ঢাকা ১১:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সবার মুখে জাতীয় ঐক্য, রূপরেখা অস্পষ্ট

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৪:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ০ বার

দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ঐক্য চায় রাজনৈতিক দলগুলোও। কিন্তু এই ঐক্য কিসের ভিত্তিতে আসবে, কীভাবে হবে সে বিষয়টি এখনো অস্পষ্টই রয়ে গেছে।

গত ২৭ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে জাতীয় ঐক্যের তাগিদ দিয়ে এসেছে বিএনপি। পরের দিন জামায়াতে ইসলামীও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে এসেছে যে বিএনপির সঙ্গে তারাও এ ব্যাপারে একমত। এ ছাড়া বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা জাতীয় ঐক্যের কথা বলে আসছেন। তবে এই প্রক্রিয়া এখনো কথাতেই আছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, গতকাল জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ এ নিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করবেন তিনি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য হবে। এটা তো আর এমনি হয় না। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হয়।’ আওয়ামী লীগ এই প্রক্রিয়ায় থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখানে কেন থাকবে? আওয়ামী লীগ হলো খুনি, স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ। ওইটা (আওয়ামী লীগ) কোনো ফ্যাক্টর না।’

আওয়ামী লীগের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যারা রাস্তায় আন্দোলন করেছে, তৎকালীন সরকারের নির্দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যাদের গুলি করে মেরেছে, তাদের শক্ত অবস্থান হচ্ছে আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে, তারপরে তাদের রাজনীতি। সরকারের অবস্থান হচ্ছে, আমরা কাউকে নিষিদ্ধ করব না। কিন্তু কেউ যদি মনে করে, তার সাংগঠনিক অবস্থা আছে, সে কীভাবে রাজনীতি করবে, সেটা আমরা বলে দেব না।’

জাতীয় ঐক্য চায় জামায়াতও। এ নিয়ে গত সোমবার ঝালকাঠিতে এক সমাবেশে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশকে স্থিতিশীল রাখতে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা নানামুখী চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে উসকানি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। তারা যতই চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করুক, তাদের পাতানো ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘আমরা জাতীয় ঐক্য চাই। আগরতলায় আমাদের উপহাইকমিশনে যে আক্রমণ হয়েছে, সেই বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় ঐক্য গঠনের জন্য আমরাও ডাক দেব।’

জাতীয় ঐক্য নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তাঁদের অনেকে বলেছেন, জাতীয় ঐক্য নিয়ে তাগিদ উঠলেও এ নিয়ে বিস্তারিত কোনো আলোচনা এখনো হয়নি। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের জায়গা তৈরি হয়েছিল। গত তিন মাসে সেই জায়গাটা আগের মতো নেই, টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে, যা উদ্বেগের বিষয়। এর মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নানাভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় জাতীয় ঐক্যের তাগিদ অনুভব করছে দলগুলো। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সৃষ্ট ঐক্যের জায়গায় চিড় ধরে, যাতে তার সুযোগ আওয়ামী লীগ নিতে না পারে, সেই চেষ্টারই অংশ এই উদ্যোগ। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ের কথাও জানা গেছে তাঁদের বক্তব্যে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছে, তাদের নিয়েই জাতীয় ঐক্য করা হবে।’ তবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন যে সহজ হবে না, সে বিষয়েও ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেছেন, জাতীয় ঐক্য জনগণও চায়। কিন্তু মুখে বললেই তো তা হবে না, কথা ও কাজে মিল থাকতে হবে। ভিন্ন মতাদর্শের দলগুলোকে বৃহত্তর স্বার্থে এক জায়গায় আসতে হবে। সেই কাজটা এতটা সহজ নয়। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও আলোচনা বাড়াতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার আবার নিজেদের মসনদ ও সুখের বালাখানা ফেরত পাওয়ার জন্য তৎপরতা শুরু করেছে এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশ তাকে সমর্থন করছে। তাই আমাদের সজাগ থাকা উচিত। ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে জাতি যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, সে রকম ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। জাতীয় ঐক্যের আহ্বানটা আসা উচিত সেই জায়গা থেকে।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আমাদের মধ্যে আদর্শিক রাজনীতির ভিন্নতা থাকতে পারে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যকারিতা, সংস্কার, নিরপেক্ষ নির্বাচন, ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রশ্নে আমাদের বড় দাগে ঐকমত্যের জায়গা আছে। সেগুলো আরও সংহত করা, বোঝাপড়া বাড়িয়ে তোলা এবং জনগণের মাঝে ঐক্যের বিষয়ে নতুন কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয়, এটাই হচ্ছে জাতীয় ঐক্যের প্রধান দিক।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে।

বিরাজমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ইস্যুতে ‘জাতীয় ঐক্য’ হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরাও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বলেন, জাতীয় ইস্যুতে জাতীয় ঐক্য হতে পারে। এ মুহূর্তে জাতীয় ইস্যু হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে, পুলিশ কাজ করছে না।

আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় ঐক্য হতে পারে বলে মনে করেন সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘তারা যেহেতু দৃশ্যপটে নেই। তারা তো পুরো রাজনৈতিক বন্দোবস্তের শত্রুপক্ষ। শত্রুর সঙ্গে তো জাতীয় ঐক্য করতে পারবেন না।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সবার মুখে জাতীয় ঐক্য, রূপরেখা অস্পষ্ট

আপডেট টাইম : ১০:৫৪:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ঐক্য চায় রাজনৈতিক দলগুলোও। কিন্তু এই ঐক্য কিসের ভিত্তিতে আসবে, কীভাবে হবে সে বিষয়টি এখনো অস্পষ্টই রয়ে গেছে।

গত ২৭ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে জাতীয় ঐক্যের তাগিদ দিয়ে এসেছে বিএনপি। পরের দিন জামায়াতে ইসলামীও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে এসেছে যে বিএনপির সঙ্গে তারাও এ ব্যাপারে একমত। এ ছাড়া বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা জাতীয় ঐক্যের কথা বলে আসছেন। তবে এই প্রক্রিয়া এখনো কথাতেই আছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, গতকাল জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ এ নিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করবেন তিনি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য হবে। এটা তো আর এমনি হয় না। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হয়।’ আওয়ামী লীগ এই প্রক্রিয়ায় থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখানে কেন থাকবে? আওয়ামী লীগ হলো খুনি, স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ। ওইটা (আওয়ামী লীগ) কোনো ফ্যাক্টর না।’

আওয়ামী লীগের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যারা রাস্তায় আন্দোলন করেছে, তৎকালীন সরকারের নির্দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যাদের গুলি করে মেরেছে, তাদের শক্ত অবস্থান হচ্ছে আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে, তারপরে তাদের রাজনীতি। সরকারের অবস্থান হচ্ছে, আমরা কাউকে নিষিদ্ধ করব না। কিন্তু কেউ যদি মনে করে, তার সাংগঠনিক অবস্থা আছে, সে কীভাবে রাজনীতি করবে, সেটা আমরা বলে দেব না।’

জাতীয় ঐক্য চায় জামায়াতও। এ নিয়ে গত সোমবার ঝালকাঠিতে এক সমাবেশে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশকে স্থিতিশীল রাখতে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা নানামুখী চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে উসকানি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। তারা যতই চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করুক, তাদের পাতানো ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘আমরা জাতীয় ঐক্য চাই। আগরতলায় আমাদের উপহাইকমিশনে যে আক্রমণ হয়েছে, সেই বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় ঐক্য গঠনের জন্য আমরাও ডাক দেব।’

জাতীয় ঐক্য নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তাঁদের অনেকে বলেছেন, জাতীয় ঐক্য নিয়ে তাগিদ উঠলেও এ নিয়ে বিস্তারিত কোনো আলোচনা এখনো হয়নি। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের জায়গা তৈরি হয়েছিল। গত তিন মাসে সেই জায়গাটা আগের মতো নেই, টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে, যা উদ্বেগের বিষয়। এর মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নানাভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় জাতীয় ঐক্যের তাগিদ অনুভব করছে দলগুলো। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সৃষ্ট ঐক্যের জায়গায় চিড় ধরে, যাতে তার সুযোগ আওয়ামী লীগ নিতে না পারে, সেই চেষ্টারই অংশ এই উদ্যোগ। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ের কথাও জানা গেছে তাঁদের বক্তব্যে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছে, তাদের নিয়েই জাতীয় ঐক্য করা হবে।’ তবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন যে সহজ হবে না, সে বিষয়েও ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেছেন, জাতীয় ঐক্য জনগণও চায়। কিন্তু মুখে বললেই তো তা হবে না, কথা ও কাজে মিল থাকতে হবে। ভিন্ন মতাদর্শের দলগুলোকে বৃহত্তর স্বার্থে এক জায়গায় আসতে হবে। সেই কাজটা এতটা সহজ নয়। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও আলোচনা বাড়াতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার আবার নিজেদের মসনদ ও সুখের বালাখানা ফেরত পাওয়ার জন্য তৎপরতা শুরু করেছে এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশ তাকে সমর্থন করছে। তাই আমাদের সজাগ থাকা উচিত। ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে জাতি যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, সে রকম ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। জাতীয় ঐক্যের আহ্বানটা আসা উচিত সেই জায়গা থেকে।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আমাদের মধ্যে আদর্শিক রাজনীতির ভিন্নতা থাকতে পারে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যকারিতা, সংস্কার, নিরপেক্ষ নির্বাচন, ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রশ্নে আমাদের বড় দাগে ঐকমত্যের জায়গা আছে। সেগুলো আরও সংহত করা, বোঝাপড়া বাড়িয়ে তোলা এবং জনগণের মাঝে ঐক্যের বিষয়ে নতুন কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয়, এটাই হচ্ছে জাতীয় ঐক্যের প্রধান দিক।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে।

বিরাজমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ইস্যুতে ‘জাতীয় ঐক্য’ হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরাও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বলেন, জাতীয় ইস্যুতে জাতীয় ঐক্য হতে পারে। এ মুহূর্তে জাতীয় ইস্যু হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে, পুলিশ কাজ করছে না।

আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় ঐক্য হতে পারে বলে মনে করেন সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘তারা যেহেতু দৃশ্যপটে নেই। তারা তো পুরো রাজনৈতিক বন্দোবস্তের শত্রুপক্ষ। শত্রুর সঙ্গে তো জাতীয় ঐক্য করতে পারবেন না।’