ঢাকা ০৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:০৬:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২
  • ১৪৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবশেষে চালু হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর আগেই কথিত দুর্নীতির অভিপ্রায়ের অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক-এডিবি-জাইকার সরে যাওয়া দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুদকের মামলা এবং যোগাযোগ সচিবকে গ্রেফতার, প্রধানমন্ত্রীর এক উপদেষ্টাকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ, কানাডায় আদালতে মামলা নানান বাধার মুখে পড়েছে পদ্মা সেতু। অতঃপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ঘোষণা ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করব’।

পাহাড়সম বাধা-বিপত্তি ডিঙিয়ে উন্নয়ন সহযোগী চীনের চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি ২০১৫ সালে নির্মাণকাজ শুরু করে।
দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ভুল প্রমাণ করে পদ্মা সেতু এখন যান চলাচলের উপযোগী হয়ে উঠেছে। গতকাল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে এবং চলতি বছর শেষ নাগাদ সেতুটি চালু হবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু ২০২২ সালের শেষ নাগাদ যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এ সময় তিনি দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। প্রশ্নোত্তরে নওগাঁ-২ আসনের শহীদুজ্জমান সরকারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকারের সাহসী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সকল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে।

এটা (পদ্মা সেতু) ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পগুলোর একটি। ‘দক্ষিণাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের পদ্মা সেতু প্রকল্পের উভয় প্রান্তে অ্যাপ্রোচ রোড ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূল সেতুর ভৌত কাঠামোর অগ্রগতি হয়েছে ৯৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। বর্তমানে সেতুতে কার্পেটিং, ভায়াডাক্ট কার্পেটিং, ওয়াটারপ্রুফ মেমব্রেন, মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের মুভমেন্ট জয়েন্ট, ল্যাম্পপোস্ট, অ্যালুমিনিয়াম রেলিং, গ্যাসের পাইপলাইন, ৪০০ কেভিএ বিদ্যুৎ এবং রেললাইন নির্মাণের কাজ চলছে। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতেই কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বলে তিনি জানান।

এর আগে গত ৩ এপ্রিল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, আগামী জুন মাসে পদ্মা বহুমুখী সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। অবশ্য গতকালই মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য পদ্মা সেতু প্রকল্পের কিছু মালামাল ইউরোপ থেকে আসতে দেরি হচ্ছে। তাই পদ্মা সেতু চালু দেরি হতে পারে।

 পদ্মা সেতু প্রকল্প নির্মাণ করা করেছে চীনের চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি। সেতুটি নির্মাণ হয়েছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় ও শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে। এ সেতু রাজধানী ঢাকার সাথে সংযোগ স্থাপন করবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার।

দেশের সব অঞ্চলের মধ্যে সুষ্ঠু ও সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে প্রকল্পের নদী শাসন কাজ এবং মূল সেতুর নির্মাণ কাজের সূচনা করেন। সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয় ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। শেষ স্প্যান বসানো হয় ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর।

Tag :
About Author Information

Haor Barta24

আপডেট টাইম : ১০:০৬:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবশেষে চালু হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতুর কাজ শুরুর আগেই কথিত দুর্নীতির অভিপ্রায়ের অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক-এডিবি-জাইকার সরে যাওয়া দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুদকের মামলা এবং যোগাযোগ সচিবকে গ্রেফতার, প্রধানমন্ত্রীর এক উপদেষ্টাকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ, কানাডায় আদালতে মামলা নানান বাধার মুখে পড়েছে পদ্মা সেতু। অতঃপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ঘোষণা ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করব’।

পাহাড়সম বাধা-বিপত্তি ডিঙিয়ে উন্নয়ন সহযোগী চীনের চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি ২০১৫ সালে নির্মাণকাজ শুরু করে।
দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ভুল প্রমাণ করে পদ্মা সেতু এখন যান চলাচলের উপযোগী হয়ে উঠেছে। গতকাল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে এবং চলতি বছর শেষ নাগাদ সেতুটি চালু হবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু ২০২২ সালের শেষ নাগাদ যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এ সময় তিনি দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। প্রশ্নোত্তরে নওগাঁ-২ আসনের শহীদুজ্জমান সরকারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকারের সাহসী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সকল বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে পদ্মা সেতু হতে যাচ্ছে।

এটা (পদ্মা সেতু) ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পগুলোর একটি। ‘দক্ষিণাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের পদ্মা সেতু প্রকল্পের উভয় প্রান্তে অ্যাপ্রোচ রোড ও সার্ভিস এরিয়ার কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূল সেতুর ভৌত কাঠামোর অগ্রগতি হয়েছে ৯৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। বর্তমানে সেতুতে কার্পেটিং, ভায়াডাক্ট কার্পেটিং, ওয়াটারপ্রুফ মেমব্রেন, মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের মুভমেন্ট জয়েন্ট, ল্যাম্পপোস্ট, অ্যালুমিনিয়াম রেলিং, গ্যাসের পাইপলাইন, ৪০০ কেভিএ বিদ্যুৎ এবং রেললাইন নির্মাণের কাজ চলছে। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতেই কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বলে তিনি জানান।

এর আগে গত ৩ এপ্রিল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, আগামী জুন মাসে পদ্মা বহুমুখী সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। অবশ্য গতকালই মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য পদ্মা সেতু প্রকল্পের কিছু মালামাল ইউরোপ থেকে আসতে দেরি হচ্ছে। তাই পদ্মা সেতু চালু দেরি হতে পারে।

 পদ্মা সেতু প্রকল্প নির্মাণ করা করেছে চীনের চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি। সেতুটি নির্মাণ হয়েছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় ও শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে। এ সেতু রাজধানী ঢাকার সাথে সংযোগ স্থাপন করবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার।

দেশের সব অঞ্চলের মধ্যে সুষ্ঠু ও সমন্বিত যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে প্রকল্পের নদী শাসন কাজ এবং মূল সেতুর নির্মাণ কাজের সূচনা করেন। সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয় ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। শেষ স্প্যান বসানো হয় ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর।