ঢাকায় সফররত যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্টকে গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জুলাই আন্দোলনকে উপজীব্য করে আঁকা গ্রাফিতির ওপর প্রকাশিত বই ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ উপহার দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস – পিআইডি
বাংলাদেশ থেকে পাচার করা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাজ্য। গতকাল রবিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে যুক্তরাজ্যের ইন্দো-প্যাসিফিকবিষয়ক মন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট এমন আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার প্রায় ষোলো বছরের শাসনামলে বিদেশে পাচার হওয়া কয়েক বিলিয়ন ডলার ফেরত আনার জন্য ঢাকার প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, অলিগার্ক ও আমলাদের পাচার করা অর্থ ফেরত আনা অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তিনি টিআইবির সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ থেকে বছরে ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশে পাচার হয়েছে।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ সংস্কার প্রক্রিয়া তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং পূর্ববর্তী শাসনামলের মতো ভোট কারচুপি থেকে বিরত থাকা এই সংস্কারের লক্ষ্য। পশ্চিমা দেশগুলো সরকারের সংস্কার উদ্যোগগুলোকে সমর্থন করে উল্লেখ করে ক্যাথরিন বলেন, ব্রিটেন নির্বাচন, বিচার বিভাগীয় ও সাংবিধানিক সংস্কারের মূল দিকগুলোতে প্রাণবন্ত বিতর্ক দেখতে চায়। রোহিঙ্গা শরণার্থী, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ইউকে ১০ দশমিক ৩ মিলিয়ন পাউন্ড অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে।
ড. ইউনূস জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন, যাতে তাদের সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে না হয় এবং দাতব্য সংস্থাগুলো নির্বিঘ্নে বাস্তুচ্যুত মানুষের দোরগোড়ায় খাদ্য ও সহায়তা পৌঁছে দিতে পারে। বৈঠকে তারা ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা, সংখ্যালঘুদের অধিকার, দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক এবং নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ৪০ মেগাওয়াট জ্বালানি চুক্তি নিয়েও আলোচনা করেন। ইউনূস বলেন, হিমালয়ের পাদদেশের ভুটান ও নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে পারলে বাংলাদেশ জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারে। এ জন্য ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রয়োজন।
বৈঠকে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ছাত্র ও অন্য বিক্ষোভকারীদের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের একটি মেডিক্যাল টিম চলতি মাসে ঢাকায় এসেছে। তারা দিনে তিনটি অস্ত্রোপচার করছে।