ঢাকা ১১:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আর্থিক সংকটে খালেদা জিয়া

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৫৩:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অগাস্ট ২০২০
  • ২০৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ওয়ান-ইলেভেন থেকে দীর্ঘ ১৩ বছর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ রয়েছে। দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে ও লিখিত আবেদন করে একাধিকবার জব্দ অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হলেও তাতে সাড়া দেয়নি সরকার। এতে করে গুলশানের বাসভবন ফিরোজার ভাড়া, নিজের চিকিৎসা, ব্যক্তিগত স্টাফদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ মেটাতে পারছেন না সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের একটি দৈনিক পত্রিকাকে এসব কথা জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আয়কর উপদেষ্টা ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকে চলতি, সঞ্চয়ী ও এফডিআরের আটটি অ্যাকাউন্ট জব্দ রয়েছে। একাধিকবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে খালেদা জিয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার আবেদন করা হলেও তাতে কাজ হচ্ছে না।

আহমেদ আযম বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়া এখন প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা তুলতে পারেন। আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার আবেদন করা হয়। পরে খুলে না দিলে অন্তত ৫০ হাজার টাকার লিমিট যাতে তিন লাখ টাকা করা হয় সে জন্য আবেদন করা হয়েছে। সে আবেদনেও সাড়া নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

কীভাবে খালেদা জিয়ার খরচ মিটছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চেয়ারপারসনের স্বজন ও দলের পক্ষ থেকে খরচ মেটানো হচ্ছে। খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য কোনো নেতার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ রয়েছে কি না জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কারও অ্যাকাউন্ট বন্ধ আছে কি না আমার জানা নেই।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ক্যান্টনমেন্টের শহীদ মইনুল রোডের বাসভবন থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর তাকে বাধ্য হয়েই ভাড়া বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। বাড়িভাড়া পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজনে, ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) একটি আবেদন করা হয়। কিন্তু তার ব্যাংক হিসাব খুলে দেওয়ার ওই আবেদন আজও অনুমোদিত হয়নি। আমরা অবিলম্বে অন্যায় ও বেআইনিভাবে জব্দ রাখা খালেদা জিয়ার সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। বাড়ি ভাড়াও বকেয়া পড়ে আছে।

তিনি বলেন, সরকার শুধু মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে নিয়ে ক্ষান্ত হয়নি। বরং শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে তাকে। বর্তমানে চেয়ারপারসন যে বাসায় থাকেন তার বাড়ি ভাড়া বকেয়া পড়েছে। এছাড়া নিজের চিকিৎসা, ব্যক্তিগত স্টাফদের বেতনসহ অন্যান্য অনেক খরচ তিনি মেটাতে পারছেন না। এ অবস্থায় সরকারের অবিলম্বে জব্দ করা অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া উচিত।

আহমেদ আযম বলেন, ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং উভয়ের পরিবারের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করে এনবিআর। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্ট জব্দের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে জব্দ আদেশ প্রত্যাহারে আবেদন করা হলে তা নাকচ করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের জব্দ অ্যাকাউন্ট না খুললেও ওয়ান-ইলেভেনের সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আর্থিক সংকটে খালেদা জিয়া

আপডেট টাইম : ০৭:৫৩:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অগাস্ট ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ওয়ান-ইলেভেন থেকে দীর্ঘ ১৩ বছর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ রয়েছে। দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে ও লিখিত আবেদন করে একাধিকবার জব্দ অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হলেও তাতে সাড়া দেয়নি সরকার। এতে করে গুলশানের বাসভবন ফিরোজার ভাড়া, নিজের চিকিৎসা, ব্যক্তিগত স্টাফদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ মেটাতে পারছেন না সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের একটি দৈনিক পত্রিকাকে এসব কথা জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আয়কর উপদেষ্টা ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকে চলতি, সঞ্চয়ী ও এফডিআরের আটটি অ্যাকাউন্ট জব্দ রয়েছে। একাধিকবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে খালেদা জিয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার আবেদন করা হলেও তাতে কাজ হচ্ছে না।

আহমেদ আযম বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়া এখন প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা তুলতে পারেন। আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার আবেদন করা হয়। পরে খুলে না দিলে অন্তত ৫০ হাজার টাকার লিমিট যাতে তিন লাখ টাকা করা হয় সে জন্য আবেদন করা হয়েছে। সে আবেদনেও সাড়া নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

কীভাবে খালেদা জিয়ার খরচ মিটছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চেয়ারপারসনের স্বজন ও দলের পক্ষ থেকে খরচ মেটানো হচ্ছে। খালেদা জিয়া ছাড়া অন্য কোনো নেতার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ রয়েছে কি না জানতে চাইলে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কারও অ্যাকাউন্ট বন্ধ আছে কি না আমার জানা নেই।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ক্যান্টনমেন্টের শহীদ মইনুল রোডের বাসভবন থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর তাকে বাধ্য হয়েই ভাড়া বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। বাড়িভাড়া পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজনে, ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) একটি আবেদন করা হয়। কিন্তু তার ব্যাংক হিসাব খুলে দেওয়ার ওই আবেদন আজও অনুমোদিত হয়নি। আমরা অবিলম্বে অন্যায় ও বেআইনিভাবে জব্দ রাখা খালেদা জিয়ার সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। বাড়ি ভাড়াও বকেয়া পড়ে আছে।

তিনি বলেন, সরকার শুধু মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে নিয়ে ক্ষান্ত হয়নি। বরং শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে তাকে। বর্তমানে চেয়ারপারসন যে বাসায় থাকেন তার বাড়ি ভাড়া বকেয়া পড়েছে। এছাড়া নিজের চিকিৎসা, ব্যক্তিগত স্টাফদের বেতনসহ অন্যান্য অনেক খরচ তিনি মেটাতে পারছেন না। এ অবস্থায় সরকারের অবিলম্বে জব্দ করা অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া উচিত।

আহমেদ আযম বলেন, ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং উভয়ের পরিবারের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করে এনবিআর। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্ট জব্দের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে জব্দ আদেশ প্রত্যাহারে আবেদন করা হলে তা নাকচ করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের জব্দ অ্যাকাউন্ট না খুললেও ওয়ান-ইলেভেনের সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়।