হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের একটি নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গ ধসে পড়ে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিক। তাদেরকে মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ১৭ দিন ধরে সুড়ঙ্গের ভেতরে আটকে ছিলেন তারা।
সুড়ঙ্গের ভেতরে জমে থাকা ধসের শেষ অংশটি হাতে কাটা হয়। তার আগে শ্রমিকদের উদ্ধারের প্রচেষ্টা বারে বারে বাধা পেয়েছে। শেষমেশ মঙ্গলবার ভারতীয় সময় রাত আটটা নাগাদ প্রথম শ্রমিককে বার করে নিয়ে আসা হয়, আর বাকি সবাইকে বার করতে ঘন্টা খানেকেরও কম সময় লাগে।
প্রত্যেক শ্রমিককে ফুলের মালা দিয়ে স্বাগত জানানো হয়।
তারপর প্রত্যেক শ্রমিককে পৃথক অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়ার পরে সুড়ঙ্গ মুখেই আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী মি. ধামী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিং। জানিয়েছেন, ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টা হাসপাতালে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকবেন শ্রমিকরা।
সুড়ঙ্গের ভেতরে ৯০০ মিলিমিটার একটি লোহার পাইপ গুঁজে দিয়ে তা দিয়েই বার করে আনা হয় আটকে পড়া শ্রমিকদের। এতদিন ধরে দুটি অন্য পাইপ দিয়ে শ্রমিকদের জন্য খাবার, পানীয় এবং অক্সিজেন পাঠানো হচ্ছিল।
সুড়ঙ্গের ভেতরে পাইপ গুঁজে দেওয়ার কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সিল্কিয়ারার দিকে চূড়ান্ত তৎপরতা দেখা যায়। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেনারেল ভি কে সিং-সহ শীর্ষ কর্মকর্তারা সুড়ঙ্গ মুখে অপেক্ষা করছিলেন।
গত ১৭ দিন ধরে সুড়ঙ্গমুখে অপেক্ষা করছিলেন শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরাও। তাদের কয়েকজনকে আনন্দে কেঁদে ফেলতে দেখা যায়।
আটকিয়ে থাকা শ্রমিকদের বার করে আনার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে গত ১৭ দিন ধরে। প্রথমে চেষ্টা করা হচ্ছিল ভূমি ধসের ফলে সুড়ঙ্গের ভেতরে যে মাটি-পাথর জমা হয়েছে, সেগুলো সরিয়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরে ফের ধস নামে, তাই সেই পদ্ধতি বাতিল করা হয়।
পরে মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে ধ্বংসাবশেষের ভেতরে গর্ত খোঁড়ার চেষ্টা হয়। সেই যন্ত্রও খারাপ হয়ে যায়।
তারপরে দিল্লি থেকে আরেকটি বড় মাটি কাটার যন্ত্র এনে ধ্বংসাবশেষের ভেতর দিয়ে ৯০০ মিলিমিটার ব্যাসের একটা পাইপ গুঁজে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। শুক্রবার রাতে সেই যন্ত্রও থমকে যায়।
তারপরে আরও একটি বড় মাটি কাটার যন্ত্র নিয়ে এসে সুড়ঙ্গের ভেতরে ৯০০ মিলিমিটার ব্যাসের পাইপটি গুঁজে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সুড়ঙ্গের ভেতরে কখনও সেই যন্ত্রটির ব্লেড ভেঙ্গে গিয়ে, আবার কখনও ধসে পড়া মাটি-পাথরের মধ্যে থাকা লোহায় ব্লেড আটকিয়ে গিয়ে উদ্ধার প্রচেষ্টা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
সোজাসুজি গর্ত খোঁড়ার প্রচেষ্টার সঙ্গেই পাহাড়ের ওপর থেকেও গর্ত খোঁড়া হচ্ছিল।