ঢাকা ০৫:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘ, মহাসচিব, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
  • ১১ বার

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে ঢাকায় আসছেন।

জানা গেছে, গুতেরেসকে বহনকারী এমিরেটসের একটি ফ্লাইট (ইকে-৫৮৬) বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। গুতেরেস ঢাকায় পৌঁছানোর পর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে যাওয়ার আগে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

সূচী অনুযায়ী, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান শুক্রবার সকাল ৯টায় হোটেলে গুতেরেসের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।

পরে, জাতিসংঘ মহাসচিব সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাথে দেখা করবেন। বৈঠকের পর গুতেরেস রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে কক্সবাজার যাবেন।

গুতেরেস কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম তাকে স্বাগত জানাবেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস দিনের শেষে গুতেরেসের সঙ্গে কক্সবাজারে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে ইফতারে যোগ দেবেন।

এ অনুষ্ঠান চলাকালে দুই নেতা রোহিঙ্গা ইমাম এবং সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ইফতারের আগে, মহাসচিব ক্যাম্পের বেশ কয়েকটি সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করবেন, যার মধ্যে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, লার্নিং সেন্টার, মাল্টি-পারপাস সার্ভিস সেন্টার এবং একটি পাট উৎপাদন স্থাপনা। তিনি রোহিঙ্গা যুবক ও শিশুদের সাথেও কথা বলবেন। গুতেরেস সন্ধ্যায় ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ফিরে আসবেন।

শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায় জাতিসংঘের ভবন পরিদর্শন করবেন, যেখানে তিনি জাতিসংঘের পতাকা উত্তোলন করবেন, বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী পর্যবেক্ষণ করবেন এবং জাতিসংঘের কর্মীদের সাথে একটি সভায় যোগ দেবেন।

ওই দিন বিকালে তিনি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ার উপর একটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেবেন। তিনি তরুণদের সাথে একটি সংলাপে অংশ নেবেন এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের সাথে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

পরে গুতেরেস হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হোসেনের সাথে একটি যৌথ মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই দিনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন।

রবিবার গুতেরেস সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন। ড. খলিলুর রহমান বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাতে উপস্থিত থাকবেন।

এই সফরকালে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক মর্যাদা এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে রোহিঙ্গা সমস্যার মতো দেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে- তা তুলে ধরা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক ড. ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে গুতেরেস আশা প্রকাশ করেছেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিষয়ে আসন্ন উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন নতুন করে বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং তাদের দুর্দশার ব্যাপক ভিত্তিক সমাধান বের করতে সহায়তা করবে।

গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংগঠিত করার প্রয়াস অব্যাহত রাখবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জাতিসংঘ, মহাসচিব, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব

আপডেট টাইম : ১১:০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে ঢাকায় আসছেন।

জানা গেছে, গুতেরেসকে বহনকারী এমিরেটসের একটি ফ্লাইট (ইকে-৫৮৬) বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। গুতেরেস ঢাকায় পৌঁছানোর পর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে যাওয়ার আগে পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

সূচী অনুযায়ী, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান শুক্রবার সকাল ৯টায় হোটেলে গুতেরেসের সাথে সাক্ষাৎ করবেন।

পরে, জাতিসংঘ মহাসচিব সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাথে দেখা করবেন। বৈঠকের পর গুতেরেস রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে কক্সবাজার যাবেন।

গুতেরেস কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম তাকে স্বাগত জানাবেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস দিনের শেষে গুতেরেসের সঙ্গে কক্সবাজারে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে ইফতারে যোগ দেবেন।

এ অনুষ্ঠান চলাকালে দুই নেতা রোহিঙ্গা ইমাম এবং সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে মতবিনিময় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ইফতারের আগে, মহাসচিব ক্যাম্পের বেশ কয়েকটি সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করবেন, যার মধ্যে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, লার্নিং সেন্টার, মাল্টি-পারপাস সার্ভিস সেন্টার এবং একটি পাট উৎপাদন স্থাপনা। তিনি রোহিঙ্গা যুবক ও শিশুদের সাথেও কথা বলবেন। গুতেরেস সন্ধ্যায় ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ফিরে আসবেন।

শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায় জাতিসংঘের ভবন পরিদর্শন করবেন, যেখানে তিনি জাতিসংঘের পতাকা উত্তোলন করবেন, বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী পর্যবেক্ষণ করবেন এবং জাতিসংঘের কর্মীদের সাথে একটি সভায় যোগ দেবেন।

ওই দিন বিকালে তিনি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ার উপর একটি গোলটেবিল আলোচনায় যোগ দেবেন। তিনি তরুণদের সাথে একটি সংলাপে অংশ নেবেন এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের সাথে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

পরে গুতেরেস হোটেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হোসেনের সাথে একটি যৌথ মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই দিনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন।

রবিবার গুতেরেস সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ত্যাগ করবেন। ড. খলিলুর রহমান বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাতে উপস্থিত থাকবেন।

এই সফরকালে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক মর্যাদা এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে রোহিঙ্গা সমস্যার মতো দেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে- তা তুলে ধরা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক ড. ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে গুতেরেস আশা প্রকাশ করেছেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিষয়ে আসন্ন উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলন নতুন করে বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং তাদের দুর্দশার ব্যাপক ভিত্তিক সমাধান বের করতে সহায়তা করবে।

গুতেরেস বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংগঠিত করার প্রয়াস অব্যাহত রাখবে।’