ঢাকা ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
মদনে প্রয়াত সাংবাদিকদের স্বরণে দোয়া ও ইফতার মাহফিল ঈদে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বিশেষ সম্মানি দেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বাংলাদেশে ব্যবসা করবেন ট্রাম্প, নিলেন ট্রেড লাইসেন্স সব মামলায় খালাস তারেক রহমান, ‘দেশে ফিরতে বাধা নেই’ অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ঈদের চাঁদ ২৯ রমজানে দেখার সম্ভাবনা নেই, জানা গেলো কারণ নিক্কেই এশিয়াকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন মেয়াদে ভুয়া নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন হাসিনা নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাকিব ফেরায় যা বললেন মেহেদি ঈদ উপলক্ষ্যে বিআরটিসি বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ইসলামি পোশাক পরে পরকালের কথা বললেন সিমরিন লুবাবা

দোকান কর্মচারী থেকে সন্ত্রাসের সম্রাট নুরু গ্রেপ্তারে জনমনে স্বস্তি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫
  • ১৬ বার

দেড় দশক আগেও মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না মো. নুরে আলম ওরফে নুরুর (৩৫)। ছিলেন চট্টগ্রাম নগরী ফয়’স লেকের দোকান কর্মচারী। থাকতেন নগরীর আকবর শাহ থানার পূর্ব ফিরোজ শাহ কলোনির এক নম্বর ঝিলের পাহাড়ের সরকারি খাস জায়গায়। প্রথমে সেখানে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি শুরু করেন। এরপর ঘর বানিয়ে ভাড়া দিতে থাকেন। শুরু হয় অপরাধের হাতেখড়ি। পাহাড় কাটা থেকে আস্তে আস্তে নুরু জড়িয়ে পড়েন মাদক, অস্ত্র কারবার, চুরি, ডাকাতি ও লুটপাটে। এসব করে গত এক দশক ধরে কামিয়েছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক প্রভাবশালী কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের ছত্রছায়ায় রাতারাতি বনে যান অপরাধারীদের সম্রাট। তার কাঁধে মামলাও আছে ৩০টিরও বেশি। পুলিশের খাতায় তার নাম ওঠে এসেছে শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায়।

৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে চলে যান তিনি। ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। শুক্রবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে ধরতে নগরীর আকবরশাহ থানার এক নম্বর ঝিল এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।

নুরুর গ্রেপ্তারের খবরে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি নেমে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে তার অপরাধ কর্মকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের এই অভিযানের প্রশংসা করেছেন। তারা আশা করছেন, নুরুর গ্রেপ্তারের মাধ্যমে নগরীতে অপরাধপ্রবণতা অনেকটাই কমে আসবে।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, নুরুর সহযোগীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) মাহমুদা বেগম জানান, তাকে গ্রেপ্তার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এ সময় তার কাছ থেকে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র এলজিসহ ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নুরুর বিরুদ্ধে পাহাড় দখল, পাহাড় কাটা, অপহরণ, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৩১টি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে মাদক আইনেই রয়েছে ১৮টি। মামলাগুলো হয়েছে ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত। সে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী নুরে আলমের উত্থান চসিকের সাবেক কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের হাত ধরেই। নুরুকে পাহাড় কাটার অপরাধের হাতেখড়ি করিয়েছিলেন জসিমই।

আকবর শাহ থানা এলাকার স্থানীয় এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাবেক কাউন্সিলর জসিম একসময় তাকে (নুরু) সাপোর্ট দিত, তবে আস্তে আস্তে সে উল্টো নুরুর সাপোর্ট খোঁজা শুরু করেছিল। এলাকায় নুরু একটি ক্রাইম ফিগার।

স্থানীয়রা জানান, নুরু এলাকায় ‘নুরু ভাই’ এবং ‘ঘোনা’ নামেই পরিচিত। তার ইয়াবা ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে রয়েছে বেতনভুক্ত লোক। আকবরশাহ এলাকার ইয়াবার হাট ছিল নুরুর নিয়ন্ত্রণাধীন নাছিয়া ঘোনা, বেলতলী ঘোনা ও ঝিলপাড় এলাকায়। ইয়াবার চালান এবং অস্ত্র বেচাকেনা করার অভিযোগ আছে তার বোন রুবি বেগম ও ভগ্নিপতি আলমগীরের বিরুদ্ধে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মদনে প্রয়াত সাংবাদিকদের স্বরণে দোয়া ও ইফতার মাহফিল

দোকান কর্মচারী থেকে সন্ত্রাসের সম্রাট নুরু গ্রেপ্তারে জনমনে স্বস্তি

আপডেট টাইম : ১১:১৬:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫

দেড় দশক আগেও মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না মো. নুরে আলম ওরফে নুরুর (৩৫)। ছিলেন চট্টগ্রাম নগরী ফয়’স লেকের দোকান কর্মচারী। থাকতেন নগরীর আকবর শাহ থানার পূর্ব ফিরোজ শাহ কলোনির এক নম্বর ঝিলের পাহাড়ের সরকারি খাস জায়গায়। প্রথমে সেখানে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি শুরু করেন। এরপর ঘর বানিয়ে ভাড়া দিতে থাকেন। শুরু হয় অপরাধের হাতেখড়ি। পাহাড় কাটা থেকে আস্তে আস্তে নুরু জড়িয়ে পড়েন মাদক, অস্ত্র কারবার, চুরি, ডাকাতি ও লুটপাটে। এসব করে গত এক দশক ধরে কামিয়েছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক প্রভাবশালী কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের ছত্রছায়ায় রাতারাতি বনে যান অপরাধারীদের সম্রাট। তার কাঁধে মামলাও আছে ৩০টিরও বেশি। পুলিশের খাতায় তার নাম ওঠে এসেছে শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায়।

৫ আগস্টের পর আত্মগোপনে চলে যান তিনি। ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। শুক্রবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে ধরতে নগরীর আকবরশাহ থানার এক নম্বর ঝিল এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।

নুরুর গ্রেপ্তারের খবরে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি নেমে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে তার অপরাধ কর্মকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের এই অভিযানের প্রশংসা করেছেন। তারা আশা করছেন, নুরুর গ্রেপ্তারের মাধ্যমে নগরীতে অপরাধপ্রবণতা অনেকটাই কমে আসবে।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, নুরুর সহযোগীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) মাহমুদা বেগম জানান, তাকে গ্রেপ্তার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এ সময় তার কাছ থেকে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র এলজিসহ ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নুরুর বিরুদ্ধে পাহাড় দখল, পাহাড় কাটা, অপহরণ, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৩১টি মামলা রয়েছে। যার মধ্যে মাদক আইনেই রয়েছে ১৮টি। মামলাগুলো হয়েছে ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত। সে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী নুরে আলমের উত্থান চসিকের সাবেক কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের হাত ধরেই। নুরুকে পাহাড় কাটার অপরাধের হাতেখড়ি করিয়েছিলেন জসিমই।

আকবর শাহ থানা এলাকার স্থানীয় এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সাবেক কাউন্সিলর জসিম একসময় তাকে (নুরু) সাপোর্ট দিত, তবে আস্তে আস্তে সে উল্টো নুরুর সাপোর্ট খোঁজা শুরু করেছিল। এলাকায় নুরু একটি ক্রাইম ফিগার।

স্থানীয়রা জানান, নুরু এলাকায় ‘নুরু ভাই’ এবং ‘ঘোনা’ নামেই পরিচিত। তার ইয়াবা ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে রয়েছে বেতনভুক্ত লোক। আকবরশাহ এলাকার ইয়াবার হাট ছিল নুরুর নিয়ন্ত্রণাধীন নাছিয়া ঘোনা, বেলতলী ঘোনা ও ঝিলপাড় এলাকায়। ইয়াবার চালান এবং অস্ত্র বেচাকেনা করার অভিযোগ আছে তার বোন রুবি বেগম ও ভগ্নিপতি আলমগীরের বিরুদ্ধে।