রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আমি দেশবাসী এবং প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশিদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক গৌরবময় অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা এ দিন চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ঐতিহাসিক স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে তা পরিপূর্ণতা পায়। আমি আজ গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের, যাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। আমি বিনম্রচিত্তে পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর অপরিসীম ত্যাগ ও আপোশহীন নেতৃত্বে পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। আমি শ্রদ্ধা জানাই বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক-সমর্থকসহ সর্বস্তরের জনগণকে, যাঁরা আমাদের বিজয় অর্জনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন।
স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। এ অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিশ্ব ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিকামী, গণতন্ত্রকামী। তাঁরা গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা চায়, চায় উন্নয়ন। কিন্তু আমাদের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার পথ মসৃণ ছিল না। নানা চড়াই-উৎরাই এর মধ্য দিয়ে দেশে আজ গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত। সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অর্জিত হচ্ছে নানা সাফল্য। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও ধারাবাহিকভাবে দেশ ছয় শতাংশের ঊর্ধ্বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের বিকাশ, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উন্নয়ন, নারী শিক্ষার সম্প্রসারণ, স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ, কৃষির উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশসহ অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে ‘রোল মডেল’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।