শঙ্কা ও আতঙ্কের মধ্য দিয়েই বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওইদিন দেশের ৪৭ জেলার ৬৪৩ ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
২২ মার্চ প্রথম ধাপে দেশের ৭১২টি ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনের আগে ও পরে সারাদেশে নির্বাচনী সহিংসতায় এ পর্যন্ত ২৪ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন দুই হাজারের বেশি মানুষ। প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী সহিংসতা এখনো অব্যাহত আছে। এসব সহিংসতার বেশির ভাগই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের ঘটছে। কিন্তু ইসিকে এ ব্যাপারে কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
যদিও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। কিন্তু আট দিন পেরিয়ে গেলেও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। কয়েকটি ঘটনায় মামলা করা হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন দাবি করলেও এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি তারা। তাই ভোটার ও আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য প্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলার জামালপুর ইউনিয়নের ভোটার আবদুল মমিন জাগো নিউজকে বলেন, এলাকায় তারা বিএনপির চেয়ারম্যানের পক্ষে ভোট চাইতে পারছেন না। মাঠে নামলেই হুমকি দেয়া হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী ইসিতে অভিযোগ করেন, তিনি প্রতিপক্ষের হামলার কারণে প্রচারণা চালাতে পারেননি।
দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ১৭টি দল চেয়ারম্যান পদে ১ হাজার ৫০৭ জন প্রার্থী দিয়েছে। আর স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করছেন ১ হাজার ১৭৭ জন প্রার্থী। ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ইতোমধ্যে জেলায় জেলায় ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী উপকরণ পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচনে ভোটার রয়েছেন ৯৪ লাখ ৭৮ হাজার ৮১ জন। চেয়রম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য এই তিনটি পদের বিপরীতে ভোটার সংখ্যার তিনগুণ ব্যালট ছাপিয়েছে ইসি। দ্বিতীয় পর্যায়ের ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে সব ধরনের প্রচারণা বন্ধ হয়ে গেছে।
সূত্র জানায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফার ইউপি নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ৬৮৪টি ইউপির ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও নির্বাচন হচ্ছে ৬৪৩টিতে। মূলত মামলা ও সীমানা জটিতলতার কারণে অন্য ইউপিগুলোতে ভোট হচ্ছে না।
দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনের ভোট শুরুর আগেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ৩১ জন প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। আর ৮১টি ইউপিতে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। আর বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী নেই ৪৮৭টি ইউপিতে।
সূত্র জানায়, প্রথম ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে বুধবার হতাহতের ঘটনা ছাড়াও অনেক প্রার্থীর বাড়িতে প্রতিপক্ষের হামলা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলার অনেক অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রধান ইসি তেমন বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখনি ।