বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‌‘অনেকেই বাংলাদেশের অতীতের অবস্থাকে ভুলে যায়। বাংলাদেশ অতীতের কোন অবস্থা থেকে আজকের এই অবস্থানে এসেছে সেটা নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। কীভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি আজকের এই পর্যায়ে এসেছে সেটা সবাইকে জানাতে হবে।’

সোমবার (৪ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার গ্রন্থ ‘বাংলাদেশের ৫০: সাফল্য ও সম্ভাবনা’-এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

নতুন এই বইটির বিষয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি অর্জন ও সাফল্যের গল্পগুলো পত্রিকায়, বইয়ে প্রকাশ করা উচিত যেন নতুন প্রজন্ম এগুলো জানতে পারে। আমাদের অনেক বড় বড় অর্জন রয়েছে। ২০২০ ও ২০২১ সালে আমাদের বড় ইভেন্ট হয়েছে। বাংলাদেশের ৫০ বছর ও মুজিব শতবর্ষ আমরা পালন করেছি। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ  প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাফল্য ও তার ধারাবাহিকতা নিয়ে পোপ ফ্রান্সিসসহ বিশ্ব নেতারা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’

ড. মোমেন বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে আমাদের সাফল্যগুলো নিবন্ধ আকারে পত্রিকায় লিখেছি। নতুন প্রজন্মসহ সবাই যেন এগুলো জানতে পারে সেজন্য এগুলো বই আকারে প্রকাশ করেছি।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, এমপি। ঝুমঝুমি প্রকাশনীর উপদেষ্টা কবি জসীম উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে গ্রন্থটির উপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন, অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান এবি ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক ড. নিজামুল করিম, অধ্যাপক শাহেদুল কবির চৌধুরী প্রমুখ।

আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের অর্থনীতিকে যেভাবে রেখে গিয়েছিলেন আজ তার অবর্তমানে সেই ধারাবাহিকতার সাফল্য উল্লেখ করার মতো। করোনা ম্যানেজমেন্টে আমরা সারাবিশ্বে পাঁচ নম্বর এবং দক্ষিণ এশিয়াতে এক নম্বর। প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই কেবল সেটি সম্ভব হয়েছে।’

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে ঋণ দেওয়া নিয়ে বিশ্বব্যাংক সরে গেলো।কিন্তু সেতু করতে এর থেকেও বড়ো চ্যালেঞ্জ ছিল টেকনিক্যাল ও টেকনোলজির বিষয়গুলো। বিশ্বব্যাংক একটা শিক্ষা পেয়েছে।’

পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘৫০ বছরে এসে বাংলাদেশের অর্জনগুলো বইটিতে স্থান পেয়েছে। আগামী প্রজন্মের জন্য বইটি অনুপ্রেরণা।’

ভিশন ২০৪১ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দেশের এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তন আমাদের অনুধাবন করা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বড় অর্জন। আমরা আমাদের সাফল্যকে স্বীকার করাসহ আত্মবিশ্বাসের জায়গায় আরও বেশি নজর দিতে হবে।’

এবি ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল বলেন, ‘বইয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের প্রকৃত রূপ ফুটে উঠেছে। যেখানে বঙ্গবন্ধুর কূটনৈতিক দূরদর্শিতা নিয়ে লেখক আলোচনা করেছেন। ড. মোমেনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর রসিকতাগুলোও স্থান পেয়েছে।’

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে দেশাত্ববোধক গান ও রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন সংগীত শিল্পী অনিমা রায়। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, আমন্ত্রিত লেখক ও প্রকাশক এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর