সঙ্গে গাড়িচালকদের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিমেল অপহরণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) লালবাগ বিভাগ তদন্ত করছিল।

এ মামলার তদন্তে ব্যক্তিগত গাড়িচালককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ চালকই অপহরণের মূলহোতা।

গ্রেপ্তার ছামিদুল প্রথমে তুরাগ এলাকার হানিফ বাবুর্চি নামের এক সাইটের ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে আলোচনা করেন। এরপর পরবর্তী আলোচনা হয় ময়মনসিংহের ধোবাউরা থানার ইউপি চেয়ারম্যান মামুনের সঙ্গে। হিমেলকে অপহরণ করে তার বাসায় রাখার পরিকল্পনা করা হয়। পরবর্তীতে হিমেলকে অপহরণ করে তার বাসায় নেওয়া হয় কিন্তু টাকা পেতে দেরি হওয়ায় মামুন গাড়িতে করে হিমেলকে সীমান্ত এলাকায় বর্ডারের একটি পাহাড়ে নিয়ে যায়। তখন সামিদুল ও মালেক, মোবারক, মানিককে নিয়ে চলে যায়। তখন থেকেই হিমেলের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। পরবর্তীতে ডিবি লালবাগ বিভাগ কাজ শুরু করে।

হারুন অর রশীদ বলেন, পরবর্তীতে ডিবি লালবাগ শরীয়তপুরের চর অঞ্চল থেকে মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাসুদের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে ময়মনসিংহের ধোবাউরা, নেত্রকোনা, দুর্গাপুর এরপর তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরে সোর্স নিয়োগ করা হয়। এ সোর্সের মাধ্যমে ডিবি জানতে পারে এ গ্রুপ শুধু অপহরণ করে না, তারা চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত। তারা গরু, চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। অপহরণের পর ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করা হয়। যার ছবি ও ভিডিও পাঠানো হতো হিমেলের মায়ের কাছে।

সর্বশেষ তারা ৩০ লাখ টাকা দাবি করেছিল। কিন্তু ডিবির অভিযানের কারণে তারা পেরে উঠতে পারেনি। এ সময়ে অপহরণকারীদেরও টাকা শেষ হয়ে যায়। কারণ ওপারের মেঘালয় পুলিশ, এপারের আমাদের তৎপরতার কারণে এক মাস পাহাড়ে থাকায় টাকা শেষ হয়ে যায়। এ সময়ে তারা টাকার জোগান দিতে গরু চুরি করে বিক্রি করে। এরপর সেই টাকা দিয়ে পাহাড়ে অবস্থান করত। পরে আমরা খবর পেলাম অপহরণকারীরা টাঙ্গুয়ার হাওরে আবারও অন্য একটি পরিকল্পনা নিয়ে এসেছে। এমন খবর পেয়ে টাঙ্গুয়ার হাওরের একটি নৌকা থেকে হিমেলের গাড়িচালক সামিদুল, ১৭ মামলার আসামি মালেকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ অভিযানে র‌্যাবও সহযোগিতা করে।

তাদের গ্রেপ্তারের পর ডিবি তথ্য পায় এ অপহরণের মূল পরিকল্পনা করা হয় তুরাগ থানা এলাকায় বসে। এরপর ধোবাউরায় ইউপি চেয়ারম্যানের বাসায় বসে পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্ব ঠিক করা হয়। এ ঘটনায় মামুন ও হানিফ নিজেদের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

আমাদের কাছে তারা স্বীকার করেছেন, তারা একাধিক অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। ভুক্তভোগীরা নানা কারণে তাদের টাকা দিয়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় ডিবি পুলিশ নিয়মিত মোবাইল ট্র্যাকিংসহ বিভিন্নভাবে কাজ করে গেছে। পাশাপাশি মেঘালয় পুলিশের তৎপরতার কারণে তারা যে দুই তিন কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছিল সেটি নিতে তারা ব্যর্থ হয় এবং আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

অপহরণ চক্রের হয়ে কাজ করছেন গাড়িচালকরা, সতর্ক করল ডিবি

আপডেট টাইম : ১০:১৮:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার মধ্যে বেশকিছু ক্ষেত্রে অপহরণ চক্রের সঙ্গে গাড়িচালকদের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিমেল অপহরণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) লালবাগ বিভাগ তদন্ত করছিল।

এ মামলার তদন্তে ব্যক্তিগত গাড়িচালককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ চালকই অপহরণের মূলহোতা।

গ্রেপ্তার ছামিদুল প্রথমে তুরাগ এলাকার হানিফ বাবুর্চি নামের এক সাইটের ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে আলোচনা করেন। এরপর পরবর্তী আলোচনা হয় ময়মনসিংহের ধোবাউরা থানার ইউপি চেয়ারম্যান মামুনের সঙ্গে। হিমেলকে অপহরণ করে তার বাসায় রাখার পরিকল্পনা করা হয়। পরবর্তীতে হিমেলকে অপহরণ করে তার বাসায় নেওয়া হয় কিন্তু টাকা পেতে দেরি হওয়ায় মামুন গাড়িতে করে হিমেলকে সীমান্ত এলাকায় বর্ডারের একটি পাহাড়ে নিয়ে যায়। তখন সামিদুল ও মালেক, মোবারক, মানিককে নিয়ে চলে যায়। তখন থেকেই হিমেলের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। পরবর্তীতে ডিবি লালবাগ বিভাগ কাজ শুরু করে।

হারুন অর রশীদ বলেন, পরবর্তীতে ডিবি লালবাগ শরীয়তপুরের চর অঞ্চল থেকে মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাসুদের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে ময়মনসিংহের ধোবাউরা, নেত্রকোনা, দুর্গাপুর এরপর তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরে সোর্স নিয়োগ করা হয়। এ সোর্সের মাধ্যমে ডিবি জানতে পারে এ গ্রুপ শুধু অপহরণ করে না, তারা চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত। তারা গরু, চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। অপহরণের পর ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করা হয়। যার ছবি ও ভিডিও পাঠানো হতো হিমেলের মায়ের কাছে।

সর্বশেষ তারা ৩০ লাখ টাকা দাবি করেছিল। কিন্তু ডিবির অভিযানের কারণে তারা পেরে উঠতে পারেনি। এ সময়ে অপহরণকারীদেরও টাকা শেষ হয়ে যায়। কারণ ওপারের মেঘালয় পুলিশ, এপারের আমাদের তৎপরতার কারণে এক মাস পাহাড়ে থাকায় টাকা শেষ হয়ে যায়। এ সময়ে তারা টাকার জোগান দিতে গরু চুরি করে বিক্রি করে। এরপর সেই টাকা দিয়ে পাহাড়ে অবস্থান করত। পরে আমরা খবর পেলাম অপহরণকারীরা টাঙ্গুয়ার হাওরে আবারও অন্য একটি পরিকল্পনা নিয়ে এসেছে। এমন খবর পেয়ে টাঙ্গুয়ার হাওরের একটি নৌকা থেকে হিমেলের গাড়িচালক সামিদুল, ১৭ মামলার আসামি মালেকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ অভিযানে র‌্যাবও সহযোগিতা করে।

তাদের গ্রেপ্তারের পর ডিবি তথ্য পায় এ অপহরণের মূল পরিকল্পনা করা হয় তুরাগ থানা এলাকায় বসে। এরপর ধোবাউরায় ইউপি চেয়ারম্যানের বাসায় বসে পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্ব ঠিক করা হয়। এ ঘটনায় মামুন ও হানিফ নিজেদের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

আমাদের কাছে তারা স্বীকার করেছেন, তারা একাধিক অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। ভুক্তভোগীরা নানা কারণে তাদের টাকা দিয়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় ডিবি পুলিশ নিয়মিত মোবাইল ট্র্যাকিংসহ বিভিন্নভাবে কাজ করে গেছে। পাশাপাশি মেঘালয় পুলিশের তৎপরতার কারণে তারা যে দুই তিন কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছিল সেটি নিতে তারা ব্যর্থ হয় এবং আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি।