আমরাও পারি ,,,, অধ্যক্ষ আসাদুল হক

চট্টগ্রামে দেশের প্রথম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল শনিবার উদ্বোধন করা ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২৪ তলা বিশিষ্ট এ সেন্টারে নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী ছাড়াও বিশ্বমানের সব সুযোগ সুবিধা থাকবে। দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে বড় ভূমিকা পালন করবে এ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। এর মাধ্যমে বিশ্বের ৩২৭টি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হচ্ছে বন্দরনগরী।

ট্রেড সেন্টার উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে ছিল আত্মপ্রত্যয়ী উচ্চারণ। এ সময় তিনি বলেছেন, `আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। কারও কাছে হাত পাততে চাই না। তাই পণ্যের নতুন বাজার খুঁজুন। এ দেশের পণ্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিন।` উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা দরকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, `বাংলাদেশ আজ তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। নিজেদের ভাগ্য নিজেরা পরিবর্তন করছি। বর্তমানে ৭২৯টি পণ্য বিশ্বের ১৯২টি দেশে রফতানি হচ্ছে। তাই ১০ বছরের ব্যবধানে ১০ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে রফতানি আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলারে। রিজার্ভ পৌঁছেছে ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের উপরে।` নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

চট্টগ্রামে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার প্রতিষ্ঠা নানাদিক দিয়েই গুরুত্ব বহন করে। ব্যবসা বাণিজ্য ছাড়াও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের চিত্রকেই তুলে ধরছে এই ভবন। চট্টগ্রাম মহানগরীর ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন। উদ্যোগটা এসেছিল তাদের কাছ থেকেই। বর্তমান সরকারের আমলে এর উদ্বোধন হল। ৯০ ভাগ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এখন নিজস্ব অর্থায়নে হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর দিক। পরমুখাপেক্ষী হয়ে না থেকে সৃজনশীল, উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগিয়ে আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে। বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে হবে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে আমরাও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি।

বিভাগীয় শহরে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এটাও প্রমাণিত হল যে ঢাকাকেন্দ্রিক মানসিকতা থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পেরেছি। সবকিছু ঢাকায় হতে হবে-এই হীন মানসিকতার কারণে আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ঢাকা পরিণত হচ্ছে এক বাস-অযোগ্য নগরী হিসেবে। এজন্য চট্টগ্রামের মতো অন্যান্য বিভাগীয়ও শহরেও ওই অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্য অনুযায়ী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতে হবে। পর্যটন নগরী সিলেট, রেশমের নগরী রাজশাহী, শিক্ষার শহর ময়মনসিংহ, শস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত বরিশাল, শিল্পনগরী খুলনাসহ অন্যান্য নগর ও শহরে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। এতে ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রাখার পাশাপাশি উন্নয়নের সুষম বণ্টনও সম্ভব হবে। এরফলে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে। এ জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিকেন্দ্রিকরণকে মাথায় রেখে এগিয়ে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। হাওরবার্তা প্রধান সম্পাদক

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর