ঢাকা ০২:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে তীব্র বিতর্ক: ১২তম দিনে গড়ালো কপ২৯ সম্মেলন ঢাকাবাসীকে যেকোনো উপায়ে নিরাপদ রাখতে হবে : ডিএমপি কমিশনার বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস ৫ আগস্টের পর ভুয়া মামলা তদন্তসাপেক্ষে প্রত্যাহার হবে, জানালেন নতুন আইজিপি আলেম সমাজের সাথে ঐতিহাসিক সুসম্পর্ক রয়েছে বিএনপির: ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির জুয়ার অ্যাপের প্রচারে নাম লেখালেন বুবলীও জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত’- তোফায়েল আহমেদ আমরা যা করতে চাই, জনগণকে সাথে নিয়ে করতে চাই : তারেক রহমান বহু নেতার শাসন আমরা দেখেছি, পরিবর্তন দেখিনি : ফয়জুল করীম গ্যাসের জন্য আ.লীগ আমলে ২০ কোটি টাকা ঘুস দিয়েছি : বাণিজ্য উপদেষ্টা

কপাল পুড়লো সিলেটীদের, বন্ধ হলো ব্রিটেনে কেয়ার ভিসায় পরিবার নেওয়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৪১:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ৮৯ বার

আবুল কাশেম রুমন,সিলেটঃ যুক্তরাজ্য সরকারের মতে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে এক লাখ  কেয়ারকর্মী এবং তাদের পরিবারের এক লাখ ২০ হাজার সদস্য এসেছেন। ওই ভিসা নীতির চালুর পর থেকে  পরিসংখ্যান বিহীন কয়েক লাখ মানুষ সিলেট ছেড়ে যুক্তরাজ্য পাড়ি জামিয়েছে স্বপরিবারে।

বৃহত্তর সিলেট মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ জেলা শহর তথা বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন থেকে অনেক পরিবারের ৪-৫ জন পরিবারের সদস্য কেয়ার ভিসার নীতিমালা অনুসারে  যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন। অনেকে সেখানে গিয়ে ভালো টাকাও উপর্জন করছেন, অসহায় পরিবারের মুখে হাসি ফুঁটেছে। অন্যান্য পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের নেওয়ার জন্য প্রায় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন বলে জানা গেছে।

কিন্তু চলতি বছরের ১১ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ব্রিটেনে কেয়ার ভিসার অভিবাসীদের পরিবার নেওয়ার নিয়ম বাতিল করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এ খবর সিলেটবাসী শুনার পর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। অনেক পরিবারের সদস্য হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।
ব্রিটিশ সরকার বলেছে, এই পদক্ষেপ সরকারের অভিবাসনের হার কমানোর পরিকল্পনার অংশ। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি গত সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অভিবাসন নিয়ে এ সংক্রান্ত পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। তবে তিনি নীতিটি প্রথমবারের মতো ঘোষণা করেছিলেন ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। সামাজিক  যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘‘এই পদক্ষেপটি ব্রিটিশ অভিবাসনের সংখ্যা হ্রাস করার পরিকল্পনার অংশ।’’

অভিবাসী খবরা খবর (ইন ফোমাই গ্রেন্টস) প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে জানা যায়, আগের নিয়ম অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে পরিচর্যাকর্মীর ভিসায় যাওয়া ব্যক্তিরা তাদের স্বামী কিংবা স্ত্রী এবং সন্তানকে নিয়ে আসতে পারতেন। তবে চলতি ২০২৪ সালের ১১ মার্চ থেকে পরিবারের সদস্যদের স্পন্সর করতে বেশ কিছু অতিরিক্ত আয়সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যুক্ত করা হবে। যা পূরণ করা অভিবাসীদের জন্য কার্যত অসম্ভব হবে।

নতুন পরিবর্তন গুলো প্রবর্তনের পেছনে যুক্তরাজ্য সরকার জানায়, বর্তমানে ব্রিটেনে অভিবাসনের হার অনেক  বেশি। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, আশ্রয় প্রার্থী এবং বিভিন্ন মানবিক প্রকল্প ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে অভিবাসীদের সামগ্রিক সংখ্যা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে কেয়ার ভিসায় যাওয়া ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা।

অন্যদিকে, অভিবাসী সহায় তাকারী এনজিও এবং দাতব্য সংস্থাগুলো বলেছে, বিদেশি পরিচর্যা কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের তাদের সঙ্গে যোগদান করতে বাধা দেওয়াা ‘অমানবিক’ এবং এর ফলে কর্মীরা মানসিক ভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়বে। সরকারের এই পরিবর্তন ঘোষণার পর ওয়ার্ক রাইটস সেন্টারের প্রধান ডোরা-অলিভিয়া ভিকোল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমকে বলেন, অভিবাসী শ্রমিকরা ইতিমধ্যে অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে বাস করছে। নতুন উদ্যোগের অর্জন হবে পরিবার ভেঙে দেওয়া,কর্মীদের ভয়ে রাখা এবং পারষ্পরিক বিশ্বাস নষ্ট করা।

চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিরোধীরা বলেছেন, এই পদক্ষেপ ব্রিটিশ অর্থনীতির ক্ষতি করতে পারে। কেয়ার সেক্টও গুলো কর্মী ঘাটতিতে ভুগছে। বেশ কয়েক জন মন্ত্রী বলেছেন, নতুন নিষেধাজ্ঞাটি সংকটে থাকা খাতে প্রযোজনীয় অভিবাসী শ্রমিকদের আসতে বাধা দেবে।

এদিকে নতুন আইন পরিবর্তনের অর্থ হল যারা চলতি বছরের ১১ মার্চ থেকে আসবেন তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসতে পারবেবেন না। নতুন আইনের আওতায় প্রভাবিত পেশার কোড হল এসওসি ৬১৪৫ এবং ৬১৪৬। এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে ব্রিটিশ সরকারের ওয়েবসাইটে।
নতুন নিষেধাজ্ঞা ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত পরিচর্যা কর্মীদের ও তাদের পরিবারের জন্য প্রযোজ্য হবে না।

এই ভিসায় কর্মী আনতে শুধুমাত্র সেসব কোম্পানি স্পন্সর করতে পারবেন যারা ব্রিটিশ কেয়ার  কোয়ালিটি কমিশনে নিবন্ধিত। সম্প্রতি স্কিলড ওয়ার্কার ভিসার পরিবর্তিত বেতন কাঠামোর শর্তগুলো এই স্বাস্থ্য এবং  কেয়ার ভিসার জন্য প্রযোজ্য হবে না। বিস্তারিত ব্রিটিশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা এনএইচএস সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তাদের জন্য নিবেদিত ওয়েব সাইটে দেখা যাবে বলে জানা গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে তীব্র বিতর্ক: ১২তম দিনে গড়ালো কপ২৯ সম্মেলন

কপাল পুড়লো সিলেটীদের, বন্ধ হলো ব্রিটেনে কেয়ার ভিসায় পরিবার নেওয়া

আপডেট টাইম : ০১:৪১:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আবুল কাশেম রুমন,সিলেটঃ যুক্তরাজ্য সরকারের মতে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে এক লাখ  কেয়ারকর্মী এবং তাদের পরিবারের এক লাখ ২০ হাজার সদস্য এসেছেন। ওই ভিসা নীতির চালুর পর থেকে  পরিসংখ্যান বিহীন কয়েক লাখ মানুষ সিলেট ছেড়ে যুক্তরাজ্য পাড়ি জামিয়েছে স্বপরিবারে।

বৃহত্তর সিলেট মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ জেলা শহর তথা বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন থেকে অনেক পরিবারের ৪-৫ জন পরিবারের সদস্য কেয়ার ভিসার নীতিমালা অনুসারে  যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন। অনেকে সেখানে গিয়ে ভালো টাকাও উপর্জন করছেন, অসহায় পরিবারের মুখে হাসি ফুঁটেছে। অন্যান্য পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের নেওয়ার জন্য প্রায় প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন বলে জানা গেছে।

কিন্তু চলতি বছরের ১১ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ব্রিটেনে কেয়ার ভিসার অভিবাসীদের পরিবার নেওয়ার নিয়ম বাতিল করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এ খবর সিলেটবাসী শুনার পর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। অনেক পরিবারের সদস্য হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।
ব্রিটিশ সরকার বলেছে, এই পদক্ষেপ সরকারের অভিবাসনের হার কমানোর পরিকল্পনার অংশ। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি গত সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অভিবাসন নিয়ে এ সংক্রান্ত পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। তবে তিনি নীতিটি প্রথমবারের মতো ঘোষণা করেছিলেন ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। সামাজিক  যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘‘এই পদক্ষেপটি ব্রিটিশ অভিবাসনের সংখ্যা হ্রাস করার পরিকল্পনার অংশ।’’

অভিবাসী খবরা খবর (ইন ফোমাই গ্রেন্টস) প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে জানা যায়, আগের নিয়ম অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে পরিচর্যাকর্মীর ভিসায় যাওয়া ব্যক্তিরা তাদের স্বামী কিংবা স্ত্রী এবং সন্তানকে নিয়ে আসতে পারতেন। তবে চলতি ২০২৪ সালের ১১ মার্চ থেকে পরিবারের সদস্যদের স্পন্সর করতে বেশ কিছু অতিরিক্ত আয়সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যুক্ত করা হবে। যা পূরণ করা অভিবাসীদের জন্য কার্যত অসম্ভব হবে।

নতুন পরিবর্তন গুলো প্রবর্তনের পেছনে যুক্তরাজ্য সরকার জানায়, বর্তমানে ব্রিটেনে অভিবাসনের হার অনেক  বেশি। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, আশ্রয় প্রার্থী এবং বিভিন্ন মানবিক প্রকল্প ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে অভিবাসীদের সামগ্রিক সংখ্যা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে কেয়ার ভিসায় যাওয়া ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা।

অন্যদিকে, অভিবাসী সহায় তাকারী এনজিও এবং দাতব্য সংস্থাগুলো বলেছে, বিদেশি পরিচর্যা কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের তাদের সঙ্গে যোগদান করতে বাধা দেওয়াা ‘অমানবিক’ এবং এর ফলে কর্মীরা মানসিক ভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়বে। সরকারের এই পরিবর্তন ঘোষণার পর ওয়ার্ক রাইটস সেন্টারের প্রধান ডোরা-অলিভিয়া ভিকোল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমকে বলেন, অভিবাসী শ্রমিকরা ইতিমধ্যে অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে বাস করছে। নতুন উদ্যোগের অর্জন হবে পরিবার ভেঙে দেওয়া,কর্মীদের ভয়ে রাখা এবং পারষ্পরিক বিশ্বাস নষ্ট করা।

চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিরোধীরা বলেছেন, এই পদক্ষেপ ব্রিটিশ অর্থনীতির ক্ষতি করতে পারে। কেয়ার সেক্টও গুলো কর্মী ঘাটতিতে ভুগছে। বেশ কয়েক জন মন্ত্রী বলেছেন, নতুন নিষেধাজ্ঞাটি সংকটে থাকা খাতে প্রযোজনীয় অভিবাসী শ্রমিকদের আসতে বাধা দেবে।

এদিকে নতুন আইন পরিবর্তনের অর্থ হল যারা চলতি বছরের ১১ মার্চ থেকে আসবেন তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসতে পারবেবেন না। নতুন আইনের আওতায় প্রভাবিত পেশার কোড হল এসওসি ৬১৪৫ এবং ৬১৪৬। এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে ব্রিটিশ সরকারের ওয়েবসাইটে।
নতুন নিষেধাজ্ঞা ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত পরিচর্যা কর্মীদের ও তাদের পরিবারের জন্য প্রযোজ্য হবে না।

এই ভিসায় কর্মী আনতে শুধুমাত্র সেসব কোম্পানি স্পন্সর করতে পারবেন যারা ব্রিটিশ কেয়ার  কোয়ালিটি কমিশনে নিবন্ধিত। সম্প্রতি স্কিলড ওয়ার্কার ভিসার পরিবর্তিত বেতন কাঠামোর শর্তগুলো এই স্বাস্থ্য এবং  কেয়ার ভিসার জন্য প্রযোজ্য হবে না। বিস্তারিত ব্রিটিশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা এনএইচএস সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তাদের জন্য নিবেদিত ওয়েব সাইটে দেখা যাবে বলে জানা গেছে।