ওমানের কৃষি কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা। জমি লিজ নিয়ে চাষ করছেন সবজিসহ নানা ধরনের কৃষিপণ্য।
বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ আয়তনের ওমানে জনসংখ্যা মাত্র ৩৫ লাখ। আগে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শাকসবজি ও ফলমূল আমদানি করে নিজেদের চাহিদা মেটাতো। আর এখন প্রায় পুরোটাই আসছে নিজ দেশ থেকে।
বাংলাদেশের কুমিল্লার দেবিদ্বারের ছেলে এনামুল হক গত ২৩ বছর ধরে বসবাস করছেন ওমানে। দুইশত একর ভূমি লিজ নিয়ে সেখানে চাষ করছেন সবজিসহ নানা ধরনের কৃষি পণ্য। ওমানের কৃষি অর্থনীতি যে বাংলাদেশীদের দখলে সেই কথা শিকার করলেন খোদ সেই দেশের নাগরিক।
ওমানের নাগরিক ও সাবেক ব্যাংকার আব্দুল মজিদ হাসান আল বরুশ বলেন, “আমাদের কৃষিকাজে বড় অবদান রাখছেন বাংলাদেশীরা। তারা ৯০ শতাংশের বেশি কৃষিপণ্য সরবরাহ করছেন। মানুষ হিসাবে তারা অনেক ভালো।”
একশ’ একর ভূমি লিজ নেওয়ার জন্য সেখানে কর দিতে হয় প্রায় ৫ লাখ টাকা। অপরদিকে, সরকার পানি, কীটনাশক এবং কৃষি কাজের সহায়তা দেয়ার জন্য সুবিধা দিয়ে থাকে।
ওমানে বাংলাদেশী চাষী এনামুল হক বলেন, “বাংলাদেশে যেমন মাটি উর্বর এখানে সেরকম উর্বর নেই। কীটনাশক, সার, পানি বেশি পরিমাণে দরকার হয়।”
ধারণা করা হচ্ছে, ৬ লাখ বাংলাদেশীর মধ্যে ৩ লাখেরও বেশি ওমানের কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। সীম, শাক চাষ থেকে শুরু করে তরমুজ, লাউ, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলা এর কোনটাই বাদ যাচ্ছে না।
মরুর বুকে সবুজ ফসল ফলিয়ে বিশাল অর্থের আয়ের সঙ্গে সামাজিক মর্যাদা লাভ করেছেন তারা।
ওমানের এক প্রবাসী জানান, “বাংলাদেশে যতধরনের শাক-সব্জি পাওয়া যায় এখানেও সেগুলো পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলোর সবই উৎপাদন করছেন আমাদের বাঙালি ভাইরা।”
ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্নদেশে কৃষিকাজের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে সরকারকে উদ্যোগ নেয়ার দাবি সংশ্লিষ্টদের।
মাস্কাট থেকে অন্তত ৬০ কিলোমিটার দূরের একটি মুরুভূমি এলাকায় সবুজ ফসল ফলাচ্ছেন বাংলাদেশী কৃষি শ্রমিকরা। মূলত ওমানের কৃষিনির্ভর যে অর্থনীতি তার পুরোটাই দখল করে আছেন বাংলাদেশীরা।