কমিশনকে হেয় করতে যা দরকার সবই করছেন মাহবুব তালুকদার: সিইসি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে নিয়ে জনসমক্ষে কঠোর সমালোচনামুখর হয়ে উঠেন সিইসি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে হেয় করতে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার যা করা দরকার সবই করে চলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। আজ মঙ্গলবার (২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে ‘জাতীয় ভোটার দিবসের’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। সিইসি বলেন, মাহবুব তালুকদার ব্যক্তিগত স্বার্থে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কমিশনকে হেয় করছেন।

নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে এ অনুষ্ঠানে সিইসি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, মাহবুব তালুকদারসহ চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিব, এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক তখন মঞ্চে বসা। আর নির্বাচন কমিশনের হাজার খানেক কর্মীর সঙ্গ সাংবাদিকরাও মিলনায়তনে উপস্থিত। সবার শেষে বক্তব্য দিতে উঠে সিইসি যখন মাহবুব তালুকদারকে নিয়ে কথা বলছিলেন, তখন এই নির্বাচন কমিশনারও পড়েন অস্বস্তিতে। তবে তিনি মঞ্চ ছেড়ে যাননি। সিইসির ঠিক আগেই অনুষ্ঠানে নিজের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মাহবুব তালুকদার। সেখানে তিনি বরাবরের মতই দেশের নির্বাচন পরিস্থিতি এবং কমিশনের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।

‘আমার বক্তব্য’ শিরোনামে ওই লিখিত বক্তব্যে মাহবুব তালুকদার বলেন, এক কেন্দ্রিক স্থানীয় নির্বাচনের তেমন গুরুত্ব নেই। নির্বাচনে মনোনয়ন লাভই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় নির্বাচনেও হানাহানি, মারামারি, কেন্দ্র দখল, ইভিএম ভাঙচুর ইত্যাদি মিলে এখন অনিয়মের মডেল তৈরি হয়েছে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার সংস্কার না হলে এখন যে ধরনের নির্বাচন হচ্ছে, তার মান আরও নিম্নগামী হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তার পরে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে এসে সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, “মাহবুব তালুকদার সাহেব অভ্যাসগতভাবে সারাজীবন আমাদের এ নির্বাচনে যোগ দেওয়ার পরদিন থেকে যা কিছু ইসির নেগেটিভ দিক, তা পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে পাঠ করতেন। আজকে এর ব্যতিক্রম হয়নি।

ভোটার দিবস উপলক্ষ্যেও মাহবুব তালুকদার ‘একটি রাজনৈতিক বক্তব্য’ দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, দেশের নির্বাচন কমিশনের স্বার্থে তিনি (মাহবুব তালুকদার) কাজ করেন না; ব্যক্তি স্বার্থে ও একটা উদ্দেশ্য সাধন করার জন্য এ কমিশনকে অপদস্ত করার জন্য যতটুকু যা করা দরকার, যখন যতটুকু করা দরকার, ততটুকু করেছেন উনি। ক্ষোভের সঙ্গে সিইসি বলেন, এ নির্বাচন কমিশনে যোগ দেওয়ার পর যতগুলো সভা হয়েছে, সব সময় মাহবুব তালুকদার ‘একই আচরণ’ করে আসছেন। এ কমিশনের আরও এক বছর মেয়াদ আছে, তিনি হয়ত তা চালিয়েই যাবেন।

ভেবেছিলাম ভোটার দিবস হিসেবে তিনি কিছু বলবেন; কিন্তু তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য রাখলেন। ইসিকে কতখানি হেয় করা যায়, কতখানি নিচে নামানো যায়, অপদস্ত করা যায় তা তিনি করে চলেছেন। সিইসি হুদা বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে স্বাধীনভাবে মাহবুব তালুকদার কাজ করতে পারেন। নির্বাচন কমিশনের ভুলত্রুটি, একটা পুরনো কাগজপত্র বের করে একটা কিছু দাঁড় করানো সম্ভব। ইসির কার কী দায়িত্ব, কী পরামর্শ, কর্মকর্তারা কাজ কী করছেন- এগুলো করেন কিনা, এটা করলে ভালো হত- এসব প্রশ্নও করা যায়। সিইসির অভিযোগ ও বিস্ফোরক মন্তব্যের বিষয়ে অনুষ্ঠানের পর নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর