ঢাকা ০১:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনে নিরাপত্তায় থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৭ লাখ সদস্য

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩০:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩
  • ৬৯ বার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী পাঁচটি বাহিনীর মোট সাত লাখ ৪৭ হাজার ৩২২ জন সদস্য মোতায়েন থাকবে। এসব সদস্যকে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা এবং ভোটারদের যাতায়াতের পথে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হবে।

বিভিন্ন মেয়াদে তারা মাঠে নিয়োজিত থাকবেন। বাহিনীগুলো হচ্ছে-পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও কোস্টগার্ড। গত নির্বাচনের চেয়ে এবার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশের সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হবে। অবশ্য এ সংখ্যার মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত নেই।

সশস্ত্র বাহিনীকে কোন পদ্ধতিতে কীভাবে কতদিনের জন্য মাঠে নামানো হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি কমিশন। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সোমবার নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে নির্বাচনে নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ সংখ্যক সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনার তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার ও কোস্টগার্ডের সদস্যদের সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করতে গিয়ে এ সংখ্যা বেরিয়ে আসে। নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

ওই বৈঠকে মূলত এসব বাহিনীর নির্বাচনি ব্যয় নিয়ে আলোচনা হয়। বাহিনীগুলোর পক্ষ থেকে ইসির কাছে পৃথক ব্যয়ের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আগাম টাকা বরাদ্দ চেয়েছে।

বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা খাতে বরাদ্দের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি।

তিনি জানান, নির্বাচনে ৫ লাখ ১৬ হাজার আনসার, এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন পুলিশ ও র‌্যাব, দুই হাজার ৩৫৫ জন কোস্টগার্ড এবং ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন বিজিবি সদস্য থাকবেন।

তিনি আরও বলেন, বৈঠকে সম্ভাব্য বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের জনবলের ভিত্তিকে একটি চাহিদা দিয়েছে। তবে এটি চূড়ান্ত নয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত হার হিসাবে অর্থ দেওয়া হবে।

ভোটকেন্দ্রে পুলিশ বাড়ছে: জানা গেছে, এবার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে পুলিশের সদস্য সংখ্যা একজন করে বাড়ানো হবে। গত নির্বাচনে মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে অবস্থিত সাধারণ ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশের নেতৃত্বে ১৩-১৪ জন আনসার ও গ্রাম পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আরও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে দুজন পুলিশ এবং ১৩-১৪ জন আনসার ও গ্রাম পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়।

এবার সাধারণ ভোটকেন্দ্রে অন্তত দুজন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে তিনজন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। আনসার এবং গ্রাম পুলিশ আগের মতোই রাখা হতে পারে। একইভাবে মেট্রোপলিটন এলাকার সাধারণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশের সংখ্যা তিনজন থেকে বাড়িয়ে চারজন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশ ৫ জন থেকে বাড়িয়ে ৬ জন নিয়োগ দেওয়া হবে।

দুর্গম, পার্বত্য ও দীপাঞ্চল এলাকাগুলোর ভোটকেন্দ্রেও পুলিশের সংখ্যা বাড়বে। এবার নির্বাচনে গতবারের মতোই ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ ৫ দিন এবং আনসার সদস্যদের ৬ দিনের জন্য মোতায়েন করা হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাতা নির্ধারণ: জানা গেছে, নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পদমর্যাদা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন থেকে ভাতা দেওয়া হয়। এবার পুলিশ সদস্যদের সর্বনিম্ন ভাতা ৪০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৬০৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। র‌্যাবের সদস্যরাও একই হারে ভাতা পাবেন। বিজিবি সদস্যরা সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১২২৫ টাকা ভাতা পাবেন। কোস্টগার্ড সর্বনিম্ন ৬৩৭ টাকা, সর্বোচ্চ ১৮২০ টাকা এবং আনসার ৬৩৭ এবং সর্বোচ্চ এক হাজার ৮০০ টাকা ভাতা পাবেন।

আরও জানা গেছে, এই ভাতার হার অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চাহিদা দিতে বলা হয়েছে। যদিও এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইসির কাছে এক হাজার ৭১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার চাহিদা দেয়।

এর মধ্যে পুলিশ ৪৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, আনসার ও ভিডিপি চেয়েছে ৩৬৬ কোটি ১২ লাখ টাকা, র‌্যাব ৫০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং কোস্টগার্ড ৭৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা চেয়েছিল। নতুন ভাতার হার নির্ধারণ হওয়ায় চাহিদার টাকার পরিমাণেও পরিবর্তন আসবে।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে নিরাপত্তায় থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৭ লাখ সদস্য

আপডেট টাইম : ১২:৩০:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী পাঁচটি বাহিনীর মোট সাত লাখ ৪৭ হাজার ৩২২ জন সদস্য মোতায়েন থাকবে। এসব সদস্যকে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা এবং ভোটারদের যাতায়াতের পথে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হবে।

বিভিন্ন মেয়াদে তারা মাঠে নিয়োজিত থাকবেন। বাহিনীগুলো হচ্ছে-পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও কোস্টগার্ড। গত নির্বাচনের চেয়ে এবার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশের সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হবে। অবশ্য এ সংখ্যার মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত নেই।

সশস্ত্র বাহিনীকে কোন পদ্ধতিতে কীভাবে কতদিনের জন্য মাঠে নামানো হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি কমিশন। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সোমবার নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে নির্বাচনে নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ সংখ্যক সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনার তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার ও কোস্টগার্ডের সদস্যদের সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করতে গিয়ে এ সংখ্যা বেরিয়ে আসে। নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও কোস্টগার্ডের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

ওই বৈঠকে মূলত এসব বাহিনীর নির্বাচনি ব্যয় নিয়ে আলোচনা হয়। বাহিনীগুলোর পক্ষ থেকে ইসির কাছে পৃথক ব্যয়ের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আগাম টাকা বরাদ্দ চেয়েছে।

বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা খাতে বরাদ্দের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি।

তিনি জানান, নির্বাচনে ৫ লাখ ১৬ হাজার আনসার, এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ জন পুলিশ ও র‌্যাব, দুই হাজার ৩৫৫ জন কোস্টগার্ড এবং ৪৬ হাজার ৮৭৬ জন বিজিবি সদস্য থাকবেন।

তিনি আরও বলেন, বৈঠকে সম্ভাব্য বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের জনবলের ভিত্তিকে একটি চাহিদা দিয়েছে। তবে এটি চূড়ান্ত নয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত হার হিসাবে অর্থ দেওয়া হবে।

ভোটকেন্দ্রে পুলিশ বাড়ছে: জানা গেছে, এবার নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে পুলিশের সদস্য সংখ্যা একজন করে বাড়ানো হবে। গত নির্বাচনে মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে অবস্থিত সাধারণ ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশের নেতৃত্বে ১৩-১৪ জন আনসার ও গ্রাম পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আরও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে দুজন পুলিশ এবং ১৩-১৪ জন আনসার ও গ্রাম পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়।

এবার সাধারণ ভোটকেন্দ্রে অন্তত দুজন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে তিনজন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হবে। আনসার এবং গ্রাম পুলিশ আগের মতোই রাখা হতে পারে। একইভাবে মেট্রোপলিটন এলাকার সাধারণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশের সংখ্যা তিনজন থেকে বাড়িয়ে চারজন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশ ৫ জন থেকে বাড়িয়ে ৬ জন নিয়োগ দেওয়া হবে।

দুর্গম, পার্বত্য ও দীপাঞ্চল এলাকাগুলোর ভোটকেন্দ্রেও পুলিশের সংখ্যা বাড়বে। এবার নির্বাচনে গতবারের মতোই ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ ৫ দিন এবং আনসার সদস্যদের ৬ দিনের জন্য মোতায়েন করা হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাতা নির্ধারণ: জানা গেছে, নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পদমর্যাদা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন থেকে ভাতা দেওয়া হয়। এবার পুলিশ সদস্যদের সর্বনিম্ন ভাতা ৪০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১৬০৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। র‌্যাবের সদস্যরাও একই হারে ভাতা পাবেন। বিজিবি সদস্যরা সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১২২৫ টাকা ভাতা পাবেন। কোস্টগার্ড সর্বনিম্ন ৬৩৭ টাকা, সর্বোচ্চ ১৮২০ টাকা এবং আনসার ৬৩৭ এবং সর্বোচ্চ এক হাজার ৮০০ টাকা ভাতা পাবেন।

আরও জানা গেছে, এই ভাতার হার অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চাহিদা দিতে বলা হয়েছে। যদিও এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইসির কাছে এক হাজার ৭১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার চাহিদা দেয়।

এর মধ্যে পুলিশ ৪৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, আনসার ও ভিডিপি চেয়েছে ৩৬৬ কোটি ১২ লাখ টাকা, র‌্যাব ৫০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং কোস্টগার্ড ৭৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা চেয়েছিল। নতুন ভাতার হার নির্ধারণ হওয়ায় চাহিদার টাকার পরিমাণেও পরিবর্তন আসবে।