কেজিতে ৫ টাকা বাড়ল লবণের দাম

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের বাজারগুলোতে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্যাকেটজাত লবণের দামও বেড়েছে। খুচরা ও পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই মাসে তিন দফায় কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। কয়েক দিন আগে প্রতি কেজি প্যাটেকজাত লবণের দাম বেড়েছে ৩ টাকা।
লবণের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে। পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, তারা লবণের দাম বাড়ানোর বিষয়ে কিছু জানেন না।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি বছরের শুরুর দিক থেকে থেমে থেমে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। উৎপাদক কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের দাম হুট করে না বাড়িয়ে প্রতি সপ্তাহ বা ১৫ দিন পর পর দাম বাড়াচ্ছে। এভাবে লবণের দামও গত দুই মাসে কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানির বিপণন প্রতিনিধিদের কাছে দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তারা কোনো উত্তর দেননি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মহাখালী, খিলগাঁও ও উত্তর বাড্ডা এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব ধরনের লবণের দাম বেড়েছে। কোম্পানিভেদে প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৩ টাকা। বর্তমানে এক কেজি লবণ বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা করে, যা তিন দিন আগেও ৩৫ টাকা করে বিক্রি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
কোরবানির ঈদের সময় প্যাকেটজাত ২৫ কেজি লবণের এক বস্তার দাম ছিল ৭৫০ টাকা। ঈদের পরেই তা ৫০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৮০০ টাকা। আগস্টে আরেক দফায় বস্তাপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে। এখন এক বস্তার দাম ৮৫০ টাকা।
লবণের দাম বাড়া প্রসঙ্গে খিলগাঁও এলাকার খুচরা বিক্রেতা আসাদ বলেন, ‘গত কোরবানির ঈদ থেকে লবণের দাম বাড়তি। মানুষ লবণ কম কিনছেন বলে এ নিয়ে তেমন একটা কথা হয় না। এখন এক প্যাকেট লবণ বিক্রি করছি ৩৮ টাকা করে, যা এক মাস আগেও ৩৩-৩৫ টাকায় বিক্রি করতাম।’ কয়েক দিন প

র পর লবণের দাম কেন বাড়ছে তা নিয়ে তারও প্রশ্ন আছে বলে তিনি জানান।
মহাখালীর আমিনা স্টোরের স্বত্বাধিকারী সিরাজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমি এখন আতঙ্কে। কোম্পানির লোকেরা কখন এসে বলে, অমুক পণ্যের দাম বেড়েছে।’
গণমাধ্যমে আসা খবর অনুযায়ী, দেশে চলতি বছর ১৮ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদন হয়। প্রতি বছর দেশে আয়োডিনযুক্ত খাওয়ার লবণের চাহিদা ৯ লাখ মেট্রিক টন। প্রতি টন লবণ পরিমিত মাত্রায় আয়োডিন যুক্ত করতে প্রায় ৫৫ গ্রাম পটাশিয়াম আয়োডাইড প্রয়োজন হয়। সেই হিসাবে প্রতি বছর আয়োডিন লাগে ৪০ টনের বেশি। এসব আয়োডিন সরকারিভাবেই আমদানি করা হয়। তা ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে লবণ উৎপাদনকারী ৩০০-এর বেশি করপোরেট কোম্পানি রয়েছে।
কারওয়ান বাজারে তুহিন নামে একটি বেসরকারি কোম্পানির চাকরিজীবীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বিদ্রুপের সুরে বলেন, ‘এ সময়ে দেশের সব ধরনের পণ্যের দামই তো বেড়েছে। তাহলে লবণের দাম বৃদ্ধি পেলে এতে দোষের কিছু নেই। অন্যান্য পণ্যের মতো লবণের দাম বাড়াও একধরনের অধিকার। তাই লবণও হয়তো তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকতে চায়নি।’ তিনি আরও বলেন, দেশের মধ্যে কক্সবাজার, টেকনাফের মতো লবণ উৎপাদনের এত বড় ক্ষেত্র থাকতে কেন দাম বাড়ছে, তার কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। হয়তো কোনো এক অদৃশ্য হাত রয়েছে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর