স্বাধীন গণমাধ্যম, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার বিষয়ক ঢাকা ঘোষণাপত্র

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ঢাকা কনসালটেশন থেকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, স্বাধীন গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকার বিষয়ে উঠে আসা বিভিন্ন দাবীর প্রেক্ষিতে প্রণীত ঢাকা ঘোষণাপত্রের সুপারিশমালায় শতাধিক মানবাধিকার কর্মী, সংগঠন ও ব্যক্তি তাদের সহমত প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে আছেন, বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদক, সাংবাদকর্মী, জেলা, উপজেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের সাংবাদিক, নির্যাতিত, চাকরিচ্যুত সাংবাদিক, আইনজ্ঞ. পেশাজীবী, শিক্ষকসহ আরও অনেকে। ঢাকা ঘোষণাপত্রের সাথে সহমত প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদপত্র, মানবাধিকার সংগঠন এবং নাগরিক প্রতিনিধি। অংশগ্রহণ করেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডিয়ান হাই কমিশনার বেনোইত প্রেফোঁতেইন, ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এস্পেন রিকটার-সোভেনডেন ও বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো প্রমুখ। ১৪ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ১৪০ জনের অধিক মানবাধিকার কর্মী ও সংস্থা, আইনজ্ঞ, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সাংবাদিক, ছাত্র, শিক্ষক ও নাগরিক প্রতিনিধিগণ এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন।
১৬ নভেম্বর ২০২০-এ কানাডা ও বৎসোয়ানা প্রজাতন্ত্রের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘কোভিড-কালীন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা’ বিষয়ক দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন। করোনাকালীন সচেতনতা ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সম্মেলনটি অনলাইনে পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর্টিকেল নাইনটিন, বাংলাদেশের কানাডিয়ান হাই কমিশন ও ব্রিটিশ হাই কমিশনের যৌথ উদ্যোগে ২রা নভেম্বর (২০২০) ঢাকা কনসালটেশনের আয়োজন করে।
সভা থেকে বক্তাদের এবং বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় উঠে আসা নাগরিকদের দাবীর প্রেক্ষিতে প্রণীত সুপারিশমালা ঘোষণাপত্রে সন্নিবেশিত করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ক দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উপস্থাপিত হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঢাকা ঘোষণাপত্রের মূল লক্ষ্য ছিল; সুরক্ষা, আইনি সহায়তা ও প্রতিকার যা মূলত চারটি অগ্রাধিকারের মাধ্যমে উপস্থাপিত হয়। এগুলো হলো, মুক্ত গণমাধ্যম ও গণতন্ত্র; সাংবাদিক সুরক্ষা ও তথ্য অধিকার, জেন্ডার ও সর্বজনীন সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা এবং সমাজে তরুণ নেতৃত্ব সৃষ্টি। সংকলিত ঢাকা ঘোষণাপত্রটি এর চারটি প্রতিশ্রুতিসহ গণমাধ্যম বিষয়ক বিশ্ব সম্মেলন ২০২০-এ উপস্থাপিত হয়। এগুলো হলো-
-আমরা যে কোনো কালো আইন, নীতিমালা ও সরকারি কালাকানুন রদ করতে সোচ্চার যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করে। আমরা একসাথে বাক-স্বাধীনতার অধিকার নিশ্চিত কাজ করতে বদ্ধপরিকর।
-সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে একটি মেলবন্ধনের সৃষ্টি করে সাংবাদিকদের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক নিরাপত্তা বিধানের মাধ্যমে মানবাধিকার নিশ্চিত করতে আমরা দায়বদ্ধ।
-নারী সাংবাদিকদের জন্য নিপীড়নহীন, সুস্থ কর্মপরিবেশ দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
-সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমাজে তরুণদের নিরাপদ অংশগ্রহণ নিশ্চিতে আমরা বদ্ধপরিকর। তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে উদ্ব‍ুদ্ধ করতে আমরা সদাসচেষ্ট।
ঢাকা ঘোষণাপত্রের সুপারিশমালায় সরকার, নাগরিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক সংগঠন, মিডিয়া হাউজ, শিক্ষাবিদ ও জাতীয়-আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের কাছে সাংবাদিক, নাগরিকসহ সকলের বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে নিরাপত্তা বিধান ও নির্যাতন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও তার ন্যায্য প্রয়োগের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর