এবার মাধ্যমিকেও শুরু হচ্ছে রেডিও ক্লাস

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে পাঠদানের ধারাবাহিকতা রাখতে সংসদ টিভির পাশাপাশি বেতারের মাধ্যমেও মাধ্যমিকের ক্লাস সম্প্রচার করতে যাচ্ছে সরকার। এর আগে গত ১২ অগাস্ট থেকে বাংলাদেশ বেতারের এএম-৬৯৩ মেগাহার্জে এবং এফএম ব্র্যান্ড ও কমিউনিটি রেডিওতে প্রাথমিকের ক্লাসের সম্প্রচার শুরু করা হয়েছে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টানা বন্ধ থাকায় পাঠদানের ধারাবাহিকতা রাখতে গত ২৯ মার্চ থেকে মাধ্যমিকের ক্লাস সংসদ টিভিতে দেখানো হচ্ছে। সবার বাড়িতে টিভি না থাকা এবং টিভি থাকলেও অনেকের বাড়িতে কেবল সংযোগ না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী সংসদ টিভি ক্লাসে যুক্ত হতে পারছে না।
এখন এটুআইয়ের সহযোগিতায় দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে রেডিওতে ক্লাস সম্প্রচারের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। করোনার মধ্যে সকলের দূরশিক্ষণের আওতায় আনতে রেডিও মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের সরাসরি ক্লাস বন্ধ দীর্ঘ দিন। আমরা দূরশিক্ষণ পদ্ধতি চালু করেছি। টেলিভিশন, অনলাইনে নিয়মিত ক্লাস প্রচার করা হচ্ছে। এর বাইরে শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানের জন্য আমরা রেডিওতে ক্লাস সম্প্রচারের ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করছি, খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে চালু করতে পারব। এ বিষয়ে এটুআই (এক্সসেস টু ইনফরমেশন), বাংলাদেশ বেতার এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করছে।

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা ঘরে ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম পৌঁছে দিতে চাই। এটি আরও সহজে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা টিভি সম্প্রচার শুরু করেছি। নানা প্রতিবন্ধতকার কারণে সকলের কাছে টিভি ক্লাস পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে রেডিওতে পাঠদান সম্প্রচার শুরু করতে যাচ্ছে।

জানা গেছে, গত ১২ আগস্ট থেকে রেডিওতে ক্লাস সম্প্রচার করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। এই ক্লাস শোনার জন্য, সাধারণ মোবাইল হ্যান্ডসেটে হেডফোন সংযোজন করে এফএম রেডিও বাটন অন করে। অ্যান্ড্রয়েড সেটে গুগল প্লে স্টোর থেকে এফএম রেডিও অ্যাপস ডাউনলোড করে তার মাধ্যমে নির্ধারিত এলাকার এফএম ব্র্যান্ডে ক্লাস শোনা যায়। এছাড়া, বাংলাদেশ বেতারের ওয়েবসাইটেও শোনা যায়। একই পদ্ধতিতে যেন মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা রেডিও ক্লাস সহজে শুনতে পারে সেই ব্যবস্থা নিচ্ছে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রশাসন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা আছে।

উল্লেখ্য, শতকরা ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী টেলিভিশন ক্লাসের বাইরে রয়েছে বলে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির জরিপে বলা হয়, সংসদ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ক্লাস অধিকাংশ প্রাথমিক-মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করতে পারেনি। ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী টেলিভিশনের ক্লাসে অংশ নেয়নি।

দূরশিক্ষণে যারা অংশ নিচ্ছে না, তাদের ৭১ শতাংশ বলেছে বাড়িতে টিভি, বিদ্যুৎ নেই, কেবল লাইন কিংবা ইন্টারনেট নেই। তাদের মধ্যে ২১ ভাগ শিক্ষার্থী জানেই না এ ধরনের একটা ব্যবস্থা আছে।

জরিপে আরও দেখা যায়, টেলিভিশন, ইন্টারনেট বা বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুদের ক্ষেত্রে ভাষাগত সমস্যা ইত্যাদি বিবিধ কারণে অনেক শিক্ষার্থী করোনাকালীন দূরশিক্ষণে অংশ নিতে পারছে না।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর