প্রধানমন্ত্রী বললেন যোগাযোগে ব্যাপক নেটওয়ার্ক গড়ায় অর্থনীতি সচল

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর আমরা সারা দেশে যোগাযোগের ব্যাপক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছি, ফলে আজকে আমাদের অর্থনীতির চাকা অনেক সচল।’ তিনি দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘আরো অনেক কাজ আমরা শুরু করেছি, সেগুলোও সম্পন্ন করব, ইনশাআল্লাহ।’

গতকাল রবিবার সকালে মাগুরা, নারায়ণগঞ্জ ও যশোরে তিনটি সেতু এবং পাবনায় একটি স্বাধীনতা চত্বরের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী করোনার মধ্যে সরকারের সাফল্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘দারিদ্র্যসীমা যেমন আমরা কমিয়ে এনেছি, মাথাপিছু আয় আমরা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি, মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। গ্রামপর্যায় পর্যন্ত মানুষের জীবনমান যে উন্নত করা যায়, সেটাও আমরা প্রমাণ করেছি।’

তিনি বলেন, সেই সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ, বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আনার ব্যবস্থা, সর্বোপরি অর্থনীতির চাকাটা যাতে সব সময় সচল থাকে, সেসব দিকে বিশেষভাবে নজর দিয়েই তাঁর সরকার পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং উন্নয়নের কাজ বাস্তবায়ন করছে। তিনি আরো বলেন, ‘২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ধারাবাহিকভাবে সরকারে আছি বলেই আজকে আমরা দেশের মানুষের উন্নতিটা করতে পারছি।’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাঁর দল আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা কিন্তু হঠাৎ করেই কিছু করিনি। আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে তখনো কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা ছিল। কেননা জাতির পিতা আমাদের যে সংবিধান দিয়ে গেছেন, সেখানে দেশের মানুষের উন্নয়নের কথা, মৌলিক চাহিদাগুলো বাস্তবায়নের কথা স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। কাজেই যখনই সরকারে এসেছি পরিকল্পিত উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছি এবং যার সুফল এখন দেশের মানুষ পাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এই তিনটি সেতু—মহম্মদপুর, রূপগঞ্জ এবং অভয়নগরবাসীর জন্য মুজিববর্ষের উপহার।’

তিনি এ সময় করোনার সেকেন্ড ওয়েভ সম্পর্কে জনগণকে ফের সচেতন করে দিয়ে মাস্ক ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী যে প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন করেছেন সেগুলো হলো মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলাধীন মধুমতী নদীর ওপর এলাংখালী ঘাটে ৬০০.৭০ মিটার দীর্ঘ শেখ হাসিনা সেতু, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলাধীন মুড়াপাড়া ফেরিঘাট রাস্তায় শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর ১০ হাজার মিটার চেইনেজে ৫৭৬.২১৪ মিটার দীর্ঘ বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) সেতু এবং যশোরের অভয়নগর উপজেলায় সড়ক ও জনপথের যশোর-খুলনা সড়কের ভাঙ্গাগেট (বাদামতলা) থেকে আমতলা জিসি ভায়া মরিচা, নাউলী বাজার সড়কে ভৈরব নদীর ওপর ৭০২.৫৫ মিটার দীর্ঘ সেতু। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার পাবনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বরেরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন এবং পাবনাপ্রান্ত থেকে স্বাধীনতা চত্বর বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক এবং স্কয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী বক্তব্য দেন।  এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রান্তে এবং নারায়ণগঞ্জ প্রান্তে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীকসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যরা, গণমান্য ব্যক্তিরা, জনপ্রতিনিধি এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এবং উপকারভোগী জনগণ নিজ নিজ প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সূত্র : বাসস।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর