ঢাকা ০৭:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান কে এই তুলসী?

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৯:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
  • ২ বার

তুলসী গ্যাবার্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির ডিরেক্টর হিসাবে বেছে নিয়েছেন। দেশটিতে হিন্দুদের বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছে এই সাবেক ডেমোক্র্যাটকে।

মিজ গ্যাবার্ডের নাম ঘোষণা করে ডোনাল্ড ট্রাম্প লিখেছেন, “আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে সাবেক কংগ্রেসওম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুলসী গ্যাবার্ড ন্যাশানাল সিকিউরিটি এজেন্সির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে তিনি দুই দলেরই (ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান) ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন এবং এখন তিনি একজন গর্বিত রিপাবলিকান।”

ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তুলসী গ্যাবার্ড। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

হিন্দু কিন্তু ভারতীয় বংশোদ্ভূত নন

তুলসী গ্যাবার্ডের পরিচয় সম্পর্কে অনেকেরই কৌতূহল রয়েছে। তার নাম এবং হিন্দু ধর্মের প্রতি বিশ্বাসের কারণে অনেকেই তাকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত বলেও অনুমান করেন। তবে মিজ গ্যাবার্ড কিন্তু ভারতীয় বংশোদ্ভূত নন। যদিও নিজেকে হিন্দু বলেই পরিচয় দিয়ে থাকেন তিনি।

১৯৮১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা মাইক গ্যাবার্ড এবং মা ক্যারল গ্যাবার্ড। গ্যাবার্ড দম্পতির পাঁচ সন্তানের একজন তুলসী।

১৯৮৩ সালে তুলসী গ্যাবার্ডের বয়স যখন দু’বছর, তখন তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। হাওয়াইতে আসার পর, তার মা ক্যারল হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হন। তার বাবা একজন রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ছিলেন। হিন্দু ধর্মের প্রভাবের কারণে ক্যারল গ্যাবার্ড তার সন্তানদের হিন্দু নাম রেখেছিলেন।

গ্যাবার্ডের পিতাও রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তিনি প্রথমে রিপাবলিকান পার্টির (২০০৪-২০০৭) সদস্য ছিলেন এবং পরে ২০০৭ সালে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে যোগ দেন।

গ্যাবার্ড হাওয়াই থেকে ২০১৩ সালে প্রথমবার এমপি হিসাবে নির্বাচিত হন। ২০২১ সাল পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন তিনি।

রাজনীতি ছাড়াও, গ্যাবার্ড দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি ন্যাশনাল গার্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই সময়ে ইরাক ও কুয়েতের মতো দেশে মোতায়েন ছিলেন তিনি।

তিনি ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বার্নি স্যান্ডার্সের হয়ে প্রচার করেন। ২০২০ সালে ডেমোক্র্যাট হিসাবে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে চেয়ে দলের কাছ থেকে মনোনয়ন চেয়েও লড়েছিলেন। পরে অবশ্য জো বাইডেনকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম হিন্দু সদস্য তুলসী গ্যাবার্ড তার মেয়াদকালে সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা, বিনামূল্যে কলেজ টিউশন এবং বন্দুক নিয়ন্ত্রণের মতো উদারপন্থী নীতিকে সমর্থন করেন।

২০২১ সালে হাউস ছাড়ার পর বেশ কিছু ইস্যুতে তাকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে দেখা যায়। সেই সময় পরোক্ষভাবে ট্রাম্পকে সমর্থন করছেন বলেও মনে করা হয়েছিল।

এরপর ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে পররাষ্ট্রনীতি ও সামাজিক ইস্যুতে দলের সঙ্গে মতপার্থক্যের বিষয় উল্লেখ করে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ছাড়েন। সে বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটারে) একটা পোস্টও করেন। এরপরই প্রকাশ্যে ট্রাম্পের সমর্থনে এগিয়ে আসেন গ্যাবার্ড। ২০২৪ সালে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ তিনি ।

চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারে বেশ সাহায্য করেছেন তিনি। সাবেক ডেমোক্র্যাট হওয়ার কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী কমালা হ্যারিসের বিরুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তুতিতেও বেশ সাহায্য করেছেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান কে এই তুলসী?

আপডেট টাইম : ০৬:৩৯:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

তুলসী গ্যাবার্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির ডিরেক্টর হিসাবে বেছে নিয়েছেন। দেশটিতে হিন্দুদের বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছে এই সাবেক ডেমোক্র্যাটকে।

মিজ গ্যাবার্ডের নাম ঘোষণা করে ডোনাল্ড ট্রাম্প লিখেছেন, “আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে সাবেক কংগ্রেসওম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুলসী গ্যাবার্ড ন্যাশানাল সিকিউরিটি এজেন্সির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে তিনি দুই দলেরই (ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান) ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন এবং এখন তিনি একজন গর্বিত রিপাবলিকান।”

ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তুলসী গ্যাবার্ড। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

হিন্দু কিন্তু ভারতীয় বংশোদ্ভূত নন

তুলসী গ্যাবার্ডের পরিচয় সম্পর্কে অনেকেরই কৌতূহল রয়েছে। তার নাম এবং হিন্দু ধর্মের প্রতি বিশ্বাসের কারণে অনেকেই তাকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত বলেও অনুমান করেন। তবে মিজ গ্যাবার্ড কিন্তু ভারতীয় বংশোদ্ভূত নন। যদিও নিজেকে হিন্দু বলেই পরিচয় দিয়ে থাকেন তিনি।

১৯৮১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা মাইক গ্যাবার্ড এবং মা ক্যারল গ্যাবার্ড। গ্যাবার্ড দম্পতির পাঁচ সন্তানের একজন তুলসী।

১৯৮৩ সালে তুলসী গ্যাবার্ডের বয়স যখন দু’বছর, তখন তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। হাওয়াইতে আসার পর, তার মা ক্যারল হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হন। তার বাবা একজন রোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ছিলেন। হিন্দু ধর্মের প্রভাবের কারণে ক্যারল গ্যাবার্ড তার সন্তানদের হিন্দু নাম রেখেছিলেন।

গ্যাবার্ডের পিতাও রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তিনি প্রথমে রিপাবলিকান পার্টির (২০০৪-২০০৭) সদস্য ছিলেন এবং পরে ২০০৭ সালে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে যোগ দেন।

গ্যাবার্ড হাওয়াই থেকে ২০১৩ সালে প্রথমবার এমপি হিসাবে নির্বাচিত হন। ২০২১ সাল পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন তিনি।

রাজনীতি ছাড়াও, গ্যাবার্ড দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি ন্যাশনাল গার্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই সময়ে ইরাক ও কুয়েতের মতো দেশে মোতায়েন ছিলেন তিনি।

তিনি ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বার্নি স্যান্ডার্সের হয়ে প্রচার করেন। ২০২০ সালে ডেমোক্র্যাট হিসাবে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে চেয়ে দলের কাছ থেকে মনোনয়ন চেয়েও লড়েছিলেন। পরে অবশ্য জো বাইডেনকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম হিন্দু সদস্য তুলসী গ্যাবার্ড তার মেয়াদকালে সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা, বিনামূল্যে কলেজ টিউশন এবং বন্দুক নিয়ন্ত্রণের মতো উদারপন্থী নীতিকে সমর্থন করেন।

২০২১ সালে হাউস ছাড়ার পর বেশ কিছু ইস্যুতে তাকে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে দেখা যায়। সেই সময় পরোক্ষভাবে ট্রাম্পকে সমর্থন করছেন বলেও মনে করা হয়েছিল।

এরপর ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে পররাষ্ট্রনীতি ও সামাজিক ইস্যুতে দলের সঙ্গে মতপার্থক্যের বিষয় উল্লেখ করে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ছাড়েন। সে বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটারে) একটা পোস্টও করেন। এরপরই প্রকাশ্যে ট্রাম্পের সমর্থনে এগিয়ে আসেন গ্যাবার্ড। ২০২৪ সালে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ তিনি ।

চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারে বেশ সাহায্য করেছেন তিনি। সাবেক ডেমোক্র্যাট হওয়ার কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী কমালা হ্যারিসের বিরুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তুতিতেও বেশ সাহায্য করেছেন তিনি।